Advertisement
Advertisement

Breaking News

POK

পৃথিবীর বুকে একটুকরো স্বর্গ! ভারতের জন্য কেন গুরুত্বপূর্ণ পাক অধিকৃত কাশ্মীর, জানুন খুঁটিনাটি

পিওকে ভারতের দখলে এলে চিনের সঙ্গে সরাসরি সীমান্ত যোগ থাকবে না পাকিস্তানের।

Why POK is importent for India

ফাইল ছবি

Published by: Amit Kumar Das
  • Posted:April 30, 2025 4:58 pm
  • Updated:April 30, 2025 8:02 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভূস্বর্গ’ বলা হয় কাশ্মীরকে। এ উপমা যে ভারতের মুকুট কাশ্মীরের জন্য একেবারেই অত্যুক্তি নয়, যারা সেখানে গিয়েছেন তারা মর্মে মর্মে তা উপলব্ধি করেছেন। এই কাশ্মীরেরই একটি বড় অংশ জোরপূর্বক দখল করে রেখেছে পাকিস্তান। ১৩,২৯৭ বর্গকিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত এই পাক অধিকৃত কাশ্মীর’ বা ‘পিওকে’ অসামান্য সৌন্দর্যের পাশাপাশি কূটনৈতিক, সামরিক, আর্থিক ও ভৌগোলিক দিক থেকে ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। সম্প্রতি পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার পর চর্চায় উঠে এসেছে এই পাক অধিকৃত কাশ্মীর। দাবি উঠেছে, ভারতের জায়গা পুনর্দখলের।

কিন্তু কেন এই জায়গা ভারতের জন্য এত গুরুত্বপূর্ণ? কাশ্মীরের ইতিহাস অনুযায়ী, ১৯৪৭ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর নিজেদের স্বাধীন হিসেবে ঘোষণা করেন কাশ্মীরের রাজা হরি সিং। দূর্বল রাজার থেকে এই অঞ্চল ছিনিয়ে নিতে সেনা অভিযান শুরু করে পাকিস্তান। এই অবস্থায় কাশ্মীরকে বাঁচাতে ভারতের সাহায্য চান রাজা। হরি সিংয়ের সঙ্গে ভারতের সেই চুক্তির বলেই জম্মু ও কাশ্মীর ভারতের অংশ হয়। যদিও তার আগেই কাশ্মীরের অনেকটা অংশ অবৈধভাবে দখল করেছে পাকিস্তান। সেই সময় থেকে কাশ্মীরের ১৩,২৯৭ বর্গকিলোমিটার অঞ্চল পাকিস্তানের অধীনে। এই অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে গিলগিট, বালটিস্তান, মিরপুর, মুজফফরাবাদের মতো অঞ্চলগুলি। সৌন্দর্যের দিক থেকে এই সব অঞ্চল চোখ ধাঁধিয়ে দিলেও পাকিস্তানের দৌলতে সন্ত্রাসবাদের আঁতুড়ঘর হয়ে উঠেছে এইসব জায়গা। যা ভারতের জন্য বিশেষ মাথাব্যথা।

কূটনৈতিক দিক থেকে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের গুরুত্ব
শুধু সৌন্দর্য নয়, কূটনৈতিক, সামরিক, আর্থনৈতিক দিক থেকে ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পাকিস্তানের দখলে থাকা এই অঞ্চল। অধিকৃত কাশ্মীর পাকিস্তান ও চিনের সঙ্গে সীমান্তের ভাগ করে। এর একটা অংশ চিনকে লিজে দিয়ে রেখেছে পাকিস্তান। সেখান থেকে চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর বা সিপিইসি তৈরি করছে চিন। সিন্ধু নদের একটা বড় অংশ এই অঞ্চলের উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে। ভারত ও পাকিস্তানের জন্য পানীয় ও চাষের জলের অন্যতম উৎস এই নদ। এই অঞ্চল ভারতের অধীনে চলে এলে বিরাট ধাক্কা খাবে চিনের সিপিইসি। সেক্ষেত্রে পাকিস্তানের সঙ্গে চিনের আর সরাসরি সীমান্ত যোগ থাকবে না। আর্থিকভাবে কার্যত অন্ধ হয়ে যাবে শত্রু দেশ।

অধিকৃত কাশ্মীর চায় ভারতের সঙ্গে যুক্ত হতে
পাকিস্তানের অধীনের যাওয়ার পর কাশ্মীরের ওই অঞ্চল সন্ত্রাসবাদীদের জন্য হয়ে উঠেছে অবাধ বিচরণ ক্ষেত্র। লস্কর ই তইবা, হিজবুল মুজাহিদিন, জইশ ই মহম্মদ, আল কায়দা-সহ বহু জঙ্গি সংগঠনকে জল-সার দিয়ে এই অঞ্চলেই বড় করে তুলেছে পাক সেনা ও আইএসআই। ভারতের মাটিতে যাবতীয় সন্ত্রাসবাদী হামলার ব্লুপ্রিন্ট তৈরি হয়েছে এখান থেকেই। ফলে জাতীয় সুরক্ষা তো বটেই, অধিকৃত কাশ্মীরের মানুষ চান সন্ত্রাসমুক্ত হয়ে ভারতের সঙ্গে যুক্ত হতে। কারণ, গত ৭৭ বছরে জম্মু ও কাশ্মীরের যেভাবে উন্নতি হয়েছে তার ছিটেফোঁটাও পায়নি অধিকৃত কাশ্মীর। চরম দারিদ্র্য, নুন্যতম সুযোগ সুবিধার অভাব, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, রাস্তাঘাট, হাসপাতাল, কলেজ, স্কুল, বিদ্যুৎ পরিষেবাও নেই এখানকার বেশিরভাগ জায়গায়। এই পরিস্থিতিতে বারবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠতে দেখা গিয়েছে এখানকার নাগরিকদের। তাঁরা চান সুন্দর জীবন।

পর্যটনের বিরাট সুযোগ
পর্যটনের বিরাট সুযোগ থাকলেও অধিকৃত কাশ্মীরকে অন্ধকারে ডুবিয়ে রেখেছে পাক সরকার। পর্যটনের জন্য উল্লেখযোগ্য অঞ্চলগুলি হল…
গিলগিট-বাল্টিস্তান: হিমালয় এবং কারাকোরামের তুষারাবৃত পর্বতমালা দ্বারা বেষ্টিত এই অঞ্চল। যা সুন্দর হ্রদ এবং স্কার্দুর উঁচু শৃঙ্গের জন্য বিখ্যাত।
মুজাফফরাবাদ: নীলম এবং ঝিলম নদীর তীরে অবস্থিত মুজফফরাবাদ। সবুজ উপত্যকায় ঘেরা এই অঞ্চলটি পর্যটকদের কাছে স্বপ্নের জায়গা।
নীলম ভ্যালি: পাহাড়, ঘন জঙ্গল এবং স্বচ্ছ নদীর কোলে অবস্থিত এই উপত্যকাটি পাক অধিকৃত কাশ্মীরের সবচেয়ে সুন্দর জায়গাগুলির মধ্যে একটি।
মিরপুর: হ্রদ এবং ঐতিহাসিক স্থানের জন্য পরিচিত, কিন্তু সন্ত্রাস ও উন্নয়নের অভাবে পর্যটকরা এইসব জায়গায় খুব একটা যান না।
বাগ: সবুজে ঘেরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এই অঞ্চল সন্ত্রাসবাদীদের অন্যতম আস্তানা।
ঐশ্বরিক সৌন্দর্যের ভাণ্ডার থাকলেও এখানকার মানুষ শিক্ষা স্বাস্থ্য এবং কর্মসংস্থান থেকে বঞ্চিত। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এবং সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলির একছত্র আধিপত্য এই স্থানগুলিকে ভয়ংকর করে তুলেছে। এই অঞ্চল ভারতের অধীনে এলে উন্নয়ন তো বটেই, কূটনৈতিক, সামরিক ও আর্থিক দিক থেকে বিরাট লাভবান হবে ভারত।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
News Hub