দুর্গাপুজো মানে উৎসবের আনন্দে মেতে ওঠা, রাত জেগে ঠাকুর দেখা থেকে আড্ডা, খাওয়াদাওয়া। কিন্তু শুধুই নির্মল আনন্দের আমেজে গা ভাসানো নয়, বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব কিন্তু সমাজের প্রতিটি শ্রেণির মানুষের বিরাট আয়ের মাধ্যমও। আর সেই বিষয়টিই এবার ফুটে উঠছে সমাজসেবী সংঘের মণ্ডপে।
দক্ষিণ কলকাতার গড়িয়াহাট এলাকার জনপ্রিয় এই মণ্ডপ এবার সাজছে শিল্পী কৃশানু পালের ভাবনায়। যাঁর কথায়, পুজোয় শুধু প্রান্তিক মানুষই উপকৃত হন না, এই উৎসব বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের উপার্জনের পথ প্রশস্ত করে দেয়। যার হাত ধরে দেশের অর্থনীতি সম্বৃদ্ধ হয়।
দুর্গাপুজোয় একটা বিরাট অংশ মেতে উঠলেও অনেকেই এখনও পুজোবিমুখ। তাঁরা মনে করেন, এই উৎসবের জৌলুস, অকারণ প্রতিযোগিতা এবং চাকচিক্যয় অযথা অর্থ খরচ হয়। কিন্তু গভীর ভাবে ভাবলে স্পষ্ট হয়ে যাবে, শাড়ি ব্যবসায়ী থেকে ফল বিক্রেতা, কাঠ মিস্ত্রী থেকে ঢাকি-সহ বিভিন্ন পেশার মানুষ উপকৃত হন। তাঁরা সারা বছর অপেক্ষা করেন, কখন পুজো থেকে দুপয়সা অতিরিক্ত আয় করা যাবে।
পুজোকে ঘিরেই মেলা বসে, মিষ্টির দোকানে ভিড় উপচে পড়ে। মৃৎশিল্পের আঁতুর ঘরে ব্যস্ততা থাকে তুঙ্গে। আর এই সব স্তর ফুলেফেঁপে ওঠায় পুজোয় সম্বৃদ্ধ হয় বাংলার অর্থনীতি।
শিল্পীর কথায়, শুধুমাত্র পুজোয় ২.৫ শতাংশ জিডিপি আসে বাংলায়। দুর্গাপুজোর সঙ্গে যুক্ত বাজারঘাট থেকে আর্থিক বণ্টন, মাইকের ব্যবহার, বিজ্ঞাপন, সবই মণ্ডপের অঙ্গ হয়ে উঠেছে।
মণ্ডপসজ্জাকে আরও বাস্তব করে তুলবে আশু চক্রবর্তীর আবহ। যেখানে বাজারের ভিড় ভাট্টার আওয়াজ যেমন পাওয়া যাবে, তেমনই শান্ত এক আবহে দেবীদুর্গার সঙ্গেও একাত্ব হয়ে যেতে পারবেন দর্শনার্থীরা।
করোনা কাল পেরিয়ে ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে। পুজো উদ্যোক্তা অরিজিৎ মৈত্র জানাচ্ছেন, দুর্গা সহায়। সেই কারণেই এমনটা সম্ভব হচ্ছে। দেবীর কাছে প্রার্থনা, এভাবেই যেন প্রতিটি মানুষের সংসার আলো করতে ফিরে ফিরে আসে পুজো।
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.