সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কসবায় ডিআই অফিস অভিযানে যাওয়া চাকরিহারা শিক্ষকদের উপর পুলিশের লাঠিচার্জ, এক শিক্ষককে ‘লাথি’ ভিডিও ভাইরাল হতেই চরম সমালোচনার মুখে পড়েছে কলকাতা পুলিশ। তা নিয়ে শুক্রবার লালবাজারে সাংবাদিক বৈঠক করে পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের দাবি, বিক্ষোভকারী শিক্ষকরাই প্রথম প্ররোচনা দিয়েছিলেন, তাঁরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ভিতরে ঢোকেন। পুলিশ তাঁদের মোকাবিলা শান্তিপূর্ণভাবেই করছিল। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা পুলিশের উপর আক্রমণ করে। তা মোটেই কাম্য নয়। প্রতিবাদীদের মধ্যে বহিরাগতরাও মিশেছিল। আত্মরক্ষায় পালটা বলপ্রয়োগ করা হয়, তবে তা সামান্য। একযোগে এমন কথাই বললেন কলকাতা পুলিশের সিপি মনোজ বর্মা ও জয়েন্ট সিপি (অপরাধ) রূপেশ কুমার।
কসবা কাণ্ড নিয়ে কেন এত সমালোচনা? কেন বারবার পুলিশের অমানবিকতার কথা উঠে আসছে সর্বস্তরের সমালোচনায়? তা বুঝতে একবার ফিরে যাওয়া যাক ঘটনার দিন। গত ৩ এপ্রিল, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ২৬ হাজার শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী চাকরি হারিয়েছেন। ‘প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি’র অভিযোগে ২০১৬ সালের শিক্ষক নিয়োগের ওই প্যানেলটি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। এর প্রতিবাদে জেলায় জেলায় ডিআই অফিসে অভিযানে নামেন চাকরিহারারা। বুধবার কসবায় ডিআই অফিসের সামনে তাঁরা জমায়েত করে প্রতিবাদে শামিল হন। সেখানেই অশান্তি বাঁধে। আচমকাই পুলিশের তরফে লাঠিচার্জ করে। এক শিক্ষককে ‘লাথি’ মারার ছবিও দেখা যায়। সেই ভিডিও নিমেষে ভাইরাল হয়। তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে কলকাতা পুলিশ।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ওইদিনই কলকাতা পুলিশের কমিশনার মনোজ বর্মা বলেন, “কসবার ডিআই অফিসে হামলায় ৬ জন জখম। তাঁদের মধ্যে ১ জন হাসপাতালে। পুলিশ বাধ্য হয়ে অ্যাকশন নিয়েছে।” শুক্রবার এনিয়ে ফের লালবাজারে সাংবাদিক সম্মেলন করেন যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ) রূপেশ কুমার ও কমিশনার মনোজ বর্মা।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ওইদিনই কলকাতা পুলিশের কমিশনার মনোজ বর্মা বলেন, “কসবার ডিআই অফিসে হামলায় ৬ জন জখম। তাঁদের মধ্যে ১ জন হাসপাতালে। পুলিশ বাধ্য হয়ে অ্যাকশন নিয়েছে।” শুক্রবার এনিয়ে ফের লালবাজারে সাংবাদিক সম্মেলন করেন যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ) রূপেশ কুমার ও কমিশনার মনোজ বর্মা। রূপেশ কুমারের সাফাই, ”শিক্ষকদের অভিযান থেকে আগে অশান্তি করা হচ্ছিল। ওরা পুলিশের প্রথম, দ্বিতীয় ব্যারিকেড ভাঙে, পুলিশকেও আক্রমণ করে। আমাদের এক অফিসার আহত হন। এরপর পুলিশ আত্মরক্ষার্থে বলপ্রয়োগ করেছে। আপনারাও ভিডিও দেখেছন। ভালো করে দেখলে বোঝা যাবে, পুলিশ আগে কারও উপর কোনও মারধর করেনি। পুলিশকে প্ররোচনা দেওয়া হয়েছে।”
সিপি মনোজ বর্মা অবশ্য দাঁড়িয়েছেন এসআই রিটন দাসের পাশে। ভাইরাল ভিডিওয় যাঁকে শিক্ষককে লাথি মারতে দেখা গিয়েছিল বলে দাবি চাকরিহারাদের। সাংবাদিক বৈঠকে সিপির বক্তব্য, ”শিক্ষকরা প্রতিবাদ করতে এসে পুলিশের উপর আক্রমণ করবেন, পুলিশকে মারবেন, তা কখনও কাম্য নয়। ভিডিওয় শোনা গিয়েছে, একজন বলছেন পেট্রল দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়ার কথা। আগে আমাদের অফিসার আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি হাসপাতালে ভর্তি, নানা শারীরিক পরীক্ষা চলছে। কবে উঠে দাঁড়াতে পারবেন, জানা নেই। তাছাড়া সেদিনের বিক্ষোভে বহিরাগতরা ছিলেন। আমরা চিহ্নিত করতে পেরেছি। তদন্ত চলছে। সব সত্য উঠে আসবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.