Advertisement
Advertisement

Breaking News

Personal Finance

অবসরেও ফলুক সোনা, জীবন হোক আরও রঙিন, শুধু নজর রাখুন কয়েকটি বিষয়ে

সময় থাকতেই অবসর পরিকল্পনা করা প্রয়োজন।

Here is how to plan your retirement

প্রতীকী ছবি

Published by: Suchinta Pal Chowdhury
  • Posted:April 29, 2024 3:04 pm
  • Updated:April 29, 2024 3:06 pm  

কর্মজীবন শেষে অবসর-জীবনের প্রবেশ। মানেই কি জীবনের সব রঙ উধাও? সব কিছু বিবর্ণ? না, মোটেও তা নয়। অবসর জীবনও বর্ণময় হয়ে উঠতে পারে যদি আগে থেকে কিছু দিকে নজর রাখা হয়। পরিকল্পনা-মাফিক চললে এই লক্ষ‌্যও পূরণ করা সম্ভব। লিখছেন শ্রীমন্ত জানা 

বসরও হোক বিনোদনময়। আমরা সকলেই ‘মরিতে চাই না আমি সুন্দর ভুবনে, মানবের মাঝে আমি বাঁচিবারে চাই।’ কিন্তু প্রাকৃতিক নিয়মে আমাদের জন্মানোর সঙ্গে শুরু হয়ে যায় জীবন চক্রের আবর্তন। আর এই নিয়ম মেনেই বার্ধ‌ক‌্য এবং আমাদের জীবনে অবশ‌্যম্ভাবী একটি অংশ। কর্মচঞ্চল, কর্মমুখর দিনগুলো অতিবাহিত করে একদিন যেন হঠাৎ করে আমাদের জীবনে অবসর নেমে আসে। তখন কর্মক্ষেত্রের ব‌্যস্ততার দিনগুলো শুধুমাত্র স্মৃতির খাতার এক-একটি পাতারূপে থেকে যায়। বন্ধু-বান্ধবহীন আমাদের দিনগুলো কাটে বিষণ্ণতায়। শারীরিক, মানসিক তথা আর্থিকভাবে দুর্বল হয়ে অন্যের নির্ভরশীলতায় থাকতে থাকতে তখন মনে হয়– এবার দাও বিদায়। কিন্তু আমরাও ইউরোপীয়দের মতো অবসর জীবনকেও স্বর্ণালী অধ‌্যায় হিসাবে উপভোগ করতে পারি। তার জন‌্য দরকার সামান‌্য একটু পরিকল্পনা। কারণ, অর্থনৈতিক সক্ষমতা আমাদের অনেক সমস‌্যার নিরসন করতে পারে। তাই যথেষ্ট সময় থাকতেই আমাদের রিটায়ারমেন্ট প্ল‌্যানিং বা অবসর পরিকল্পনা করা প্রয়োজন।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ইটিএফ নিয়ে তাড়াহুড়ো নয়, ভেবেচিন্তে নিন সিদ্ধান্ত]

আর আমরা যদি সঠিক অবসর পরিকল্পনা করতে পারি, তাহলে অবসর জীবনটাই হতাশার না হয়ে, নিশ্চিত অবসর-বিনোদনময় হয়ে উঠবে।
আসুন প্রথমেই জেনে নেওয়া যাক, অবসর জীবন কী কী অসুবিধার সম্মুখীন হতে পারে?
১) অবসর জীবনে সর্বপ্রথম যে সমস‌্যাটা আসে, তা হল–হঠাৎ করে উপার্জন কমে যাওয়া। যাঁরা চাকুরিজীবী, তাঁরা প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র‌্যাচুইটি প্রভৃতি থেকে প্রাপ্ত অর্থ মাসিক আয় প্রকল্পের মাধ‌্যমে কিছুটা পূরণ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। কিছু ক্ষেত্রে সরকারি পেনশন থাকে। তবে বাকিরা অনেকেই আর্থিকভাবে খুব দুর্বল হন অবসর জীবনে।
২) এই বয়সে এসে অন‌্যান‌্য খরচ কিছুটা কমলে ও চিকিৎসার খরচই সবচেয়ে মাথাব‌্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আবার বয়স বেড়ে যাওয়ার কারণে স্বাস্থ‌্য বিমার প্রিমিয়াম খুব বাড়ে। তাই স্বাস্থ‌্য বিমাও করা হয় না।
৩) এই বয়সে বাঁধা-ধরা দায়িত্ব কিছুটা কমলেও নিজের অপূর্ণ কিছু ইচ্ছাপূরণ করতে মন চায়। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক বাধায় তা অপূর্ণই থেকে যায়।
৪) কর্মজীবন কর্মব‌্যস্ততায় কাটানোর ফলে আমরা সেই অর্থে সামাজিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারি না। অবসরে সামাজিক কাজকর্মে যুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে অর্থ অবশ‌্যই একটি বিষয় হয়ে সামনে আসে।

