সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হরিয়ানায় এক্সিট পোল উলটে গিয়েছে। কংগ্রেসকে পিছনে ফেলে সেখানে টানা তৃতীয়বার সরকার গড়তে চলেছে বিজেপি। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৪৭ আসনে এগিয়ে গেরুয়া শিবির। অন্যদিকে কংগ্রেস এগিয়ে ৩৭ আসনে। রাহুল গান্ধীর দল ২০১৯-এর তুলনায় ভালো ফল করলেও ক্ষমতা দখলে ব্যর্থ! যদিও প্রাথমিক প্রবণতায় কংগ্রেসই এগিয়েছিল। ২৪ আকবর রোডে এআইসিসির সদর দপ্তরের সামনে কংগ্রেসকর্মীদের উচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছিল। লাড্ডু বিতরণ, রাহুল গান্ধীর ছবিতে জিলিপি চড়ানো, ঢাক-ঢোলের আওয়াজে তখন পুরোদস্তুর বিজয়োৎসবের মেজাজ। যদিও বেলা বাড়তেই খেলা ঘুরে যায়। কেন? বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এই পাঁচ কারণেই হরিয়ানায় হার মানল কংগ্রেস।
কংগ্রেসের অন্তর্দ্বন্দ্ব: ২০১৯ সালে হরিয়ানা বিধানসভার ৩১ আসন জিতেছিল কংগ্রেস। যদি দিনের শেষে দেখা যায় সমসংখ্যক আসন জিতেছে ওই দল, তার অর্থ দাঁড়াবে—জাঠ রাজ্যে কংগ্রেসের গ্রহণযোগ্যতা এখনও বিজেপির তুলনায় কম। আসন সংখ্যা বাড়লেও গদি পেতে মরিয়া দলের নেতাদের কোন্দল প্রকাশ্যে চলে এসেছিল ভোটের আগেই। মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন তা নিয়ে ‘মারামারি’ শুরু হয়। বর্ষীয়ান নেতা ভূপিন্দর সিং হুডার পাশপাশি গদির দাবি জানান প্রবীন কংগ্রেস নেতা কুমারি সেলজা। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সমর্থন থাকায় সুবিধা পান হুডা। প্রার্থীতালিকা থেকে জোট রাজনীতি, সবটাই ছিল তাঁর হাতে। যা নিয়ে দলের মধ্যে উষ্মা প্রকাশ করেন সেলজা। সব মিলিয়ে কংগ্রেসই কংগ্রেসের অন্যতম প্রতিপক্ষ হয়ে ওঠে।
আঞ্চলিক দলগুলি এবং নির্দল প্রার্থীরা: মঙ্গলবার সকালে দেখা গিয়েছিল ভোটের শতাংশ হিসেবে কিছুটা এগিয়ে কংগ্রেস। যদিও সিট দখলের ক্ষেত্রে হার মানতে হয় রাহুল গান্ধীর দলকে। যেখানে কংগ্রেস কিছুটা এগিয়ে যায় সেখানেও ভোটের মার্জিন ছিল কম। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিজেপির জয়ের পিছনে বড় ভূমিকা নিয়েছে আঞ্চলিক ছোট দল এবং নির্দল প্রার্থীরা। বহু বিধানসভা কেন্দ্রে কংগ্রেসের ভোট কেটেছে তারা। যদিও ভালো ফল করতে পারেনি আঞ্চলিক দলগুলিও। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত INLD এবং BSP একটি করে আসনে এগিয়ে। পাঁচটি আসনে এগিয়ে নির্দল প্রার্থীরা।
জাঠ বিরোধী শক্তি: বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ভূপিন্দর হুডা। মূলত জাঠ ভোটে নজর ছিল। এখানেই বাজিমাত করেছে বিজেপি, জাঠ বিরোধী ভোট পড়েছে গেরুয়া শিবিরের ঝুলিতে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কংগ্রেস জাঠ ভোট একত্র করতে সক্ষম হলেও অন্য সম্প্রদায়গুলির ভোটাররা শাসক দলকেই ভোট দিয়েছেন।
বিজেপির শক্তিশালী সংগঠন: হরিয়ানায় নির্বাচনী ময়দানে দুই দলই তেড়েফুড়ে নামলেও সাংগঠনিক কাজে এগিয়ে ছিল বিজেপি। রাজ্যজুড়ে জনসভার দায়িত্ব ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। সাফল্যের সঙ্গে সেই দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। অন্যদিকে খোদ কংগ্রেস মুখপাত্র অজয় কুমার স্বীকার করেন, জনসমর্থনকে ভোটে পরিণত করা যায়নি।
শহর এলাকায় বিজেপির দাপট: গুরুগ্রাম এবং ফরিদাবাদের মতো শহর এলাকায় বিজেপির জনসমর্থন ছিল বেশি। গ্রাম দিয়ে শহর ঘিরতে চেয়েছিল কংগ্রেস, যেহেতু আপাতভাবে গ্রামীণ এলাকায় সমর্থন পাচ্ছিল বিরোধী দল। যদিও শেষ পর্যন্ত সেই সমর্থনকেও ভোটবক্সে টেনে আনতে পারল না কংগ্রেস। ফলস্বরূপ হরিয়ানায় ভরাডুবি কংগ্রেসের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.