ফাইল চিত্র
স্টাফ রিপোর্টার: মাধ্যমিক পাশ করলেও সেই উত্তেজনার লেশমাত্র নেই গলায়। তার সাফল্যে যে সবথেকে বেশি খুশি হত, সেই তো আর শুনতে পেল না। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছিল নদিয়ার হাঁসখালির বগুলার কিশোরের। যার বিচারপ্রক্রিয়া এখনও চলছে।
তাঁর ভাই এবার মাধ্যমিক (Madhyamik) পরীক্ষায় পাশ করল। কিন্তু দাদার ‘অসময়ে’ চলে যাওয়াকে আজও মানতে পারে না সে। এখনও তাঁকে আঁকড়েই দিন কাটে ভাইয়ের। পরীক্ষার ফলের কথা জিজ্ঞেস করতেই সে জানায়, “শুধু মনে পড়ছে, অঙ্কের জটিল সমস্যার সহজ সমাধান খুঁজে দিত দাদা। এখন দাদা নেই, কিন্তু ঘরের আনাচকানাচে ওর বইখাতার স্তূপ ওর কথা মনে করায়।”
জানা গিয়েছে, যাদবপুরকাণ্ডে নিহত পড়ুয়া মাধ্যমিকে পেয়েছিলেন ৮৭ শতাংশ নম্বর। এই কিশোরের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে মাস কয়েক আগে উত্তাল হয়েছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় (Jadavpur University)। কিশোরের বাবার কাছে ফোন গিয়েছিল, ছেলের দুর্ঘটনা ঘটেছে। তার পর এসে দেখেন সব শেষ।
ছোট ছেলের মাধ্যমিক (WB Madhyamik Result 2024) পাশের খবরেও হাসি নেই মুখে। ফোনের ওপারে বাবার স্বরে আক্ষেপের সুর, “আজকের দিনটাতে বড় ছেলেটা থাকলে কতই না আনন্দ করত! ছোট ভাইটাকে হয়তো রান্না করে খাওয়াত।” তিনি আরও বলেন, “চোখের সামনে ওই দিনটা এখনও ভাসে, যে দিন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বড় ছেলেকে পৌঁছে দিতে গিয়েছিলাম ছোটটাকে নিয়ে। ক্যাম্পাসে পৌঁছে যাওয়ার পর হঠাৎই অঝোরে কাঁদতে শুরু করেছিলাম তিনজনেই। কিন্তু কেন সেই কান্না এসেছিল, তখন কেউই বুঝতে পারিনি।”
ছোট ছেলে মাধ্যমিক পাশ করলেও বাড়ি যেন এখনও অন্ধকারে। “দাদা নেই। সে কেন চলে গেল, সেই রাতে কী হয়েছিল– প্রশ্নগুলো মাথার মধ্যে কিলবিল করছে! ঘুম হচ্ছে না, ভাল লাগছে না কিচ্ছু। ও থাকলে হয়তো রেজাল্ট আরও ভাল হতে পারত।” জানায় সদ্য মাধ্যমিক পাশ করা কিশোর। জানা গিয়েছে, যাদবপুরকাণ্ডের পর বাকরুদ্ধ হয়ে যায় ছোট ছেলেটি। রাজ্যের একটি সরকারি হাসপাতালে মাসে এক বার করে কাউন্সেলিং করিয়ে নিতে হচ্ছে। এত কিছুর পরও নিহত পড়ুয়ার বাবার সাফ বক্তব্য, ছেলের বিচার পাওয়ার জন্য লড়াই থেমে থাকবে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.