সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চাকরি মাত্র দুটি। তাও আবার ইন্টার্নশিপ। তাতে আবেদনকারীর সংখ্যা ১২০০ জন। নিজের সংস্থার ভারতীয় শাখায় চাকরি প্রার্থীর এমন ভিড় দেখে রীতিমতো উদ্বেগ প্রকাশ করলেন আনম্যানড ডায়নামিক্সের সিইও তথা বিজ্ঞানী শ্রীনাথ মল্লিকার্জুন। ভারতের বিপুল জনসংখ্যার চাপ ও বেকারত্ব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি লিখলেন, জনসংখ্যার চাপে বিপর্যয়ের পথে এগিয়ে চলেছে ভারত। দেশের শিক্ষাব্যবস্থার বেহাল অবস্থা নিয়ে মুখ খুললেন শ্রীনাথ মল্লিকার্জুন।
সোশাল মিডিয়ায় এ বিষয়ে মল্লিকার্জুন লেখেন, ‘আমি মনে করি ভারতে কর্মসংস্থান ও যোগ্য কর্মীর অভাব বেকারত্বকে গুরুতর জায়গায় নিয়ে গিয়েছে। দেশের প্রথম সারির সংবাদমাধ্যমগুলি এ বিষয়ে কথা বলতে ভয় পায়। আমাদের সংস্থার ভারতীয় শাখায় দুজন ইন্টার্নের পদ খালি ছিল। সেই পদে আবেদন জানিয়েছিলেন ১২০০ জন। এদের মধ্যে আমরা ২০ জনকে শেষ ধাপের পরীক্ষার জন্য বেছে নিয়েছি।’ বিষয়টি অত্যন্ত গুরুতর তা উল্লেখ করে সোশাল মিডিয়ায় ভারতের শিক্ষাব্যবস্থার পরিকাঠামোগত পাঁচটি ত্রুটি তুলে ধরেছেন মল্লিকার্জুন। যেগুলি হল…
১. বেশিরভাগ আইআইটি শিক্ষার্থীরা জেইই পাস করার পর পড়াশোনা বন্ধ করে দেয়। যার ফলে তারা বাস্তব জগতে চাকরির জন্য অযোগ্য হয়ে পড়ে।
২. বেসরকারি কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলি উপযুক্ত শিক্ষা প্রদানে ব্যর্থ।
৩. বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্নাতকরা প্রকৃত জ্ঞান অর্জন না করেই ডিগ্রি অর্জন করে।
৪. খারাপ সিলেবাস, ভিত্তিহীন পরীক্ষা ও অযোগ্য শিক্ষক শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের জন্য এক বিরাট সমস্যার কারণ।
৫. যার ফলে, লক্ষ লক্ষ স্নাতক কল সেন্টার, ব্যাক অফিস ও কেরানির চাকরির জন্য উপযুক্ত। ভবিষ্যতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দৌলতে লোপ পেতে চলেছে এই চাকরিগুলি।
দেশের ঘুনধরা শিক্ষা ব্যবস্থার এমনই বেহাল ছবি তুলে ধরে মল্লিকার্জুন লিখেছেন, কোন দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি অত্যন্ত লাভজনক একটি দিক, তবে ভারতের ক্ষেত্রে এটা বিপর্যয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জন্য তাঁর পরামর্শ, শুধুমাত্র টেক্সটবই নয়, এই সংক্রান্ত ভালো বিদেশি বই পড়া উচিত। বুদ্ধিহীনের মতো প্রথাগত শিক্ষার বাইরে বেরিয়ে এবং হাতে-কলমে শেখার উপর জোর দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
মল্লিকার্জুনের এই পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় বহু মানুষের নজর কেড়ে নিয়েছে। অনেকেই সেখানে কমেন্টে লিখেছেন, অবিলম্বে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার মান উন্নয়ন দরকার। কারণ বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা শুধুমাত্র সার্টিফিকেটকে গুরুত্ব দিচ্ছে, শেখাকে নয়। অনেকে আবার বেকারত্বের সমস্যা সমাধানে ব্যবসা বা স্টার্ট আপকে বিকল্প হিসেবে তুলে ধরেছেন। তেমনই এক পোস্টে মল্লিকার্জুন পাল্টা লিখেছেন, শিক্ষা ব্যবস্থার মানোন্নয়ন না করে স্টার্ট আপকে গুরুত্ব দেওয়া অনেকটা ক্যান্সার রোগে প্যারাসিটামল খাওয়ার মত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.