ডেকার্স লেনের পুরনো পার্টি অফিস এখন ইসকনের সম্পত্তি।
রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: নতুন প্রজন্মের কমরেডদের পার্টির দুর্দিনের ইতিহাস স্মরণ করাচ্ছে সিপিএম। রাজ্য সম্মেলনের আগে সামাজিক মাধ্যমে দলের পুরনো ইতিহাস প্রচারে তুলে ধরছে লাল পার্টি। লক্ষ্য একটাই, বর্তমান নেতা-কর্মীদের বার্তা এবং পার্টির দুর্দিনের কথা মনে করিয়ে তাঁদের মনোবল বাড়ানো। রাজ্যের ৩৪ বছর ক্ষমতায় থাকার পর ক্ষমতাচ্যুত হয়ে বঙ্গ সিপিএম এখন ক্ষয়িষ্ণু শক্তিতে পরিণত হয়েছে। যা আগামী দিনে আলিমুদ্দিনের কর্তাদের কাছে অশনি সংকেত। তাই বর্তমান দুর্দিনে কমরেডদের পার্টির পুরনো ইতিহাসকে মনে করিয়ে বার্তা দেওয়া হচ্ছে, তখন আরও দুর্দিন ছিল পার্টির।
আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে হুগলির ডানকুনিতে শুরু হচ্ছে সিপিএমের ২৭তম রাজ্য সম্মেলন। ২৫ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ্য সমাবেশ। সেই রাজ্য সম্মেলনকে সামনে রেখেই শুরু হয়েছে এই প্রচার। স্বাধীনতার আগে কমিউনিস্ট পার্টির কর্মকাণ্ড থেকে শুরু করে পার্টি নিষিদ্ধ, গোপনে রাজ্য সম্মেলন সংগঠিত করার ইতিহাস, সেসব কথা তুলে ধরা হচ্ছে সমাজ মাধ্যমে। স্মরণ করানো হয়েছে ১৯৪৮ সালে চতুর্থ রাজ্য সম্মেলনের কথা। তখন পার্টি অবিভক্ত, বাংলাও। তখন পার্টির রাজ্য সম্মেলন হয়েছিল ৮ নম্বর, ডেকার্স লেনে দলের সদর দপ্তরের ছাদে। সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন রণেন সেন। ডেকার্স লেনেই ছিল অবিভক্ত কমিউনিস্ট পার্টির সদর দপ্তর। তখন পার্টির সদস্য সংখ্যা ছিল ১৯,২৫০।
আজ অবশ্য সেই ৮ নম্বর, ডেকার্স লেনে যেখানে কমিউনিস্ট পার্টির সদর দপ্তর ছিল সেই তিনতলা বাড়ির সামনে এখন ঝোলানো ইসকনের ফ্লেক্স! সেখানে অবশ্য এখন কমিউনিস্ট পার্টির চিহ্নমাত্র নেই। একদা অবিভক্ত কমিউনিস্ট পার্টির রাজ্য দপ্তর ডেকার্স লেনের সেই বাড়িতে এখন ইসকনের বোর্ড। বাড়ির মালিক ইসকনকে দান করেছিলেন। এখন অবশ্য তা দীর্ঘদিন ব্যবহৃত হয় না। রাজ্য সিপিএমের শীর্ষ নেতারা অবশ্য ইসকনের কথা জানেন না। কিন্তু ডেকার্স লেনের খাদ্য গলিতে একসময় ছিল অবিভক্ত বাংলার কমিউনিস্ট আন্দোলনের ইতিহাসের জমি। অবিভক্ত বাংলায় অবিভক্ত কমিউনিস্ট পার্টির রাজ্য সম্মেলন হয়েছিল এই ডেকার্স লেনেই।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার নিয়ে সরব হয়েছে সিপিএম। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে একতার বার্তা দিতে সম্প্রতি জ্যোতি বসু গবেষণা কেন্দ্রের উদ্বোধনে বাংলাদেশের সঙ্গীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে আমন্ত্রণ করে নিয়েও এসেছিল সিপিএম। সমাজমাধ্যমের প্রচারে তুলে ধরা হয়েছে পার্টির অন্যান্য সম্মেলনগুলির কথাও। পঞ্চম সম্মেলন হয়েছিল মুসলিম ইনস্টিটিউট হলে ১৯৫১ সালে। তখন পার্টির সদস্য সংখ্যা ছিল ৯ হাজার। দ্বিতীয় সম্মেলন হয়েছিল চন্দননগরে। কলকাতার ভারত সভা হলে তৃতীয় সম্মেলন হয় কমিউনিস্ট পার্টির।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.