গ্রাফিক্স: সুলগ্না ঘোষ
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহারাষ্ট্রে জয়জয়কার মহাজুটির। বিজেপি ও এনসিপির অজিত পওয়ার শিবিরের পাশাপাশি শিব সেনার একনাথ শিণ্ডে শিবিরও দুর্দান্ত ফল করছে। এখনও পর্যন্ত তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ৮১টি আসনের মধ্যে ৫৫টিতেই এগিয়ে শিণ্ডে সেনা। আর এই ফলাফল যেন এক দীর্ঘ লড়াইয়ের সমাপ্তি ঘোষণা করল। ‘আসল’ শিব সেনা তথা বালাসাহেবের উত্তরসূরি কে এই নিয়ে যে বিতর্ক তাতে কার্যতই জল ঢেলে দিয়েছেন একনাথ। টেক্কা দিয়েছেন উদ্ধব ঠাকরেকে।
মাত্র কয়েক মাস আগের লোকসভা নির্বাচনে মহা বিকাশ আঘাড়ি কিন্তু ভালোই বেগ দিয়েছিল মহাজুটিকে। আর উদ্ধব শিবির বলতে শুরু করেছিল তারাই যে ‘আসল’ সেনা তা এবার প্রমাণিত। যদিও মোট ফলাফলকে সরিয়ে রেখে যদি কেবল শিণ্ডে বনাম উদ্ধব লড়াইয়ে ফোকাস করা যায়, তাহলে ব্যাপারটা অন্যরকম মনে হবে। কেননা ১৫টি আসনে লড়াই করে ৭টিতেই জয় ছিনিয়ে নিয়েছিল শিণ্ডে শিবির। অন্যদিকে উদ্ধবের সেনা ২১ আসনে লড়ে জয় পেয়েছিল মাত্র ৯টিতে। সেই হিসেবে ‘স্ট্রাইক রেট’ বেশি ছিল একনাথ শিণ্ডেরই। তবু সামগ্রিক ফলাফলে মহা বিকাশ আঘাড়ি এগিয়ে থাকায় উদ্ধবই শেষ হাসি হেসেছিলেন।
কিন্তু এবার হিসেবটা অন্যরকম। মহাজুটি সামগ্রিক ভাবেই টেক্কা দিয়েছে উদ্ধব-শরদ-হাত জুটিকে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মহারাষ্ট্রে যেখানে শিণ্ডে ৮১টির মধ্যে ৫৫টিতে এগিয়ে, সেখানে উদ্ধব ৯৫টি আসনে লড়েও টিমটিম করে মাত্র ২০টি আসনে এগিয়ে।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এই পরিস্থিতিতে প্রকৃত শিব সেনার ব্যাটনটা রয়ে গেল একনাথ শিণ্ডের হাতেই। লোকসভা নির্বাচনের আগেই নির্বাচন কমিশন শিব সেনার লোগো ও নামের উত্তরাধিকার তাঁকেই দিয়েছিল। এবার জনাদেশও সেদিকেই নির্দেশ করছে। মনে রাখতে হবে, বালাসাহেব ঠাকরে একদা ‘মারাঠি মানুস’ তথা ‘মারাঠা অস্মিতা’ নিয়ে লড়াই করতেই রাজনীতিতে পা রেখেছিলেন। পরে সেই লড়াই মুম্বই থেকে গোটা মহারাষ্ট্রে ছড়িয়ে পড়েছিল। বালাসাহেবের বিপুল জনপ্রিয়তার আসল কারণ ছিল এটাই। গত শতকের নয়ের দশকের গোড়ায় এর সঙ্গে যোগ হয় হিন্দুত্বও। কিন্তু উদ্ধব ঠাকরে মহা বিকাশ আঘাড়িতে চলে যাওয়ার সময় সেই হিন্দুত্বের সঙ্গেই যেন আপস করে ফেলেন। বাকি ছিল ‘মারাঠি মানুস’। মনে করা হচ্ছিল, সেটা অন্তত উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে থাকবে। অন্তত গত লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের পর এমন এক ধারণা জোরালো হচ্ছিল। কিন্তু শনিবার গণনা শুরু হতেই দেখা যাচ্ছে, শেষপর্যন্ত শিব সেনার সেনাপতি যে এখন একনাথ শিণ্ডেই, সেই বিতর্কের সমাধি হল আরবসাগরে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.