সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২ মাসের যুদ্ধবিরতি চুক্তি শেষ হতেই গাজায় পুরোদমে হামলা শুরু করেছে ইজরায়েল। একদিকে, ইজরায়েলি সেনার হামলায় গুঁড়িয়ে যাচ্ছে হামাসের একের পর এক ডেরা, তেমনই প্রাণ হারাচ্ছেন নিরীহ মানুষ। গতকাল বুধবার একদিনে গাজায় মৃত্যু হয়েছে ৭১ জনের। এমনটাই জানিয়েছে প্যালেস্টাইনের স্বাস্থ্য মন্ত্রক। পণবন্দিদের দ্রুত মুক্তি না দিলে ফল আরও ভয়ংকর হবে বলে চরম হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
আল জাজিরা সূত্রে খবর, বুধবারের হামলায় প্রাণ হারিয়েছে রাষ্ট্রসংঘের ৫ কর্মীও। মঙ্গলবার থেকে বুধবার পর্যন্ত গাজায় নিহতের সংখ্যা ছিল ৪৩৬। কিন্তু এই মৃত্যুমিছিল আরও দীর্ঘ হয়েছে। প্রাণ হারাচ্ছে ছোট ছোট শিশুরাও। ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে ১৮৩টি শিশুর। এদিকে, ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, “প্যালেস্টাইনের সাধারণ মানুষ এই হামলার নিশানা নন। তাঁদেরকে বারবার নিরাপদ এলাকা সরে যাওয়ার কথা জানানো হচ্ছে। আমাদের মূল লক্ষ্য হামাস জঙ্গিদের খতম করা। বন্দুকের নলেই হামাসের সঙ্গে কথা হবে।”
অন্যদিকে, ভারতের নিযুক্ত ইজরায়েলের রাষ্ট্রদূত রিউভেন আজার বলেন, “গাজা হামাস মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত ইজরায়েলের সামরিক অভিযান চলবে। হামাস সব শর্তগুলো মেনে চললে আজই শান্তি প্রতিষ্ঠা হতে পারে। কিন্তু হামাস শান্তি চায় না। হামাস বারবার আমেরিকার মধ্যস্থতার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা বন্দিদের মুক্তি দিতে চাইছে না। এখন ইজরায়েলের সামনে সামরিক অভিযান ছাড়া আর কোনও বিকল্প পথ নেই।” কিন্তু গাজায় এই হামলা নিয়ে নেতানিয়াহুর সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে পথে নেমেছে হাজার হাজার ইজরায়েলি। কারণ এই হামলায় পণবন্দিদেরও মৃত্যুর আশঙ্কা রয়েছে। বদলা নিতে হামাস জঙ্গিরাও তাদের মেরে ফেলতে পারে।
উল্লেখ্য, মধ্য এবং দক্ষিণ গাজার বেশ কয়েকটি এলাকায় ভয়ংকর অভিযান চালাচ্ছে ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ)। মধ্য গাজার নেতজারিম করিডরের অনেকখানি দখল করে ফেলেছে তারা। এই নেতজারিম করিডরের মাধ্যমেই উত্তর এবং দক্ষিণ গাজার মধ্যে যোগাযোগ বজায় থাকে। সেই করিডর ইজরায়েলের হাতে চলে যাওয়ার পর গাজার দুই প্রান্ত কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এছাড়াও বেশ কয়েকটি এলাকায় বাড়তি বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে ইজরায়েলি সেনা।
প্রসঙ্গত, ট্রাম্পের উদ্যোগে গত জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে হামাসের সঙ্গে সংঘর্ষবিরতি চুক্তি করে ইজরায়েল। কথা ছিল, এই যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে বন্দি নাগরিকদের মুক্তি দেবে হামাস। সেইমতো বহু পণবন্দিকে মুক্তিও দেওয়া হয়। তবে ইজরায়েলের অভিযোগ সকল পণবন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়নি। শুধু তাই নয় মার্কিন প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যান করেছে হামাস। তাই সংঘর্ষবিরতির মেয়াদ ফুরাতেই ফের বিধ্বংসী আক্রমণের পথে হাঁটছে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দেশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.