নিরুফা খাতুন: গত বছর পুজোমণ্ডপ ভেসেছিল বৃষ্টিতে। বাইরে যখন রোদ খাঁ খাঁ করছিল তখন এই ওয়েলিংটন নাগরিক কল্যাণ সমিতির মণ্ডপে অঝোরে বর্ষণ চলছিল। এবার এই পুজো কমিটি অকেজো যন্ত্রাংশে প্রাণ ফিরিয়ে আনছে। চাঁদনি মার্কেট চত্বরের এই পুজো এবার ৩৫ বছরে পা দিয়েছে। বিগ বাজেট পুজোর জমানায় স্বল্প বাজেটের এই পুজো কমিটি প্রতিবারই নয়া চমক নিয়ে হাজির হয়। এবার তাদের থিম ‘অন্তরবাহির’। ফেলে দেওয়া অকেজো যন্ত্রপাতি নিয়ে সেজে উঠছে মণ্ডপ।
চাঁদনি মার্কেট শহরে সব থেকে বড় বৈদ্যুতিন সরঞ্জামের বাজার। এখানে নতুন-পুরনো বৈদ্যুতিন সরঞ্জামের কেনাবেচা চলে। এবার এই মার্কেটের সেই সরঞ্জামের বর্জ্য দিয়ে মণ্ডপ সেজে উঠছে। অকেজো সিলিং ফ্যান, টেবিল ফ্যান, মোটর, সিডি ক্যাসেট, ল্যাপটপ, কম্পিউটার মোবাইল যারা আর কোনও কাজে লাগবে না। রাস্তায়, ভ্যাটে যেগুলি আবর্জনার স্তূপ হয়ে পড়ে রয়েছে। সেই সব অকেজো যন্ত্রাংশগুলিতে যেন নতুন করে প্রাণ ফিরিয়ে দিয়েছেন শিল্পী রবীন রায়।
শিল্পী জানান, মানুষের যেমন বাইরের একটা রূপ থাকে ভিতরে আর একটা রূপ থাকে। যন্ত্রেরও একই। মোবাইল বলুন বা ল্যাপটপ, টিভি এগুলি বাইরে থেকে একরকম দেখতে। কিন্তু এদের ভিতরে অন্যরকম থাকে। এগুলি খোলা হলে তবেই তা দেখা যায়। সেই ভাবনাকে মাথায় রেখে এবারে থিম। যন্ত্রাংশের মণ্ডপে অবশ্য প্রতিমা থাকছে মৃন্ময়ীরূপে। পুজো উদ্যোক্তা সুস্মিত বড়ুয়া বলেন, “আমাদের পুজোর বাজেট খুব কম থাকে। সেই বাজেটের কথা মাথায় রেখে থিম করে থাকি। চাঁদনি মার্কেটে আমাদের ব্যবসা। এই মার্কেটকেই এবার তুলে ধরা হচ্ছে পুজোয়।”
তিনি আরও জানিয়েছেন, “এই মার্কেটে ব্যবসায়ীদের ফেলে দেওয়া অকেজো ফ্যান, মোবাইল, ল্যাপটপ, কম্পিউটার, লাইট এই সব যন্ত্রপাতিকে ব্যবহার করা হচ্ছে মণ্ডপে। এ ক্ষেত্রে মার্কেটের ব্যবসায়ীরা খুব সহযোগিতা করেছেন। অনেকেই তাঁদের গুদামে পড়ে থাকা ইলেক্ট্রনিক বর্জ্য বিনামূল্যে দিয়েছেন। মণ্ডপে ঢুকলে দেখা যাবে, বিশাল বড় একটি ময়ূরপঙ্খী, যা সিলিং ফ্যানের ব্লেড দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। সিডি ক্যাসেটগুলিকে সুন্দরভাবে কেটে ফুলের মত রূপ দেওয়া হয়েছে।” মহালয়ার পর থেকে এই মণ্ডপ দর্শকদের জন্য খুলে দেওয়া হবে।
দেখুন ভিডিও
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.