Advertisement
Advertisement

Breaking News

Education

মোটা টাকার টিউশনেও অধরা মনের মতো রেজাল্ট! বাড়ছে আত্মহত্যার প্রবণতা

বিষবৃক্ষ রোপণের ফল ভুগছে পরবর্তী প্রজন্ম।

Education: High tuition fees lead to unpredictable results, Extreme disappointment is increasing
Published by: Biswadip Dey
  • Posted:March 21, 2025 3:44 pm
  • Updated:March 21, 2025 3:44 pm  

সন্তানের সাফল্যের কথা ভেবে অভিভাবকরা ‘কোচিং সেন্টার’-এর নামে খোঁয়াড়ে ভরে দিচ্ছেন সন্তানদের। খরচ করছেন লাখো-লাখো টাকা। এতে চাপ বাড়ছে সন্তানদের উপর। কাঙিক্ষত সাফল্য না-পেলেই তাদের মানসিক হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে।

সময়ের সঙ্গে-সঙ্গে স্কুল-কলেজের শিক্ষাব্যবস্থায় অনেক বদল এসেছে। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের রমরমা। স্কুলে ভর্তি থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত বর্তমান প্রজন্মের পড়য়ারা আদ্যোপান্ত কোচিং-নির্ভর। পেশাগত নানা কোর্সে ভর্তির জন্যও ব্যাঙের ছাতার মতো কোচিং সেন্টার গজিয়ে উঠেছে দেশে। তাদের সবগুলিই যে যথোপযুক্ত- এমনটা নয়। কিন্তু সন্তানের সাফল্যের কথা ভেবে অভিভাবকরা ‘কোচিং সেন্টার’-এর নামে খোঁয়াড়ে ভরে দিচ্ছেন সন্তানদের। খরচ করছেন লাখো-লাখো টাকা। এতে চাপ বাড়ছে সন্তানদের উপর। আবার কাঙিক্ষত সাফল্য না-পেলেই তাদের মানসিক হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে।

Advertisement

কখনও আত্মীয়-পরিবার, কখনও বন্ধুমহল বা কোচিং সেন্টারে। নিট ফল, চাপ সহ্য করতে না-পেরে গত কয়েক বছরে অসংখ্য পড়ুয়ার আত্মহত্যা। যে বিষবৃক্ষ আমরা রোপণ করেছি, তার ফল ভুগছে পরবর্তী প্রজন্ম। তাই কোচিং সেন্টারের বাড়বাড়ন্ত নিয়ন্ত্রণ, সেখানে নিরাপদ ও সহায়ক পড়াশোনার পরিবেশ তৈরি করতে রাজস্থান সরকার বিধানসভায় বিল আনতে চলেছে। হয়তো অন্য রাজ্যও ভবিষ্যতে সেই ব্যবস্থা অনুসরণ করবে।

বর্তমানে পড়ুয়ারা স্কুলে না-গিয়ে ক্লাসরুমের বাইরের কোচিংয়ে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে। ইন্টারনেটের দৌলতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেক পড়ুয়া অনলাইন কোচিংয়ে লেখাপড়ার সুযোগ পায়। তাই স্কুলের থেকেও বাইরের অনলাইন কোচিং ক্লাস তাদের কাছে আরও বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। এর দায় কিছুতেই বাবা-মা এড়াতে পারেন না। কোচিং সেন্টারকেই মুশকিল আসান ভেবে উলটে বাবা-মা নিজের সন্তানের ক্ষতি করছেন। স্কুলে না পাঠিয়ে কোচিংয়ে পড়ানো তাঁদের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। ভুলে যাচ্ছেন, স্কুলের পড়াশুনা কতখানি উপযোগী।

২০২০-‘২১ অর্থবর্ষে ‘জাতীয় শিক্ষানীতি’ চালু হওয়ার বছরে কোচিং সেন্টারগুলির ব্যবসা ছিল ১২,৩০৭ কোটি টাকার, ৪ বছরে তা বেড়ে হয়েছে ৩০,৬৫৩ কোটি টাকা। অন্যদিকে, গত অর্থবর্ষে কেন্দ্রীয় বাজেটে উচ্চশিক্ষা খাতে বরাদ্দ অর্থ ৪৭,৬২০ কোটি! অর্থাৎ কোচিং সেন্টারে পড়ুয়ারা ব্যয় করছেন বাজেট বরাদ্দের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশের সমান অর্থ! এমন চলতে থাকলে স্কুল-কলেজ সব তুলে দিতে হবে। সরকারের মনোভাবও কিছুটা সেরকম। দায় এড়ানোর চেষ্টা নতুন নয়।

এই সর্বগ্রাসী বিপদের দায় বাবা-মা থেকে সরকার, প্রত্যেকের। কারণ, স্কুলের পরিবেশ ও পড়াশোনার মানের সার্বিক উন্নয়ন না-ঘটলে কোচিং সেন্টারের রমরমা বন্ধ হওয়া অসম্ভব। এদিকে, শিক্ষা-ব্যবসায়ীদের হাতে তামাক না-খেলে চলবে না রাজনীতির কারবারিদের। তাদের আঁতাঁত ও লেনদেনের জাঁতাকলেই রোজ পিষ্ট হচ্ছে অসংখ্য পড়ুয়ার ভবিষ্যৎ। কিন্তু এই চক্রব্যূহ থেকে বেরনোর উপায় এখনও অধরা। অসহায় শিক্ষার্থীদের যন্ত্রণা সহ্য করা ছাড়া কোনও গত্যন্তর নেই।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement