অভিরূপ দাস: কারও ঘরে শৌখিন ফুলের টবে জল জমে। কারও অ্যাকোরিয়ামের জমা জলে থিকথিক করছে মশার লার্ভা। জানতে পারছে না পুরসভা। কারণ চেয়েও এ সমস্ত অভিজাত আবাসনে প্রবেশ করতে পারে না কলকাতা পুরসভার কর্মীরা। গেট পেরিয়ে পুরসভার কর্মীকে ভেতরে ঢুকতে দেননা আকাশ ছোঁয়া অভিজাত আবাসনের নিরাপত্তারক্ষী। মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ শুক্রবার জানান, নিম্নবিত্ত পাড়া কিংবা ছোটও বাড়ি-ফ্ল্যাট নয়। দেখা যাচ্ছে অভিজাত আবাসনগুলি থেকেই ডেঙ্গু ছড়াচ্ছে। অতীনবাবুর কথায়, এই সমস্ত আবাসনে কর্মীদের ঢুকতে দেয় না। তার জন্য আমরা ড্রোনের সাহায্য নিচ্ছি।
কলকাতা পুর এলাকার ১ হাজার ৬২২ আবাসনের মধ্যে ৯২২ টি আবাসনকে চিহ্নিত করেছে কলকাতা পুরসভা। সূত্রের খবর, এই আবাসনগুলি যে এলাকায় গত বছর সেখানে ডেঙ্গু আক্রান্ত ছিল মারাত্মক। মানবদেহ ডেঙ্গুর ভাইরাস বহন করে। কলকাতা পুরসভা মনে করছে, শহরে ডেঙ্গু ছড়ানোর জন্য দায়ী এই অভিজাত আবাসনের বাসিন্দারা। মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ জানিয়েছেন, ওইসব আবাসনের কমিটির প্রেসিডেন্ট, সেক্রেটারির নম্বর, ইমেইল আইডি যোগাড় করা হয়েছে। তাদের চিঠি পাঠানো হচ্ছে। কি রয়েছে চিঠির বয়ানে? ‘‘অভিজাত আবাসনগুলিতে ফুলের টব, ব্যবহার করেন অনেক। কারও ফ্রিজের পেছনে জল জমে। ওনাদের অনুরোধ করা হয়েছে আমাদের কর্মীদের অনুমতি দিন আবাসনে ঢুকে মশার লার্ভা নিধন করতে।’’
গত বছরের তুলনায় এখনও পর্যন্ত শহরে ডেঙ্গু-ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটাই কম। পুরসভা সূত্রে খবর, ২৮ জুলাই পর্যন্ত কলকাতায় ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা ১০৯৩ জন। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ২৩৩৮ জন। গত বছর ২৮ জুলাই পর্যন্ত শহরে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩৪১। এবছর সেখানে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ২০৪ জন। মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন করবো অবিলম্বে ডেঙ্গুকে নোটিফায়েবেল ডিজিজ হিসেবে চিহ্নিত করুন। করোনার মতো ডেঙ্গু লুকিয়ে লুকিয়ে রাখলেও শাস্তি হতে হবে।
মেয়র পারিষদের দাবি, ষাট লক্ষ মানুষ প্রতিদিন জীবিকার সন্ধানে কলকাতায় আসেন। মানুষের শরীর ডেঙ্গু ভাইরাস বহনকারী। বহিরাগত যারা আসছেন তাদের কামড়ে যদি মশা অন্য কাউকে কামড়ায় তাহলে তারও ডেঙ্গু হতে পারে। মেয়র পারিষদের অভিযোগ, ‘‘এমন বহু চিকিৎসক আছেন, ডায়গনাস্টিক সেন্টার আছে যেখানে ডেঙ্গু পজিটিভ রোগী এলেও তারা এখনও আমাদের জানাচ্ছে না।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.