অর্ণব আইচ: আত্মহত্যা করতে একসঙ্গেই ঘুমের ওষুধ খেয়েছিলেন ট্যাংরার দে পরিবারের ৬ সদস্য। কিন্তু ঘটনাচক্রে পরেরদিন সকালে তিন পুরুষ সদস্যেরই ঘুম ভেঙে যায়। অর্থাৎ কাজ করেনি ঘুমের ওষুধ। কিন্তু তখনও ঘুমোচ্ছিলেন মহিলা সদস্যেরা। প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে, সেই কারণেই ঘুমন্ত অবস্থায় সুদেষ্ণা ও রোমির হাতের শিরা কেটে খুন করা হয়। দে পরিবারের দুই ছেলে পরিকল্পনা করেছিলেন নাবালক সন্তানকে কোনও হাসপাতালে ভর্তি করে তাঁরা আত্মহত্যা করবেন। কিন্তু নাবালক তাতে রাজি না হওয়ায় সমস্যায় পড়েছিলেন প্রণয় ও প্রসূন। তারপরই নাকি ঘটে দুর্ঘটনা।
ট্যাংরা কাণ্ডে তোলপাড় কলকাতা। ঠিক কী ঘটেছিল, সেই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে সর্বত্র। এরই মাঝে প্রকাশ্যে চাঞ্চল্যকর তথ্য। প্রসূন ও প্রণয়কে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে, ১৭ তারিখ রাতে একইসঙ্গে ঘুমের ওষুধ খায় দে পরিবারের ৬ সদস্য। কিন্তু পরেরদিন সকালে ঘুম ভাঙে প্রণয়, প্রসূন ও নাবালক পুত্র সন্তানের। কিন্তু তখনও নাকি ঘুমোচ্ছিলেন সুদেষ্ণ, রোমি ও মৃত নাবালিকা। এরপরই দুই বউয়ের হাতের শিরা কেটে খুন করা হয়। প্রসূন ও প্রণয় নাকি ভেবেছিলেন, নাবালক কোনও এক হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে তারপর দুই ভাই আত্মঘাতী হবেন। কিন্তু ওই নাবালক হাসপাতালে ভর্তি হতে রাজি হয়নি। সেই কারণেই রাস্তায় ঘুরপাক খাচ্ছিল আহতরা। বাড়ি থেকে বেরিয়ে প্রথমে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেস ওয়ে ধরেন তাঁরা। এরপর তাঁদের গাড়ির হদিশ মিলেছে কোনা এক্সপ্রেস ওয়েতে। এরপর দ্বিতীয় হুগলি সেতু, এজেসি বোস রোড, পার্ক সার্কাস সেভেন পয়েন্ট, সায়েন্সসিটি হয়ে ইএম বাইপাস। সেখানেই আচমকা ঘটে দুর্ঘটনা, এমনটাই দাবি আহত দুই ভাইয়ের।
এখানেও খটকা রয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলছে, মৃত্যুর তিন থেকে ৬ ঘণ্টা আগে খাবার খেয়েছিলেন সুদেষ্ণা ও রোমি। তাহলে কি মাঝরাতে উঠে খেয়ে আবার ঘুমিয়েছিলেন তাঁরা? উত্তর অজানা। হাতের শিরা কাটার ক্ষত নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। এদিকে কারণ হিসেবে এখনও পর্যন্ত যা জানা যাচ্ছে তা ঋণের বোঝা। ৬ টি ব্যাঙ্ক ও কিছু এজেন্সি থেকে ঋণ নিয়েছিল দে পরিবার। বাড়িটিও বন্দক দিয়েছিল তাঁরা। সবমিলিয়ে দেনা ছিল কোটি কোটি টাকার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.