Advertisement
Advertisement
R G Kar Case

‘একজন দোষী নয়! অপরাধীর ফাঁসি হোক’, চাইছে মৃত চিকিৎসকের পরিবার

আর জি কর হাসপাতালে মৃত মহিলা চিকিৎসকের বাড়িতে সৌগত-সুজন-অগ্নিমিত্রার।

R G Kar Case: Family of deceased Doctor Family wants highest punishment
Published by: Paramita Paul
  • Posted:August 10, 2024 9:49 pm
  • Updated:August 10, 2024 9:49 pm  

অর্ণব দাস, বারাকপুর: আর জি কর হাসপাতালে মৃত মহিলা চিকিৎসকের শেষকৃত্য সম্পন্ন হল। শোকস্তব্ধ পরিবারের দাবি, এমন ঘটনা যেন আর কোনও মেয়ের সঙ্গে না ঘটে। তবে অপরাধীদের শাস্তির বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরই আস্থা রাখছে পরিবার। অপরাধীর ফাঁসির দাবিতে সরব হয়েছে তারা। তবে গোটা ঘটনায় একজন দায়ী বলে মনে করেন না তাঁরা।

শুক্রবার রাত দশটা নাগাদ সোদপুর নাটাগড়ে এসে পৌঁছায় চিকিৎসক তরুণীর মৃতদেহ। কান্নার রোলে সকলে তাকে শেষ বিদায় জানানোর পর রাত প্রায় পৌনে একটা নাগাদ পানিহাটি শ্মশানে দাহ করা হয় মরদেহ। হাসপাতাল থেকে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া পর্যন্ত সর্বক্ষণ ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক নির্মল ঘোষ, স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর তথা পারিবারিক বন্ধু সোমনাথ দে-সহ অন্যান্যরা। মেয়েকে শেষ বিদায় জানিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে মা বলতে থাকেন, “অপরাধীর যেন চরম শাস্তি হয়। এত ভালো মেয়েকে কেড়ে নিল। জনগণের সেবা করতে গিয়ে ওঁর জীবন চলে গেল। মৃত্যুর সময় ও খুব কষ্ট পেয়েছে। এরকম ঘটনা যেন কোনও মায়ের সঙ্গে না ঘটে।” তদন্তের ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার অবস্থায় তারা নেই বলেও রাতে জানান তিনি। যদিও শনিবার নিহত চিকিৎসকের বাবা মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি আস্থার কথা জানিয়ে বলেন, “পুলিশ আমাদের সঙ্গে প্রথমে ঠিক করে কথাই বলেনি। কেমন জানি তাড়াতাড়ি সব মিটিয়ে দিতে চাইছিল। তবে একদম সহযোগিতা করেনি, সেটা বলব না। আমরা মুখ্যমন্ত্রীর উপর সম্পূর্ণ আস্থা রাখছি। দোষীদের কঠোর শাস্তি হোক এটাই চাইব। এই ঘটনায় একজন গ্রেপ্তার হলেও একজনই এটা করেছে বলে মনে করি না।” মেয়ের মুখে কখনও কোন আশঙ্কা সম্পর্কে ইঙ্গিত পাইনি বলেও জানান তিনি।

Advertisement

[আরও পড়ুন: চিকিৎসক খুনে তুলকালাম আর জি কর, অধ্যক্ষের বিতাড়ন চাইছেন আন্দোলনকারীরা

এদিন সকালেই পরিবারকে সমবেদনা জানাতে বাড়িতে যান স্থানীয় সাংসদ সৌগত রায় এবং পার্শ্ববর্তী বিধানসভার বিধায়ক তথা মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। মন্ত্রী বলেন, “তাকে যেভাবে খুন করা হয়েছে সাম্প্রতিক কালে এইরকম নৃশংস ঘটনা ঘটেনি। এই ঘটনায় একজন গ্ৰেপ্তার হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীও বলেছেন, দ্রুত এই তদন্তের কিনারা হবে।” একইসঙ্গে তার সংযোজন, “আমি চাই অপরাধীর ফাঁসি হোক। আমি মৃতের মা-বাবাকে বললাম আপনারা চাইলে সিবিআই তদন্ত চাইতে পারেন। ওঁরা জানালেন, মুখ্যমন্ত্রীর ওপর তাঁদের আস্থা আছে।” সৌগত রায় জানান,”মুখ্যমন্ত্রী যা বলার বলেছেন, তিনি নিজে ব্যাপারটা দেখছেন। আমি পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা বলেছি। হাসপাতালে বহিরাগত যাতায়াত বন্ধ করতে হবে। কীভাবে সেটা নিয়ন্ত্রণ করবে হাসপাতাল কতৃপক্ষের সেটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে।” যদিও বিকেলে পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পর সুর চড়ান সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। বলেন, “ঘটনাটি নির্ভয়াকাণ্ড বা কামদুনির থেকে কোনও অংশে ছোট নয়। পুলিশ কেন প্রথমে আত্মহত্যা বলে খবর দিয়েছিল? কেন ওই হাসপাতালের লোকেদের নিয়ে কমিটি তৈরি হল? বাবা-মাকে কার্যত আটকে রাখা হয়েছিল। আর জি করের ছাত্র-ছাত্রীরা প্রতিবাদ করাতেই সকলে জেনেছে। না হলে ধামাচাপা দেওয়ার মনোভাব ছিল। যারা ধামাচাপা দিতে চেয়েছেন তারাও অপরাধী। তাই সর্বোচ্চ পর্যায়ের তদন্ত হতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলবেন সিবিআই তদন্ত হলে আপত্তি নেই। তাহলে উনি অবিলম্বে সিবিআই তদন্তের আর্জি কেন জানাচ্ছেন না।” জঘন্যতম এই অপরাধের চূড়ান্ত শাস্তিরও দাবি জানান তিনি।

সিপিএমের এই নেতা বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই সোদপুর ট্রাফিক মোড়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় সিপিএমের ছাত্র-যুব। তখন মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন বিজেপি নেতা সুকান্ত মজুমদার, অগ্নিমিত্রা পাল সহ অন্যান্যরা। ফলে তারা কিছুক্ষণের জন্য আটকে পড়েন। পরে মৃতের বাড়ি পৌঁছে পরিবারের সঙ্গে কথা বলে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সরব হন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী পরিবারকে ফোন করার পরেই পুলিশ তৎপর হল, তার আগে কেন হল না। আর জি করের মত হাসপাতালে চিকিৎসকের যদি এইরকম সুরক্ষা হয় তাহলে কলকাতা থেকে দূরে কোন গ্রামের মহিলাদের কি সুরক্ষা আছে? আমরাও চাই দোষীয় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। তবে তদন্ত সঠিক ও নিরপেক্ষ হওয়া দরকার। আদালত বলেছে, ময়নাতদন্ত দিনের আলোয় করতে হবে, কিন্তু আমার কাছে খবর আছে সন্ধ্যায় ময়নাতদন্ত হয়েছে অর্থাৎ ময়নাতদন্ত বেআইনি। বেশ কয়েকমাস আগে আমি আরজিকরের প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে রাজ্যপালের কাছে চিঠি দিয়েছিলাম। কা মোহ আছে তাকে প্রথমে প্রিন্সিপালের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়, পরে আবার নিয়ে আসা হয়। তাই এই ঘটনার সঙ্গে দুর্নীতির কোন যোগ আছে কিনা তারও তদন্ত হওয়া উচিত।”

[আরও পড়ুন: ‘কেন এমনটা ঘটল?’, RG করের নিহত চিকিৎসককে ‘কন্যাসম’ বলে প্রশ্ন ফিরহাদের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement