সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বঙ্গবন্ধুর মূর্তিতে হাতুড়ির ঘা! জুতোর মালা, মুখে কালি…। বিভিন্ন প্রান্তে মহিলারা নিগৃহীত। সংখ্যালঘুদের ঘরে আগুন লাগিয়ে দিয়ে উন্মত্ত জনতা মেতে উঠছে বিশ্রী উল্লাসে! বাংলাদশের বিভিন্ন প্রান্তের খণ্ডচিত্র দেখে শিউড়ে উঠছে গোটা বিশ্ব। প্রশ্ন উঠছে, দেশের উন্মত্ত জনতার বিবেকবোধ নিয়ে। আদৌ কি তা জাগ্রত হবে? বন্ধ হবে এই সহিংস পথ? উদ্বিগ্ন সভ্য সমাজ। এবার বাংলাদেশের এহেন নৈরাজ্য, অরাজকতার দায় নিয়ে প্রশ্ন তুললেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় (Swastika Mukherjee)।
বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের প্রথম থেকেই সরব স্বস্তিকা। মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করে পদ্মাপারের যুবপ্রজন্মের পাশে থাকার কথা বলেছিলেন অভিনেত্রী। তবে বিগত দু দিনে পদ্মাপারের বিভৎসতা দেখে শিউড়ে উঠেছেন স্বস্তিকা। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রতীকস্বরূপ একটি ছবি শেয়ার করে অভিনেত্রীর মন্তব্য, “দুদিন ধরে দেখছি বাংলাদেশে হিন্দুদের ঘর পুড়ছে, মহিলাদের নিগ্রহ করা হচ্ছে, এমনকি দুই বাংলার অত্যন্ত প্রিয় গুনী শিল্পী রাহুলের বাড়ি আক্রমণ করা হয়েছে। এই দায় বাংলাদেশের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বকে নিতে হবে। নিতে হবে তামাম বাংলাদেশীদের। মূর্তি ভাঙা, মুক্তিযুদ্ধের জাদুঘরে আগুন দেওয়া, এই কি ছিল কোটা আন্দোলনের উদ্দেশ্য?” বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের পাশে দাঁড়িয়ে সোজাসাপটা প্রশ্ন ছুঁড়লেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়।
বিগত দু দিনে যে ছবিটি সবথেকে বেশি আতঙ্কিত করেছে, সেটি হচ্ছে শেখ মুজিবর রহমানের মূর্তি ভাঙার সামনে নবীন প্রজন্মের উল্লাসের মূহূর্ত। এ কোন প্রজন্ম? প্রশ্ন তুলেছেন বিশিষ্ট জনের। একাংশের মত, ‘হয়তো অভিমান, না পাওয়ার যন্ত্রণা থেকেই বঙ্গবন্ধুর সমস্ত মূর্তি উচ্ছেদ করা হচ্ছে।’ আরেকাংশের প্রশ্ন, ‘বাংলাদেশের জনক বঙ্গবন্ধুর মূর্তি কালিমালিপ্ত হচ্ছে, ভেঙে ফেলা হচ্ছে, এই দিনও কি দেখতে হত বিশ্বকে?’ এবার সেই প্রসঙ্গেই স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, মুক্তিযুদ্ধ তো জেনেছিলাম, সকল বাংলাভাষী মানুষের প্রানের মূল্য, কীভাবে আপনারা একজন স্বৈরশাসক হটাতে গিয়ে এই মুক্তিযুদ্ধকে আঘাত করলেন?
কোটার দাবি মেটার পরেও রক্ত ঝরছে পদ্মাপারে। সোমবার শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী পদে পদত্যাগ করার পর থেকেই অরাজকতা বাংলাদেশে (Bangladesh Violence)। যে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি দেখে ঘুম উড়েছে গোটা বিশ্বের। অনেক তারকাই প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছেন এই অরাজকতার বিরুদ্ধে। সেই আবহেই স্বস্তিকা বলছেন, “আপনারা সকল ধরনের সাম্য ও মৈত্রীর কথা বলেছিলেন, তার প্রথম শর্ত একটি দেশের সংখ্যালঘুদের প্রান, মানবাধিকারের প্রতিষ্ঠা। সে ব্যর্থ হল। পালাবদলের সম্মুখে দাঁড়িয়ে আছেন আপনারা, সবার আগে বাংলাদেশের হিন্দুদের প্রান বুক দিয়ে রক্ষা করুন। যদি বলেন, এ আপনাদের মদতে হয়নি, বাংলাদেশের মুসলিম মৌলবাদী, সুযোগ সন্ধানীরা করেছেন, তবে একটি কথাই বলব- আপনাদের স্বপ্ন ছিনতাই হতে দেবেন না, তরুণদের ত্যাগকে ব্যবহার করে, কোনও শক্তি যেন গণহত্যা না চালায়, সেই দায় দায়িত্বও আপনাদের। বাংলাদেশে শান্তি, গণতন্ত্র, সংখ্যালঘুদের অধিকার ফিরুক যত শীঘ্র সম্ভব।” এর আগে বাংলাদেশের ছাত্রদের পাশে দাঁড়িয়ে স্বস্তিকা মুজিব স্মরণ করে বলছিলেন, “বাঙালিদের দাবায়ে রাখতে পারবেন না।” তবে বর্তমানে সংখ্যালঘুদের প্রতি এহেন অত্যাচার দেখে চিন্তার ভাঁজ অভিনেত্রীর কপালেও।
View this post on Instagram
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.