ফাইল ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: খাতায়-কলমে ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ অবৈধ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তবে তা ওই খাতায় আর কলমেই। আইনকে ‘বুড়ো আঙুল’ দেখিয়ে হরিয়ানার নামি-বেনামি স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে রমরমিয়ে চলছিল এই ব্যবসা। বেলাগাম লিঙ্গ নির্ধারণ ও কন্যাভ্রূণ হত্যার ঘটনা সামনে আসার পর অবশেষে বিজেপি শাসিত হরিয়ানায় নড়েচড়ে বসল সরকার। গোটা ঘটনার তদন্তে টাস্কফোর্স গঠন করার পাশাপাশি ৩০০টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে।
দেশের নারী ক্ষমতায়নকে নজরে রেখে ২০১৫ সালে এই হরিয়ানার পানিপথে বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও প্রকল্প চালু করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে প্রতি বছরই দেখা যাচ্ছিল এই রাজ্যে ছেলের তুলনায় মেয়েদের জন্মহার ব্যাপকভাবে কমছে। ২০১৯ সালে ১০০০ জন ছেলের তুলনায় মেয়ের জন্ম হার ছিল ৯২৩ জন। ২০২৪ সালে তা আরও কমে দাঁড়ায় ৯১০। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের তদন্তে উঠে আসে কীভাবে এই রাজ্যে পুত্র সন্তানের আকাঙ্ক্ষায় বেলাগাম কন্যাভ্রূণ হত্যার ঘটনা ঘটছে। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তৎপর হয় প্রশাসন।
ডাঃ বীরেন্দ্র যাদব বলে, বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর ইতিমধ্যেই ২৩ টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বিরুদ্ধে নোটিস জারি করা হয়েছে। এই কেন্দ্রগুলিতেই গর্ভপাত করানো হত। পাশাপাশি ভ্রূণ নির্ধারক এমটিপি কিট অনলাইনে বিক্রি করে এমন ১৭টি বিক্রেতার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। গোটা ঘটনার তদন্তে টাস্ক ফোর্স গঠন করে তদন্ত শুরু হয়েছে। ১২ টি কমিউনিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাশাপাশি হিসার জেলার নোডাল অফিসারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। নোটিস জারি করা হয়েছে একাধিক স্বাস্থ্য আধিকারিককে। রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ লিঙ্গ অনুপাত রয়েছে এমন তিনটি কমিউনিটি হেলথ সেন্টারের শীর্ষ আধিকারিকের বিরুদ্ধে চার্জসিট দাখিল করা হয়েছে। পাশাপাশি ৫টি জেলার পিএনডিটি নোডাল অফিসারদের বদলি করা হয়েছে। পাশাপাশি বহু আইভিএফ এবং আল্ট্রাসাউন্ড কেন্দ্রগুলি তদন্তের আওতায় রয়েছে। কোনও অভিযোগ সামনে এলেই তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। মামলা দায়ের হয়েছে অবৈধ গর্ভপাতের সাথে জড়িত এজেন্টদের বিরুদ্ধে।
সংবাদমাধ্যমের অন্তরতদন্তে জানা গিয়েছে, দুই কন্যার মা পূজা তৃতীয়বার গর্ভবতী হওয়ায় তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা গর্ভস্থসন্তানের লিঙ্গ নির্ধারণ করেন এবং গর্ভপাতের জন্য চাপ দেন। এই অবস্থায় পূজা শ্বশুরবাড়ি থেকে নিজের বাপের বাড়ি চলে এসে ওই সন্তানের জন্ম দেয়। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর লিঙ্গ নির্ধারনকারী অভিযুক্ত চিকিৎসক-সহ গোটা চক্রের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে প্রশাসন। অন্যদিকে, লিঙ্গ নির্ধারণ ও গর্ভপাত আটকাতে আশা কর্মীদের সাহায্যে সচেতনতামূলক প্রচার শুরু হয়েছে। একাধিক কন্যা সন্তান রয়েছে এমন গর্ভবতী মহিলাদের তদারকি করার জন্য আশা কর্মীদের নিযুক্ত করা হচ্ছে। এবং কন্যা সন্তানের জন্মের পর সেই মাকে ১,০০০ টাকা উপহার দিচ্ছে সরকার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.