প্রতীকী ছবি
অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্তর একাধিক মডেল রয়েছে। আছে ভিন্ন ভিন্ন কারণ। সেগুলি কি খেলা বা রাজনীতিতে প্রযোজ্য?
তিনটি ‘মডেল’ বা ‘সূচক’ আছে, যা একজন মানুষের ‘রিটায়ারমেন্ট ডিসিশন’ অথবা অবসরকালীন সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করে। প্রথমে আসবে সেই মডেল, যার মধ্যমণি ‘প্রিকমিটেড ইন্ডিভিজুয়াল’, মানে, যারা আগে থেকেই তাক করে রাখে– কখন তারা অবসর নেবে। সেই মতো পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। দ্বিতীয় স্থানে আসবে ‘নাইভ ইন্ডিভিজুয়াল’, মানে, যারা অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত হঠাৎ করে নেয়, কিন্তু ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আবার মত বদলে দেয়। অর্থাৎ পরিস্থিতির উপরে এদের হাত প্রায় নেই বলা চলে। তৃতীয় হল ‘সফিস্টিকেটেড ইন্ডিভিজুয়াল’, মানে, যারা অবসরের সিদ্ধান্ত মন দিয়ে ভাবে, কিন্তু এ-ও ভুলে যায় না যে, দরকার পড়লে তারা এই মত পরিবর্তন করতে পারবে। আর, এই তিনটি মডেলের নেপথ্যে চালচিত্রের মতো পরিপ্রেক্ষিত রচনা করে দু’টি বিষয়– আর্থিক স্থিতাবস্থা, এবং বয়সের ক্রমাগত বেড়ে চলা। ২০২১ সালে, ‘ইনশিওরেন্স: ম্যাথামেটিক্স অ্যান্ড ইকোনমিক্স’ পত্রিকার শতবর্ষ সংখ্যায় তিনজন গবেষক এই মত জ্ঞাপন করেছিলেন।
তিনটি মডেলের চরিত্র আলাদা। তবে এর মধ্যে একটি বিষয় স্থির, তা হল, অবসর গ্রহণ। কাজে যোগ দেওয়া যেমন জীবনের অংশ, তেমনই কাজ থেকে অবসর নেওয়াও জীবনের অংশ। অবসর নেওয়ার একটি ধার্য সময়সীমাও আছে। জীবনে জলবিভাজিকার ভূমিকা পালন করে অবসর। অবসরের আগের জীবন ও পরের জীবনে তাই গুণগত পার্থক্য তৈরি হয়। আবার এ-ও ঠিক, কিছু পেশায় অবসর নেওয়ার বয়স নির্দিষ্ট নয়। তা ব্যক্তিমানুষের শরীর ও মানসিক সক্রিয়তা, আর মেজাজমর্জির উপর নির্ভর করে। সেই কারণে এ-ধরনের পেশার প্রতি সমালোচনাও ধাবিত হয় বেশি করে। পৃথিবী জুড়ে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের অবসর নেওয়ার নির্দিষ্ট বয়সসীমা নেই। একই কথা প্রযোজ্য খেলাধুলোর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের প্রতি, আবার লেখক সমাজের বেলাতেও। ধরে নেওয়া হয়, অভিজ্ঞতা যত বাড়ে, তত নাকি রাজনৈতিক জ্ঞানবুদ্ধি বেশি করে পুষ্ট হয়। বয়সের ভারিক্কি চাল লেখক ও শিল্পীদের আরও বহুমুখী করে তোলে। খেলাধুলোর ক্ষেত্রে এতখানি স্বাধীনতার অবকাশ নেই। কোথায় থামতে হবে– এই সংকেত শরীর দিতে থাকে, যেহেতু খেলাধুলো মানেই পারফরম্যান্স। কিন্তু কে, কোথায় থামবে, তার কোনও সর্বজনমান্য বয়স নেই। ফলে অকারণ গোলযোগ বৃদ্ধির সম্ভাবনা থেকেই যায়।
সম্প্রতি, রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলির অবসর গ্রহণ নিয়ে প্রচুর জল্পনা ঘনিয়েছিল। তাঁদের বিপুল অর্জন ও অবদানকে অস্বীকার করা হচ্ছিল মাঝের ব্যর্থতা দিয়ে। বলা হচ্ছিল, বয়সের ভারে তঁাদের প্রতিভা ও পারফরম্যান্স আচ্ছন্ন হয়েছে। অতএব, অবসর নিয়ে সরে যাওয়াই ভালো। অথচ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জেতার পরে, পুরনো সমালোচকরা বদলে ফেলেছে আগের অবস্থান। সুর নরম করে বলছে, এখনও এই দু’জন দিকপাল ক্রিকেটারের থেকে দেশের নাকি অনেক কিছু পাওয়ার আছে। হায় রে, দ্বিচারী স্বভাব!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.