গৌতম ব্রহ্ম: স্যালাইন কাণ্ডে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে প্রসূতি ও পরে সদ্যোজাতর মৃত্যু নিয়ে জোড়া তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট হাতে পেল নবান্ন। দুই রিপোর্টেই গাফিলতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে নবান্নে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে রিপোর্টের সারাংশ শোনালেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। তারপর মুখ্যমন্ত্রী নিজে এই ঘটনায় ওইদিন কর্তব্যরত চিকিৎসকদেরই দায়ী করলেন। তাঁর কথায়, ”রিপোর্টটা আপনারা শুনলেন। এখানে স্পষ্ট, ওইদিন যাঁরা অপারেশন করেছিলেন, যাঁদের হাতে সন্তানের জন্ম হয়, তাঁরা দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করেননি। করলে মা-শিশুদের বাঁচানো যেত। কারও প্রাণহানি হতো না। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা।” ওইদিন কর্তব্যরত ১২ চিকিৎসককে সাসপেন্ড করার কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, গত বুধবার মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কেশপুরের প্রসূতি মামনি রুইদাস পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। অভিযোগ ওঠে, ‘বিষাক্ত’ স্যালাইনের কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে স্বাস্থ্যদপ্তরের কাছে রিপোর্ট তলব করে নবান্ন। পাশাপাশি তদন্তভার দেওয়া হয় সিআইডিকে। বৃহস্পতিবার সিআইডি ও স্বাস্থ্যদপ্তরের তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট জমা পড়েছে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। তাতে স্যালাইনের ‘বিষক্রিয়া’ নয়, ‘হিউম্যান এরর’-এর কথা বলা হয়েছে। জানা গিয়েছে, ওইদিন অপারেশন থিয়েটারে কোনও RMO বা কোনও সিনিয়র চিকিৎসক ছিলেন না। অ্যানাস্থেশিয়া থেকে শুরু করে ডেলিভারি – সবই করেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। আর তাতেই বিপত্তি ঘটেছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ।
এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী জুনিয়র, সিনিয়র, এমএসভিপি, আরএমও সকলকেই দায়ী করে কড়া ভাষায় ভর্ৎসনা করেছেন। সিনিয়র চিকিৎসকরা হাসপাতালে ৮ ঘণ্টা ডিউটি ঠিকমতো পালন করেন না বলে অভিযোগ তোলেন। তাঁর আরও অভিযোগ, জুনিয়র ডাক্তাররা ভালোভাবে প্রাথমিক পরীক্ষা না করেই রোগীদের পরিস্থিতি সম্পর্কে মন্তব্য করে দেন, যা অনভিপ্রেত। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ”এত গাফিলতি থাকলে তা ফৌজদারি অপরাধ। কড়া ব্যবস্থা হবেই।” পাশাপাশি চিকিৎসকদের হুঁশিয়ারির সুরেই বললেন, ”কাজ ঠিকমতো না করতে পারলে ছেড়ে অন্য রাজ্যে চলে যান।” সরকারি হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটারের সামনে সিসিটিভি লাগানোর কথা বললেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.