সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হু হু করে নামছে পিএম কেয়ার্সের অনুদানের টাকার অঙ্ক। একটা সময়ে যেখানে এক বছরে অনুদানের টাকা জমা হয়েছিল ৭হাজার ১৮৪ কোটি, সেটাই বর্তমানে কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৯১২ কোটি। অনুমান করা হচ্ছে, হিসেব দিতে কেন্দ্রের অনড় মনোভাব ও তহবিলের অস্বচ্ছতার জেরে তহবিলে সাহায্যের আগ্রহ হারাচ্ছেন মানুষ। যার ফল, ক্রমশ কমছে সাহায্যের অঙ্ক।
২০২০-২১ সালে বিশ্বজুড়ে ভয়ংকর অতিমারির সময়ে দেশবাসীর কাছে সাহায্যের আর্জি জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেই ডাকে সাড়া দিয়েছিলেন ভারতীয়রা। দেশতো বটেই বিদেশ থেকেও পিএম কেয়ার্স ফান্ডে বিপুল অনুদান দিয়েছিলেন প্রবাসীরা। তবে সেই বিপুল টাকার হিসেব প্রকাশ্যে আনতে রাজি হয়নি সরকার। যা নিয়ে আদালতে মামলাও হয়। সুর চড়ান বিরোধীরা। অভিযোগ ওঠে, এই তহবিলে জমা টাকা রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রবল চাপের মুখে পড়ে এক ওয়েবসাইটে কার্যত বেসরকারি পদ্ধতিতে তহবিলের আয় ও ব্যয়ের হিসেব দিলেও, সেই টাকায় ক্যাগের (সিএজি) অডিটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। কেন্দ্র জানায়, এই অনুদানের তহবিল অডিটের আওতায় আসে না। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে হিসেবের স্বচ্ছতা নিয়ে। এই ঘটনায় বিরোধী শিবির সুর চড়ালেও কারা, কত টাকা অনুদান দিয়েছে তা প্রকাশ করা হয়নি। মনে করা হচ্ছে, এহেন বিতর্কের জেরেই লাফিয়ে কমতে শুরু করেছে পিএম কেয়ার্স ফান্ডের অনুদান।
সম্প্রতি যে রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে সেখানে দেখা যাচ্ছে, ২০২০-২১ অর্থবর্ষে প্রথমবার এই তহবিলে জমা পড়েছিল ৭১৮৪ কোটি টাকা। এর পর তহবিল নিয়ে বিতর্ক চরম আকার নিলে ২০২১-২২ অর্থবর্ষে অনুদানের অর্থ কমে দাঁড়ায় ১৯৩৮ কোটি টাকা। শেষ প্রকাশিত রিপোর্টে অর্থাৎ ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে টাকার অঙ্ক আরও কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৯১২ কোটি টাকা। শুধু তাই নয়, বিদেশি অনুদানও কমেছে বিরাট ভাবে। ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবর্ষে এই তহবিলে বিদেশি অনুদান ছিল ৪৯৫ কোটি টাকা। সেটা গত দুই বছরে কমে যথাক্রমে দাঁড়িয়েছে, ৪০ কোটি ও ২.৫৭ কোটি। এই রিপোর্টের কোনওটাই অবশ্য সরকারের তরফে প্রকাশ করা হয়নি। পিএম কেয়ার্সের তরফে এক ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
এই তহবিলের অডিটের অধিকার ক্যাগের না থাকলেও, কত খরচ হয়েছে তা তহবিল কমিটির তরফে প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে এই তহবিলের থেকে ৪৩৯ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। যার মধ্যে ৩৪৬ কোটি টাকা ‘পিএম কেয়ার্স ফর চিলড্রেনে’ ব্যয় হয়েছে। অর্থাৎ করোনার জেরে যে সব শিশুরা তাদের মা-বাবাকে হারিয়েছে তাদের সাহায্যের জন্য। এছাড়াগ অক্সিজেন কনসনট্রেটর কেনার জন্য খরচ হয়েছে ৯২ কোটি টাকা। ২০২১-২২ সালে তহবিল থেকে ১৯৩৮ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ সালে এই তহবিলে এখনও ৬২৮৩ কোটি টাকা রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.