সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হাজারও টানাপোড়েনের পর রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারের সঙ্গে বৈঠক করে বিজেপি প্রতিনিধি দল। সঙ্গে ছিলেন মুর্শিদাবাদের ঘরছাড়ারাও। তবে বৈঠকে আশ্বস্ত নন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। পুলিশের ভূমিকার নিয়ে হাজারও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। মুর্শিদাবাদের সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় বিএসএফ ক্যাম্পের দাবি জানিয়েছেন।
বুধবার সন্ধেয় সুকান্ত মজুমদার ভবানী ভবন থেকে বেরিয়ে বলেন, “ডিজির সঙ্গে কথা হয়েছে। ঘরছাড়াদের কথা শুনেছেন। আইন অনুযায়ী সমস্যা সমাধান করা হবে বলে জানিয়েছেন। কিন্তু তাতে আমরা আশ্বাস পাইনি।” বিজেপি রাজ্য সভাপতির অভিযোগ, “ঘরছাড়ারা সরকারি ক্যাম্পে খাবারদাবার ঠিকমতো পাচ্ছেন না। একটা বিস্কুটও পাচ্ছে না। তাই বিজেপির তরফ থেকে ত্রাণ দেওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। কিন্তু তা ওরা দিতে দিচ্ছে না।” সুকান্তর দাবি, “আমি চাই পুলিশ নিয়োগের নিয়ন্ত্রণ নিক কেন্দ্র। ৫-৬ রাজ্যে বদলি করা হোক। নইলে এক জায়গায় থেকে পুলিশ দুর্নীতিবাজ হয়ে যাচ্ছে।” সুকান্তর আরও দাবি, মুর্শিদাবাদের ওই অশান্ত এলাকায় একটি বিএসএফ ক্যাম্প ছিল। তাঁর অভিযোগ, চোরাকারবারের জন্য বিএসএফের ক্যাম্প তুলে দিয়েছে। আবার বিএসএফ ক্যাম্প খোলার দাবি জানিয়েছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি।
উল্লেখ্য, সংশোধিত ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে মুর্শিদাবাদে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়। বাড়ি, দোকান ভাঙচুর। ঘরছাড়াও হন অনেকেই। ডিজি রাজীব কুমার খোদ এলাকায় যান। সরেজমিনে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে এলাকায় শান্তি ফেরান। বর্তমানে মুর্শিদাবাদের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে। বুধবার সকালে ওই এলাকার ১১ জন বাসিন্দা কলকাতায় আসেন। বিজেপি রাজ্য দপ্তরে সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে দেখা করেন। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান।
এরপর মুর্শিদাবাদের ১১ জন বাসিন্দাকে নিয়ে ভবানী ভবনের উদ্দেশে রওনা দেন সুকান্ত। সঙ্গে ছিলেন জগন্নাথ সরকার ও তাপস রায়রা। কিছুক্ষণ পর সেখানে গিয়ে পৌঁছন অর্জুন সিং। রাজ্য পুলিশের ডিজির সঙ্গে দেখা করতে চান তাঁরা। তবে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। তাতে ক্ষুব্ধ বিজেপি ভবানী ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। সময় যত গড়ায় ততই চড়তে থাকে বিক্ষোভের আঁচ। উত্তেজনার পারদ ক্রমশ চড়তে থাকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ভবানী ভবনের সামনে বেরিয়ে আসে ডিসি সাউথ। তিনি জানান, ডিজি ভবানী ভবনে নেই। তাই তাঁর সঙ্গে দেখা করা সম্ভব নয়।
তা শুনে উত্তেজনার পারদ আরও চড়ে। সুকান্ত মজুমদারের দাবি, “পুলিশের তরফে প্রথমে বলা হয় ৪ জনের সঙ্গে দেখা করবেন ডিজি। আমরা বলি সম্ভব নয়। কারণ, ঘরছাড়াই শুধুমাত্র ১১ জন। তারপর আমরা ৩ নেতা রয়েছি। আমি আশা করব সকলের সঙ্গে ডিজি দেখা করবেন। কারণ, এঁরা কেউ রোহিঙ্গা নন।” প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে বাকবিতণ্ডার পর ভবানী ভবনে ঢোকার অনুমতি পায় বিজেপি। ঘরছাড়াদের নিয়ে ভবানী ভবনে ঢোকেন সুকান্তরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.