আরও কিছু অসুবিধা ব‌্যক্তিবিশেষে আলাদা আলাদা হতে পারে। কিন্তু ওই যে কথায় আছে, বৃষ্টি আসার আগেই চালের ফুটো মেরামত করতে হয়। সেই ভাবেই কর্মজীবন শুরুর পর পরই যদি এই বিষয়গুলো নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করতে থাকি এবং একটু একটু করে প্রস্তুতি শুরু করি, তাহলে সত্যিকারে অবসর জীবন আমাদের কাছেও স্বর্ণালী অধ‌্যায় হয়ে থাকবে। আসুন যেভাবে আমরা অবসর লক্ষ্যে পৌঁছতে পারব, তার একটা প্রাথমিক আলোচনা করি।

[আরও পড়ুন: ‘ফাঁদ পেতেছে’ জালিয়াতরা! গ্রাহকদের সতর্ক করল এলআইসি]

রিটায়ারমেন্ট প্ল‌্যানিং-এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল- আগে নিজের জন‌্য একটি সুস্পষ্ট রিটায়ারমেন্ট মডেল তৈরি করা। এই বিষয়ে আপনি আপনার আর্থিক উপদেষ্টা বা ফিনান্সিয়াল প্ল‌্যানারের পরামর্শ নিতে পারেন। তবে এই পরিকল্পনা যত আগে করবেন, ততই সুবিধা হবে। এর পর মডেল প্ল‌্যানিং অনুযায়ী হিসাবের দ্বারা নির্ধারিত হবে আপনার রিটায়ারমেন্ট কর্পাস। সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এটিও পরিবর্তনযোগ‌্য। এর লক্ষ‌্যমাত্রা পুরণের জন‌্য বাজারে বিভিন্ন রকম রিটায়ারমেন্ট প্রোডাক্ট আছে। বিভিন্ন ইনসিওরেন্স কোম্পানির পেনশন প্ল‌্যান আছে। পিএফআরডিএ নিয়ন্ত্রিত অটল পেনশন যোজনা, এনপিএস আছে। বিভিন্ন মিউচুয়াল ফান্ড কোম্পানির রিটায়ারমেন্ট স্কিম আছে।

উপরের প্রতিটি ক্ষেত্রে অবসরে আপনি মাসে মাসে, ত্রৈমাসিক, ষাণ্মাষিক বা বার্ষিক হিসাবে পেনশন নিতে পারেন। তবে কত পরিমাণ আপনি ফেরত পাবেন, তা শুরুতে নির্ধারিত হয় না। যেদিন থেকে আপনি পেনশন নেবেন, সেই সময় বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করে তা নির্ধারিত হয়। তবে বর্তমানে কিছু মিউচুয়াল ফান্ড কোম্পানি বিশেষ কিছু স্কিম বাজারে নিয়ে এসেছে, যেখানে আপনার রিটায়ারমেন্টের সময় কত টাকা করে ফেরত চান, তা পূর্বেই ঠিক করে ফেলা যায়। এবং সেই অনুযায়ী টাকা প্রথম থেকে ইনভেস্ট করা যায়। এবং এটা আপনার দেওয়া টাকা আর কত সময় ধরে আপনার টাকা ইনভেস্ট থাকবে, তার উপর নির্ভর করে।

তাই ‘আর বিলম্ব নয়, এখনও আছে সময়।’ আপনার আর্থিক উপদেষ্টার সঙ্গে আজই কথা বলুন। নিজের লক্ষ‌্য-সহ বর্তমান আর্থিক অবস্থা আলোচনা করুন। এবং আপনার অবসর জীবনে অবসর-বিনোদনের জন‌্য উপরে বর্ণিত যে কোনও একটি প্রোডাক্টের মাধ‌্যমে রিটায়ারমেন্ট প্ল‌্যানিং করা শুরু করুন। 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement