সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শোকগ্রস্ত গোটা দেশ। উত্তরপ্রদেশের হাথরাসে (Hathras) ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পদপিষ্ট মৃত্যু হয়েছে ৮৭ জনের। আহত ১০০ জন। মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi), রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। আহতদের চিকিৎসার বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন যোগী। পাশাপাশি দুর্ঘটনার তদন্তে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করেছেন। তথাপি গাফিলতির অভিযোগ উঠছে। প্রথম প্রশ্ন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে না দেখে বিরাট ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অনুমতি দেওয়া হল কেন? দ্বিতীয়ত, ভিড় সামলানোর জন্য পর্যাপ্ত পুলিশ এবং স্বেচ্ছাসেবক ছিল কি?
২০২০ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর যে হাথরাসের এক দলিত কিশোরীর গণধর্ষণের ঘটনায় উত্তাল হয়েছিল গোটা দেশ। মঙ্গলবার সেই হাথরাসের ছিল আরও একটি শোকের দিন। রতিভানপুরের মুঘলাগড়ি গ্রামে ভোলেবাবা নামের এক স্বঘোষিত ধর্মগুরুর সৎসঙ্গ অনুষ্ঠান ছিল। আনুষ্ঠানিক উদ্যোক্তা- মানব মঙ্গল মিলন সদ্ভাবনা কমিটি। যেখানে মঙ্গলবার কয়েক হাজার ভক্তের জমায়েত হয়েছিল। যে ছবি এবং ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ্যে এসেছে তাতে দেখা গিয়েছে, সঙ্কীর্ণ পরিসরে গা ঘেঁষাঘেঁষি করে শয়ে শয়ে মানুষ দাঁড়িয়ে আছেন। মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পর প্রথম প্রশ্ন উঠছে, অনুষ্ঠানের অনুমোদন ছিল?
হাথরসের জেলাশাসক আশিস কুমার জানিয়েছেন, অনুমোদন দিয়েছিল মহকুমা শাসকের দপ্তর। পরের ধোঁয়াশা, বিরাট ভিড় সামলোনোর মতো পুলিশ এবং স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন ছিল কি না সমাবেশে! এর উত্তর এখনও সামনে না এলেও একটি বিষয় স্পষ্ট, অনুষ্ঠান শেষের হুড়োহুড়ি সামলাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। পর্যাপ্ত পুলিশ না থাকাতেই বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছিল। দ্রুত তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। রাজেশ কুমার নামের এক পুলিশ আধিকারিকের বক্তব্য, অতিরিক্ত ভিড়ের কারণেই পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “সৎসঙ্গে এসেছিলাম। বিরাট ভিড় ছিল। অনুষ্ঠান শেষে বেরোতে শুরু করি। বাইরে বেরোনের পথটা ছিল সঙ্কীর্ণ। হঠাৎই হুড়োহুড়ি শুরু হয়। বুঝতে পারছিলাম না কী করব। অনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছে।” অর্থাৎ অনুষ্ঠানস্থলে ঢোকা-বেরোনোর পথ সঙ্কীর্ণ হওয়ার কারণেই এতগুলো মানুষের প্রাণ গেল। নিয়ম হল আনুমানিক ভিড় বিবেচনা করে অনুষ্ঠানস্থলের প্রবেশ ও বাহির তৈরি করা হয়। তা খতিয়ে দেখে অনুমতি দেয় প্রশাসন। ভুক্তভোগীর বক্তব্যে স্পষ্ট যে নিয়ম মানেননি আয়োজকরা। যোগী তদন্ত কমিটি গঠন করলেও ধর্মীয় কাদায় পিছলে যাবে না তো দোষীরা? কে নেবে এই মৃত্যুমিছিলের দায়?
সংসদের জবাবী ভাষণ থামিয়ে হাথরাসে দুর্ঘটনায় শোকপ্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, “উত্তরপ্রদেশের হাতরাসে পদপিষ্ট হয়ে বহু মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। দুর্ঘটনায় যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন তাঁদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। সকল আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। রাজ্য সরকারের তত্ত্বাবধানে প্রশাসন উদ্ধারকাজ চালচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তারা উত্তরপ্রদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। আমি এই সংসদে মাধ্যমে সবাইকে আশ্বস্ত করছি যে ক্ষতিগ্রস্তদের সবরকম সাহায্য করা হবে।”
उत्तर प्रदेश के हाथरस जिले में हुई दुर्घटना में महिलाओं और बच्चों सहित अनेक श्रद्धालुओं की मृत्यु का समाचार हृदय विदारक है। मैं अपने परिवारजनों को खोने वाले लोगों के प्रति गहन शोक संवेदना व्यक्त करती हूं तथा घायल हुए लोगों के शीघ्र स्वस्थ होने की कामना करती हूं।
— President of India (@rashtrapatibhvn) July 2, 2024
হাথরাস দুর্ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুও। তাঁর বার্তা, “উত্তরপ্রদেশের হাথরাস জেলার দুর্ঘটনায় শিশু, মহিলা-সহ অনেক মানুষের মৃত্যুর খবর হৃদয় বিদারক। নিজের পরিবারের সদস্যদের যাঁরা হারিয়েছেন, তাঁদের প্রতি গভীর সমবেদনা ব্যক্ত করছি এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।” হাথরস দুর্ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.