Advertisement
Advertisement
Congress

একা লড়েও শূন্য ‘হাত’, উপনির্বাচনের ফলে প্রদেশ কংগ্রেসের বর্তমান ও প্রাক্তনের দ্বন্দ্ব তুঙ্গে

জোট করেও কি বিধানসভায় প্রতিনিধি পাঠানো গেছে? জোটপন্থীদের প্রশ্ন প্রদেশ সভাপতির।

Clash between present and former Congress leader on alliance issue after by-election results
Published by: Amit Kumar Das
  • Posted:November 23, 2024 10:28 pm
  • Updated:November 23, 2024 10:28 pm  

ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: বাংলার ছয় কেন্দ্রে উপনির্বাচনে জামানত জব্দ হয়েছে কংগ্রেসের। যে ফলাফলকে সামনে রেখে প্রদেশ কংগ্রেসে এবার মাথাচাড়া দিল বর্তমান ও প্রাক্তনের দ্বন্দ্ব। প্রবীণ ও প্রাক্তন নেতৃত্ব আবারও বাম-কংগ্রেস জোটের পক্ষে সওয়াল করেছে। এই ফল সামনে রেখে বাংলায় দলের ‘স্বার্থে’ তারা আরও একবার এআইসিসি নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলতে চায়। অন‌্যদিকে, বর্তমান নেতৃত্বের বক্তব‌্য, বাংলায় দলের ‘স্বার্থেই’ একা লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। বাংলায় কংগ্রেসের এই ফল প্রত‌্যাশিতই ছিল। কিন্তু এটা বোঝা গেল যে, কোন কেন্দ্রে দলের সংগঠন কেমন।

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকারের কথায়, “ইন্ডিয়া জোটে বাম, তৃণমূল আর কংগ্রেস একসঙ্গে রয়েছে। ভবিষ‌্যতে কারও সঙ্গে জোট হবে কিনা, তা এআইসিসির সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করবে। কিন্তু আমরা চেয়েছিলাম এই ছয় কেন্দ্রে কংগ্রেসের পতাকাটা পৌঁছক। আর যারা জোটের পক্ষে সওয়াল করছেন, তারা বলুন তো ২০২১-এ জোট করেও কি বাম বা কংগ্রেসের তরফে আমরা কাউকে বিধানসভায় পাঠাতে পেরেছি?”

Advertisement

জোটপন্থী অংশের ফের জোটের দাবির কথা শুনে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের প্রশ্ন, এআইসিসির কথায় প্রদেশ কংগ্রেস যদি ফের বামফ্রন্টের হাত ধরেও, তাতে দুই দলের ভোট মিলিয়েও কি জামানত জব্দ রোখা যাবে? উল্টে পুরনো অপবাদ ফের জোরালো হবে যে, জোট হলে দুই দলেরই কর্মী-সমর্থকরাই নিজেদের দলের থেকে তলে তলে অনেকেই মুখ ফেরান। তাতে তো আখেরে তৃণমূল বা বিজেপিরই লাভ। এই পরিস্থিতিতে দলের কর্মীদের মত শুনতে রাজ‌্য সফরে বেরনোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি।

ভোটের ফল সামনে আসতেই নতুন করে জোটের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে প্রদেশ নেতৃত্বের মধ্যে। প্রাক্তন প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরি ২০১৬ সালের জোটের প্রসঙ্গ টেনে বলেছেন, “সিপিএমের সংগঠন আছে ঠিকই, কিন্তু মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতার ঘাটতি রয়েছে। কংগ্রেসের আবার রাজ্যে সংগঠন দুর্বল। কিন্তু মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা রয়েছে।” সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে বাম-কংগ্রেস জোটের সমন্বয় এই উপনির্বাচনেও চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ছয় কেন্দ্রে জেলা নেতৃত্বের ‘একলা চলো’ দাবি শুনে দিল্লিতে রিপোর্ট পাঠিয়েছিল প্রদেশ নেতৃত্ব। শেষে পৃথকভাবে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের একলা লড়াই হয়। তাতে দুই দলেরই জামানত জব্দ হয়েছে। অধীরের বক্তব‌্য, “এবার বামেদের সঙ্গে জোট হয়নি। কিন্তু প্রদেশ সভাপতির দায়িত্বে থাকাকালীন ২০১৬ সালে বামেদের সঙ্গে আমরা জোট করেছিলাম এবং যতদিন দায়িত্বে ছিলাম ততদিন জোট ছিল। তবে বর্তমানে আমি নেতৃত্বে নেই, তাই তাদের সিদ্ধান্ত নিয়েও কিছু বলার নেই।” প্রবীণ আরেক প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য এই ফলে হতাশ। তিনি ২৬-এর নির্বাচনে জোটের পক্ষে। অবিলম্বে এ নিয়ে দিল্লির নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলতে চান। প্রদীপবাবুর কথায়, “এটা ঠিক যে, ছটি কেন্দ্রে কংগ্রেসের পতাকাটা দেখা গিয়েছে। কিন্তু দল হিসাবে সার্বিকভাবে ভোটের শতাংশে কংগ্রেস আরও পিছিয়ে গিয়েছে।”

জামানত জব্দ হলেও সিতাইয়ের কংগ্রেস প্রার্থীই এবার সব থেকে বেশি ভোট পেয়েছেন। তাঁর প্রাপ্ত ভোট নয় হাজারের কিছু বেশি। কংগ্রেস সব থেকে কম ভোট পেয়েছে মাদারিহাটে, ২৮০০ ভোটের কিছু বেশি। ২০২৪-এর ভোটের বিধানসভার পরিসংখ‌্যান ধরে মেলালে দেখা যাচ্ছে বাম-কংগ্রেস জোট পেয়েছিল ১১.০৩ শতাংশ। সেখানে কংগ্রেস আলাদা পেয়েছিল ৪.৬৮ শতাংশ। এবার ছয় কেন্দ্রে তাদের প্রাপ্ত ভোট ২.৪৭ শতাংশ। এই প্রসঙ্গেই অধীর ২০১৬-র জোটের প্রসঙ্গ টেনেছেন। পাল্টা শুভঙ্করের প্রশ্ন, “২০১৬-র ভোটে হারের পর কি একসঙ্গে বসে পর্যালোচনা হয়েছিল? তার পর পঞ্চায়েত, পুরভোটে কি ঠিক ঠিক জোট হয়েছিল? আবার ২০১৯-এ জোট হল না। কিন্তু ২০২১-এ ফের হল। সেবারও তো আমরা কোনও দলই কাউকে বিধানসভায় পাঠাতে পারলাম না। ২০২৩-এর পঞ্চায়েতেও জোট হল না। এই পরপর হার নিয়ে কি একবারও দলে বা একত্রিতভাবে দুই দলে পর্যালোচনা হয়েছে?”

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement