সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একেবারে হাইওয়ের মাঝে গাড়ি থামিয়ে বাকবিতণ্ডায় জড়ালেন বিজেপি সাংসদ ও তৃণমূল বিধায়ক। গাড়ির গতি নিয়ে ঝামেলার জেরে দ্বিতীয় হুগলি সেতুর উপর গাড়ি থামিয়ে বচসা অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ও বাবুল সুপ্রিয়। অভিযোগ, তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে লক্ষ্য করে অনর্গল কুকথা বলতে থাকেন সাংসদ। তার প্রতিবাদ করে বাবুল তাঁকে ক্ষমা চাইতে বলেন। কিন্তু অভিজিৎবাবু তাতে নারাজ। ফলে অশান্তি আরও চরম আকার নেয়। খবর পেয়ে হাওড়া সিটি পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তৎপর হয়। তবে দ্বিতীয় হুগলি সেতুর মতো জায়গায় এভাবে দুই ভিভিআইপি-র গাড়ি থেমে যাওয়ায় যাানজট তৈরি হয়।
ঘটনা ঠিক কী ঘটেছে? যার জেরে দুই যুযুধান শিবিরের দুই জনপ্রতিনিধি এভাবে রাস্তার উপর বচসায় জড়িয়ে পড়লেন? জানা যাচ্ছে, প্রচণ্ড গতিতে দ্বিতীয় হুগলি সেতুর উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলেন তমলুকের বিজেপি সাংসদ তথা প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ঘড়িতে তখন ৯টা পেরিয়ে। একই সময়ে সেখান দিয়ে নিজে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলেন মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। অভিজিৎবাবুর গাড়ির গতি নিয়ে আপত্তি করেন বাবুল। অভিযোগ, তা শুনেই তাঁকে অশালীন ভাষায় আক্রমণ করে বসেন বিজেপি সাংসদ। আরও অভিযোগ, বাবুলের গাড়িকে ওভারটেক করার জন্য রীতিমতো একপাশে চেপে দিতে চাইছে ওই গাড়িটি। প্রথমে না বুঝতে পারলেও পরে বিষয়টি বোঝামাত্র বাবুল সেই গাড়িটিকে থামান ব্রিজের উপর। নীলবাতি লাগানো সেই গাড়ি থামিয়ে চালককে প্রশ্ন করার সময়ই বাবুল দেখেন, পিছনের আসনে বসে রয়েছেন প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
চালককে বাবুল এত দ্রুত গতিতে গাড়ি চালানোর কারণ জিজ্ঞাসা করেন। অভিযোগ, সেসময়ই আচমকা পিছন থেকে কুৎসিত ভাষায় তাঁকে আক্রমণ শুরু করেন অভিজিৎ। বাবুল তাঁকে বুঝিয়ে বলেন, বিপজ্জনক গতিতে তাঁর গাড়ি চলছে। এর ফলে যে কোনও মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ট্রাফিকের যে স্পিড লিমিট রয়েছে, তা মানছেন না অভিজিৎ। সেইসঙ্গে নিয়ম না মেনে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নীল রঙের আলো ব্যবহার করছেন, যা তিনি কখনওই করতে পারেন না। এসব শুনেই খেপে যান অভিজিৎবাবু। রীতিমতো অকথ্য ভাষা ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ।
বাবুল ও অভিজিতের এই তর্কাতর্কির সময়ে দ্বিতীয় হুগলি ব্রিজের উপর লোকজন জড়ো হয়ে যায়। খবর পেতেই দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট ও কর্মীরা। বাবুল সাফ জানান, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ক্ষমা না চাইলে তাঁকে যেতে দেওয়া হবে না। এরপরই অভিজিৎ তাঁর সঙ্গে থাকা নিরাপত্তারক্ষী ও পুলিশকর্মীদের উদ্দেশ্য করে বলতে থাকেন, ‘‘বাবুলকে এখনই গ্রেপ্তার কর।’’ বাবুল তার প্রতিবাদ করে বলেন যে, এভাবে কখনও কাউকে গ্রেপ্তার করা যায় না। আর উনি কোন এক্তিয়ারে এই কথা বলছেন? উনি কোনও বিচারপতিও এখন নন। ফলে এই ধরনের নির্দেশ অত্যন্ত আপত্তিজনক। উত্তেজনা একটা সময় চরমে ওঠে। শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে নিজের দোষ স্বীকার করে রণে ভঙ্গ দেন অভিজিৎবাবু। বাবুল পরে বলেন, ‘‘উনি নিয়ম ভাঙছেন। আবার তার প্রতিবাদ করলে জঘন্য ভাষায় কথা বলছেন। তবে শেষ পর্যন্ত উনি ক্ষমা চাইতে বাধ্য হয়েছেন।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.