সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে দায়ের মামলার প্রথম দিনের শুনানি শেষ হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। প্রথম দিনের শুনানিতে বারবার উঠে এসেছে সংবিধানের ২৬ ধারার কথা। জমিয়ত উলেমা-ই-হিন্দ পক্ষের আইনজীবী কপিল সিব্বল অভিযোগ করেছেন, নয়া ওয়াকফ আইন সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৬কে লঙ্ঘন করছে। যা যে কোনও সম্প্রদায়ের মানুষকে কারও ক্ষতি না করে স্বাধীনভাবে ধর্মাচারণের অধিকার দেয়। এই ইস্যুতেই সরগরম হয়ে ওঠে সুপ্রিম কোর্ট।
এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক সংবিধানের ২৬ ধারায় ঠিক কী বলা রয়েছে:
১. প্রতিটি ধর্মীয় সম্প্রদায় ধর্ম ও দানের বিষয়ে যে কোনও সংস্থা স্থাপনের এবং রক্ষণাবেক্ষণের অধিকারী।
২. ধর্ম বিষয়ে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠাগুলি নিজ নিজ ধর্মীয় রীতিনীতি পালন করার অধিকারী।
৩. ধর্মীয় ও দাতব্য উদ্দেশ্যে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি গ্রহণ এবং মালিকানা অর্জনের অধিকার রয়েছে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠাগুলির।
৪. এই সব সম্পত্তি পরিচালনার অধিকার রয়েছে ধর্মীয় সংগঠনগুলির।
তবে একইসঙ্গে বলা হয়েছে, নিজ নিজ ধর্মীয় রীতি পালনের সময় কোনওভাবেই উৎশৃঙ্খলতা, নৈতিকতা বা কারও জীবন বা স্বাস্থ্যের হানি ঘটানো যাবে না।
সংবিধানের এই ধারাকে হাতিয়ার করেই ওয়াকফ আইনের বিরোধিতায় কপিল সিব্বল জানান, ‘নয়া আইনে স্বাধীনভাবে ধর্মাচারণের অধিকারগুলির উপর সরাসরি হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। অনুচ্ছেদ ২৬ সম্পূর্ণভাবে লঙ্ঘন করছে ওয়াকফ আইন।’ যুক্তি দিয়ে তিনি আরও বলেন, “আমার ধর্মে উত্তরাধিকার কে হবে তা ঠিক করে দেওয়ার রাষ্ট্র কে?” পাশাপাশি জানান, “ইসলামে উত্তারাধিকার কেবল মৃত্যুর পরেই ঘটে।” যদিও সিব্বলের যুক্তি খারিজ করে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না বলেন, “অনুচ্ছেদ ২৬ মুসলমানদের জন্য আইন প্রণয়নে বাধা দেয় না। কারণ এটি ধর্মনিরপেক্ষ আইন। হিন্দুদের ক্ষেত্রেও এটা ঘটে। কিন্তু সরকার এখানে মুসলিমদের জন্য আইন প্রণয়ন করেছে। এটা হয়তো হিন্দুদের মতো নয়, তবে অনুচ্ছেদ ২৬ এক্ষেত্রে আইন প্রণয়নে বাধা দেবে না।”
পাশাপাশি সিব্বল ওয়াকফ আইনের বিরোধিতায় বলেন, “ওয়াকফ বোর্ড গঠিত হওয়ার পর থেকেই এই বোর্ডের অংশ ছিল মুসলিমরা। কিন্তু নতুন আইন সেখানে হিন্দুদের জন্য দরজা খুলে দিচ্ছে। যা মৌলিক অধিকারকে সরাসরি খর্ব করছে। নয়া আইনে ওয়াকফ কাউন্সিল ও বোর্ডগুলিতে হিন্দুদের অন্তর্ভুক্তি সরাসরি মুসলিমদের মৌলিক অধিকারকে খর্ব করছে।” তবে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের সদস্য কেভি বিশ্বনাথন বলেন, “২৬-এ ধর্মীয় সংগঠন পরিচালনার যে অধিকার দেওয়া হয়েছে, তার সঙ্গে কোনও ধর্মীয় রীতিনীতিকে গুলিয়ে ফেলা কোনওভাবেই কাম্য নয়।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.