Advertisement
Advertisement
Priyanka Gandhi

‘ওর মধ্যেই থাকব আমি’, সংসদে ঠাকুমা ইন্দিরার কথাই ‘সত্যি’ করলেন প্রিয়াঙ্কা?

সংসদে প্রিয়াঙ্কার প্রথম ভাষণের দিন ফিরে আসছে ইন্দিরার স্মৃতি।

'People will see me in her', once Indira Gandhi told about Priyanka Gandhi
Published by: Biswadip Dey
  • Posted:December 13, 2024 4:40 pm
  • Updated:December 13, 2024 4:43 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এই প্রথম। সংসদে প্রথম ভাষণে সকলকে মুগ্ধ করেছেন ওয়ানড়ের সাংসদ প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। শাসক-বিরোধী দুপক্ষকেই শুক্রবার দেখা গিয়েছে চুপ করে বসে মন দিয়ে তাঁর কথা শুনতে। প্রিয়াঙ্কার দৃপ্ত ভাষণ আরও একবার মনে করিয়ে দিচ্ছে তাঁর ঠাকুমা ও দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর কথা। বারবার প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে ইন্দিরার চেহারার সাদৃশ্যের কথা বলেছেন কংগ্রেস সমর্থকরা। কিন্তু স্বয়ং ইন্দিরা কী বলেছিলেন নাতনি প্রসঙ্গে? জানিয়েছিলেন, একদিন মানুষ প্রিয়াঙ্কার মধ্যেই ইন্দিরাকে খুঁজে পাবে।

২০০৪ সালে রাহুল গান্ধী রাজনীতিতে পা রাখার সময় থেকেই বহু মানুষ, বিশেষত কংগ্রেস সমর্থকদের দাবি ছিল এবার প্রিয়াঙ্কাও প্রবেশ করুন রাজনীতির আঙিনায়। আসলে ১৯৯৯ সালে মা সোনিয়ার হয়ে রায়বরেলিতে প্রথমবার প্রচার করতে আসেন প্রিয়াঙ্কা। সেই সময় আমেঠির কংগ্রেস কর্মী জগদীশ পীযূষ স্লোগান তুলেছিলেন, ”আমেঠি কি ডঙ্কা, বিটিয়া প্রিয়াঙ্কা।” কিন্তু মা বা দাদার হয়ে প্রচারে এলেও ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার আগে পর্যন্ত প্রত্যক্ষ রাজনীতি থেকে দূরেই থেকেছেন প্রিয়াঙ্কা। আসলে তাঁর দাবি ছিল, ছেলেমেয়ে ছোট। ওদের বড় না করা পর্যন্ত এসব নিয়ে তিনি ভাবতে রাজি নন। আজ প্রিয়াঙ্কার ছেলে রেহানের বয়স ২৩। মেয়ে মিরায়া ২২। আর এবছরই ওয়ানড়ের উপনির্বাচনে জিতে প্রথমবার সংসদে পা রেখেছেন ৫২ বছরের নেত্রী। শুক্রবাসরীয় দুপুরে দিলেন প্রথম ভাষণ। আর সেই মুহূর্তের পরই ফের সংসদে ইন্দিরার ‘ছায়া’ যেন দেখতে পাচ্ছেন কংগ্রেস সমর্থকরা। তাঁদের দাবি, এদিনের দৃপ্ত ভাষণে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর মধ্যে যেন ঠাকুমারই প্রতিফলন দেখা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, রাজনীতি শুরুর দিনগুলোয় ‘গুঙ্গি গুড়িয়া’র মতো খোঁচা শুনতে হয়েছিল ইন্দিরাকে। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি পরিণত হয়ে ওঠেন। হয়ে ওঠেন দাপুটে নেত্রী।

Advertisement

মৃত্যুর মাত্র কয়েকদিন আগেই প্রিয়াঙ্কা সম্পর্কে ইন্দিরা যা বলেছিলেন, সেই বক্তব্যও মনে পড়ে গিয়েছে রাজনীতি-সচেতন কংগ্রেসপ্রেমীদের। ২০১৫ সালে প্রকাশিত হয়েছিল একটি বই ‘দ্য চিনার লিভস’। লেখক মাখনলাল ফতেদার। ইন্দিরা গান্ধীর বিশ্বস্ত সঙ্গী। সেই স্মৃতিকথাতেই তিনি লিখেছেন, ১৯৮৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ইন্দিরা তাঁকে সঙ্গে নিয়ে কাশ্মীর গিয়েছিলেন। সঙ্গে ছিল খুদে নাতি-নাতনিরা। এর মাসখানেকের মধ্যেই মৃত্যু হবে ইন্দিরার। তার আগে কাশ্মীর সফরে নিজের বিশ্বস্ত সঙ্গীকে ইন্দিরা বলেছিলেন, ”ফতেদারজি, আমি হয়তো বেশিদিন বাঁচব না। কিন্তু আপনি প্রিয়াঙ্কাকে দেখবেন।” যা শুনে ফতেদার বলেন, ”আপনার মনে হয় আমি অতদিন বাঁচব?” জবাবে ইন্দিরা বলেছিলেন, ”আপনি অবশ্যই বেঁচে থাকবেন। এবং ওকে দেখতে পাবেন জাতীয় প্রেক্ষিতে ক্রমেই উজ্জ্বল হয়ে উঠতে। মানুষ ওর মধ্যেই আমাকে দেখতে পাবে। ওকে দেখলেই আমার কথা মনে পড়বে সকলের। আগামী শতাব্দী ওরই হবে। মানুষ আমাকে ভুলে যাবে।”

Tableau on India Gandhi death in Canada, sparks massive outrage

ফতেদার মারা যান ২০১৭ সালে। সাংসদ প্রিয়াঙ্কাকে দেখা হয়নি তাঁর। কিন্তু যে বই তিনি লিখে গিয়েছিলেন, সেই বইয়ের অক্ষরগুলি রয়ে গিয়েছে ভাবীকালের জন্য। শুক্রবারের দুপুর সেই কথাই নতুন করে মনে করিয়ে দিল। ইন্দিরা আজও স্মরণীয়। কিন্তু প্রিয়াঙ্কাও প্রথমদিনের ভাষণে নিজেকে চেনালেন নতুন করে। আগামিদিন সত্যিই তাঁর হয় কিনা, সেদিকে নিশ্চয়ই নজর রাখবে ওয়াকিবহাল মহল। আপাতত হারানো অতীতকে সংসদে বর্তমান করে তুললেন প্রিয়াঙ্কা, এই কথাটুকু অন্তত বলাই যায়।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement