সুদীপ রায়চৌধুরী: নির্বাচনী প্রচারে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) উদ্দেশে ‘কুভাষণ’ দিয়ে এবার নির্বাচন কমিশনের কোপে পড়লেন বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। সোমবার তাঁকে কার্যত তুলোধোনা করল নির্বাচন কমিশন (ECI)। স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে, দিলীপ ঘোষ যে ভাষায় কথা বলেছেন, তা নিম্ন রুচির ব্যক্তিগত আক্রমণ। সমাজে একজন মহিলা সর্বোচ্চ শ্রদ্ধার জায়গায় থাকেন। তাঁর উদ্দেশে এমন ভাষা ব্যবহার একেবারেই আদর্শ আচরণবিধি ভঙ্গ। কমিশন এর তীব্র নিন্দা করে। দিলীপ ঘোষের উদ্দেশে সর্বোচ্চ সতর্কবার্তা দিয়ে কমিশন জানিয়েছে, পরবর্তীতে কালে প্রকাশ্যে কথা বলতে হলে খুব সাবধান হতে হবে তাঁকে। এদিন ৪ পাতার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে কমিশন। আদর্শ আচরণবিধিগুলি (Model Code of Conduct) স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করে দিলীপ ঘোষকে ছত্রে ছত্রে আক্রমণ করা হয়েছে। এই চিঠি বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডাকেও (JP Nadda) পাঠানো হয়েছে।
চব্বিশের ভোটে (2024 Lok Sabha Election) মেদিনীপুর নয়, বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্র থেকে দিলীপ ঘোষকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। গত মঙ্গলবার সেখানে ভোটপ্রচারে বেরিয়ে রাজ্যের মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর নামে অশালীন ভাষা প্রয়োগ করেন তিনি। বলেন, ”উনি গোয়ায় গিয়ে বলেন, ‘আমি গোয়ার মেয়ে’। ত্রিপুরায় গিয়ে বলেন, আমি ‘ত্রিপুরার মেয়ে’। আরে বাপ তো আগে ঠিক করুন। যার তার মেয়ে হওয়া ঠিক নয়।” তাঁর এই মন্তব্যে স্বভাবতই তৃণমূলের অন্দরে ক্ষোভ জমতে বেশি সময় নেয়নি। এনিয়ে দ্রুত নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয় তৃণমূল। দিলীপ ঘোষকে শোকজ করা হয়। তিনি তার জবাবও দেন।
সেই জবাব খতিয়ে দেখে সোমবার নির্বাচন কমিশন চারপাতার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। তাতে কীভাবে দিলীপ ঘোষ আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন, তা ব্যাখ্যা করেছে কমিশন। প্রচার চলাকালীন তাঁকে বার বার কথা বলার বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে কমিশনের তরফে। জনসভা বা প্রকাশ্যে বক্তব্য রাখার ক্ষেত্রে ভাষা ব্যবহারে সংযত হতে হবে বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি প্রার্থীকে।
সোমবার কাঁকসায় প্রচারের সময়ে এই চিঠি প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ জানান, “আমি এই কথা বলেছি। আগামী দিনে ভাষা যাতে ঠিক হয় সেদিকে সতর্ক থাকব।” তবে কমিশনের সতর্কতায় তিনি লজ্জিত নন বলে জানান। তাঁর কথায়, “লজ্জিত নই। পশ্চিমবঙ্গে যে ধরনের রাজনীতি চলে তা নির্বাচন কমিশন হয়তো মেনে নেবে না। মুখ্যমন্ত্রীকেও একবার ব্যান করেছিল নির্বাচন কমিশন। পশ্চিমবঙ্গে তর্ক-বিতর্ক চলতেই থাকে। তবে সবাইকেই সতর্ক থাকা উচিত যাতে রাজনৈতিক উত্তাপ না বাড়ে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.