সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: হাসপাতালের কর্তব্যরত অবস্থায় তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় (RG Kar Doctor Death) তোলপাড় গোটা দেশ। ঘটনার ভয়াবহতার কথা উল্লেখ করে উদ্বিগ্ন খোদ শীর্ষ আদালত। আর এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে আর জি কর হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়া হল কেন্দ্রীয় বাহিনীকে। ‘সুপ্রিম’ নির্দেশ পেয়ে মঙ্গলবারই হাসপাতালে পৌঁছয় সিআইএসএফ (CISF)।
মঙ্গলবার শুনানির সময়ে পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) চিকিৎসকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহারের কথা বলে। বলা হয়, এমন অনেক হাসপাতাল আছে, যেখানে নামী ডাক্তারদের দেখানোর জন্য দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হয়, সেই দিনক্ষণে পরিষেবা না পাওয়ার অর্থ চিকিৎসা পাওয়া আরও পিছিয়ে যাওয়া। তাতে চিকিৎসকদের সংগঠনের তরফে বলা হয়, ”১৪ আগস্ট রাতে শুধু হাসপাতাল নয়, হস্টেলেও আক্রমণ করা হয়েছিল। মহিলা রেসিডেন্টদের সর্বোচ্চ হুমকি দেওয়া হয়। বলা হয়, আন্দোলন করা যাবে না। ভয়ে মা-বাবারা বাড়িতে ডেকে নেয়। আর আপনারা বলছেন কাজে যোগ দিতে! এই আতঙ্কের আবহে তা কীভাবে সম্ভব?”
তা শুনে বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণ, ৭০০ রেসিডেন্ট ডাক্তারের মধ্যে বেশিরভাগই নিরাপত্তার অভাব বোধ করায় জন্য চলে গিয়েছে। ৩০-৪০ জন মহিলা, ৬০-৭০ জন পুরুষ ডাক্তার আছেন। শুধু নিজেদের পড়াশোনা নয়, পরিষেবা দেওয়ার স্বার্থে সমস্ত চিকিৎসকের হাসপাতালে ফিরে আসা উচিত। তাই CISF, CRPF পর্যাপ্ত পরিমাণে মোতায়েন করতে হবে আর জি কর হাসপাতালে (RG Kar Hospital)। তা শুনে রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল মন্তব্য করেন, ”এর পর থেকে রাজ্য পুলিশের আর কোনও দায়িত্ব রইল না।” তবে সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেওয়ার পরও কর্মবিরতি প্রত্যাহার নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়নি চিকিৎসক সংগঠনগুলি। তাদের প্রশ্ন, কেন্দ্রীয় বাহিনী চলে গেলে তার পরও তাদের নিরাপত্তা কতটা থাকবে? তাই সমস্ত মেডিক্যাল কলেজ, হাসপাতালের সঙ্গে আলোচনা করে তবেই তা স্থির করা হবে।
‘সুপ্রিম’ সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ডঃ সুকান্ত মজুমদারের প্রতিক্রিয়া, ”এটাই তো কাম্য ছিল। রাজ্যের মানুষের এই সরকারের প্রতি আস্থা নেই।” আর জি কর হাসপাতালে নিরাপত্তায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান কলকাতার এক অনুষ্ঠানে বলেন, ”এই রাজ্যের মা-মাটি-মানুষ সরকার ভোটে গণতান্ত্রিকভাবে জিতেছে। অথচ আর জি কর হাসপাতালের মর্মান্তিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করেছে। সংবেদনশীল ভূমিকা নেই বর্তমান সরকারের। তাদের সদিচ্ছা নেই। প্রতি পদে তা প্রমাণিত। এই নৃশংস ঘটনা ধামাচাপা দিতেই বরং তৎপর রাজ্য সরকার। একজন সিভিক পুলিশ ধৃত। সে আবার কলকাতা পুলিশের কর্মী!”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.