নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার দাবি জানিয়েছেন, ‘জাতীয় মেলা’র স্বীকৃতি দেওয়া হোক তীর্থক্ষেত্র গঙ্গাসাগরকে। তবে জাতীয় মেলাতো দূর, ঐতিহ্যবাহী গঙ্গাসাগর মেলাকে হেরিটেজ তকমা দিতেও নারাজ কেন্দ্র সরকার। সোমবার তৃণমূল সাংসদ মালা রায়ের প্রশ্নের জবাবে সেটাই স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রী।
গঙ্গাসাগর মেলাকে হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণা করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কী কোনও পরিকল্পনা রয়েছে? সোমবার লোকসভা অধিবেশনে এই কেন্দ্রের কাছে এই প্রশ্ন রেখেছিলেন দক্ষিণ কলকাতার তৃণমূল সাংসদ মালা রায়। লিখিত প্রশ্নে তিনি জানতে চান, যদি কেন্দ্রীয় সরকার এমন কোনও পরিকল্পনা করে থাকে তবে তা বিশদে জানাক। যদি হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণার কোনও পরিকল্পনা না থাকে তবে কেন এই তকমা দেওয়া হবে সেটাও বিশদে জানানো হোক।
এর উত্তরে কেন্দ্রীয় পর্যটনমন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত জানান, ‘আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া’র আইন অনুযায়ী জরিপের মাধ্যমে সরকার কোনও প্রাচীন স্মৃতিস্তম্ভ বা প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানকে হেরিটেজ তকমা দেয়। এই তকমা পাওয়ার ক্ষেত্রে মূল শর্ত হল ওই স্থান না স্তম্ভের ঐতিহাসিক গুরুত্ব। সেই হিসেবে গঙ্গাসাগর মেলাকে হেরিটেজ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করার কোনও প্রস্তাব নেই। কেন্দ্রের স্পষ্ট বার্তা, AMASR অ্যাক্ট ১৯৫৮-এর ৪ (৩) ধারায় অধীনে আসে না এই গঙ্গাসাগর মেলা। পর্যটনমন্ত্রীর এই বার্তায় স্পষ্ট যে, ‘জাতীয় মেলা’র স্বীকৃতি তো দূর, ঐতিহ্যবাহী গঙ্গাসাগর মেলাকে হেরিটেজ তকমা দিতেও নারাজ মোদি সরকার।
প্রসঙ্গত, কুম্ভমেলার সঙ্গে তুলনা করে এর আগে একাধিক বার গঙ্গাসাগরকে জাতীয় মেলা ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিষয়টি নিয়ে সংসদে সরব হয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদেরাও। অভিযোগ তোলা হয়, কেন্দ্রের বৈমাতৃসুলভ আচরণের জেরেই উপেক্ষিত গঙ্গাসাগর। অথচ প্রতিবছর এই মেলায় ভিড় জমান লক্ষ লক্ষ সাধু-সন্ত ও ভক্তরা। গঙ্গাসাগর মেলার পৌরাণিক, ঐতিহাসিক এবং প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই। তারপরও কেন্দ্রের এই বঞ্চনা আসলে বাংলার প্রতি বঞ্চনার এক জ্বলন্ত উদাহরণ বলে অভিযোগ তুলছে তৃণমূল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.