সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চিতাভস্মে জল দিয়ে নাকি আর পিছন ফিরে তাকাতে নেই। তখন মায়া ত্যাগ করতে হয়। মৃত ব্যক্তির আত্মাকেও শান্তিতে বিদায় দিতে হয় পরপারে যাত্রার জন্য। হিন্দু ধর্ম যাঁরা মানেন, তাঁদের এমনই বিশ্বাস। রাজস্থানের দৌসার এলাকার মেহন্দিপুর বালাজি মন্দিরেও এই প্রথা আছে। পুজো দিয়ে চলে আসার সময়ে আর পিছনে ফিরে দেখার নিয়ম নেই। দেখলে নাকি, কোনও না কোনও অতৃপ্ত আত্মা এসে গ্রাস করে।
স্থানীয়দের বিশ্বাস, মেহন্দিপুর এই বালাজি মন্দিরই ভারতের একমাত্র ধর্মস্থল, যেখানে ভূত-প্রেত আর ভগবানের এক আশ্চর্য সহাবস্থান চোখে পড়ে। মন্দির চত্বরে পা রাখা মাত্র অনুভব করা যায়, প্রেতাত্মার অশরীরী উপস্থিতি। সেই কারণেই ভূত ঝাড়ানোর জন্য এই মন্দিরের প্রসিদ্ধি রয়েছে। দূর দূর থেকে ভক্তরা আসেন প্রেতগ্রস্ত প্রিয়জনের মুক্তি কামনায়। মেহন্দিপুর বালাজি মন্দিরের প্রধান উপাস্য দেবতা শ্রীহনুমান। তিনিই নাকি এখানে ‘বালাজি’ হিসেবে পূজিত হন। বজরংবলীর সঙ্গেই এই মন্দিরে পূজা পান ভৈরব। দুই দেবতার সঙ্গেই মন্দিরে বিরাজ করেন প্রেত রাজ।
বলা হয়, প্রেত রাজের অবস্থিতির কারণেই এই মন্দিরে প্রায় অশরীরীদের অবাধ বিচরণ। শোনা যায়, আগে এই জায়গায় এক ঘন জঙ্গল ছাড়া আর কিছুই ছিল না। আচমকাই এক পুরোহিত স্বপ্নে দর্শন পান বালাজির। বালাজি তাঁকে বলেন, আরাবল্লি পর্বতের মাঝে এক জঙ্গলে তাঁর আর প্রেত রাজের মূর্তি সমাধিস্থ রয়েছে। নির্দেশ দেন, ওই মূর্তি তুলে এনে মন্দিরে রেখে পুজো করার। পুরোহিত অবশ্য ওই বিগ্রহ খুঁজে পাননি। পরে বালাজিই তাঁকে স্বপ্নে আবার দেখা দিয়ে জায়গাটা চিনিয়ে দেন। তার পর, জঙ্গল কেটে গড়ে ওঠে এই বালাজি মন্দির। বলা হয়, বালাজি অর্থাৎ বজরংবলীর গর্ভগৃহ বাদ দিলে এই মন্দিরের বাকিটায় ভূতেদেরই বাস। সেই জন্যই পুজো দেওয়ার পর ভক্তদের পিছনে ফিরে দেখতে বারণ করা হয়।
এই মন্দিরে পুজো দেওয়ার আরেক রীতিও অবাক করার মতো। এক বাক্স লাড্ডুর মধ্যে তিন দেবতাকে প্রথমে একটি করে নিবেদন করা হয়। তার পর বাকি লাড্ডু ছুঁড়ে দিতে হয় মন্দিরের আনাচে-কানাচে। অশরীরীদের জন্য। এছাড়া, মাত্র দুটি লাড্ডু পুরোহিত নিজের হাতে দেন ভক্তকে। সেটাই প্রসাদ হিসেবে খাওয়া যায়। কিন্তু, বাড়িতে নিয়ে আসা যায় না। ঘুর আসবেন এই জায়গায়? দিল্লি থেকে সড়কপথে মেহন্দিপুর বালাজি মন্দিরের দূরত্ব ২৫৫ কিমি। আর জয়পুর হয়ে গেলে ১০০ কিমি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.