সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: রাতারাতি অবস্থান বদল ওড়িশার বাঘিনীর। রবিবার সকালে ঝাড়গ্রাম পেরিয়ে পুরুলিয়ায় ঢুকে পড়েছে সে। সকাল দশটা নাগাদ লাস্ট লোকেশন ট্র্যাক করা গিয়েছে। কংসাবতী দক্ষিণ বন বিভাগের বান্দোয়ানের রাইকা পাহাড়ের চূড়ায় রয়েছে জিনাত। তার খোঁজে হন্যে বনদপ্তরের কর্মীরা। গত দুদিন ধরে খবর ছড়িয়েছিল, একটি নয়, ওড়িশা থেকে বাংলায় ঢুকেছে জোড়া বাঘ-যমুনা ও জিনাত। এদিন স্বস্তি দিয়ে দুই রাজ্যের বনদপ্তরের ঘোষণা, যমুনা বাংলায় নেই। রেডিও কলারের তথ্য বলছে, আপাতত সেই বাঘিনীর অবস্থান বালাসোরের জঙ্গলে। এ রাজ্যের জঙ্গলে জোড়া বাঘ নয়, একা ঘুরে বেড়াচ্ছে জিনাত।
ওড়িশার সীমানা পার করে ঝাড়গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলে পায়চারি করছিল তিন বছরের বাঘিনীটি। এই ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়ার বান্দোয়ান, ও ঝাড়খণ্ড ছুঁয়ে রয়েছে ময়ূরঝরণা হস্তি প্রকল্প। জিনাতের গলায় থাকা রেডিও কলার বলছে, রাতভর হস্তি প্রকল্পের আওতায় থাকা জঙ্গলেই ঘুরে বেরিয়েছে সে। এদিন সকাল সাতটা সাড়ে সাতটা নাগাদ পুরুলিয়ার বান্দোয়ানে ১ বনাঞ্চলের ঘাঘরা থেকে রেডিও কলারের সিগনাল মিলেছিল। সকাল ১০ টা নাগাদ সে রাইকা পাহাড়ের চূড়ায় রয়েছে বলে খবর। মনে করা হচ্ছে, এই জঙ্গলেই ঘাপটি মেরে আছে সে। তবে শ্যাডো জোন হওয়ায় তারপর থেকে আর খোঁজ মেলেনি। ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছেন বনদপ্তরের একাধিক উচ্চপদস্থ আধিকারিক।
মহারাষ্ট্রের তাডোবা থেকে যমুনা ও জিনাতকে ওড়িশার সিমলাপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পে আনা হয়েছিল। কোয়ারেন্টাইনে রাখার পর তাদের ‘সফট রিলিজ’ করা হচ্ছিল। অর্থাৎ ব্যাঘ্র প্রকল্পের অন্দরে তাদের গতিবিধি ছিন নিয়ন্ত্রিত। এর মাঝেই রাজ্যের সীমানা টপকে ফেলে তারা। প্রথমে জিনাত ও পরে ‘ঘর’ ছাড়ে যমুনা। প্রায় দেড় মাস হল ঘরছাড়া তারা। দুজনেক গলাতেই বাঁধা রয়েছে রেডিও কলার। অ্যান্টেনা রয়েছে ওড়িশার বনদপ্তরের কর্মীদের হাতে। জিনাতের পিছন পিছন তাঁরা বাংলায় ঢুকেছেন। ইতিমধ্যে পুরুলিয়া ঢুকে গিয়েছেন তাঁরা। আজ দুপুরের মধ্যে ঝাড়গ্রাম থেকে বান্দোয়ানে আসছে সুন্দরবনের টিমও। তাঁরা মূলত কীভাবে খাঁচা পাতা হবে, কীভাবে টোপ দেওয়া হবে, কীভাবে বাঘটিকে ঘুম পাড়ানো হবে সেদিক নজর রাখছে। তৎপর রাজ্য বনাধিকারিকরাও।
বান্দোয়ান কংসাবতী সাউথ ডিভিশন বা দক্ষিণ বনবিভাগের অন্তর্গত। এই ডিভিশনের অন্তর্গত তিনটি রেঞ্জ বান্দোয়ান ১, বান্দোয়ান ২ এবং যমুনা রেঞ্জের আধিকারিকরা নেমেছেন। এছাড়া বরাবাজার এবং মানবাজার ২ রেঞ্জের অফিসার ও তাঁর দলকেও নামানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে কংসাবতী দক্ষিণ বনবিভাগ বা সাউথ ডিভিশনের ডিএফও পূরবী মাহাতো বলেন, “আমাদের কাছে এখনও পর্যন্ত যা খবর রয়েছে তাতে জিনাত পুরুলিয়ায় প্রবেশ করেছে। এই খবর পাওয়ার পর আমরা সতর্ক রয়েছে। মাইকিং করে প্রচার চলছে।” ইতিমধ্যে এলাকায় টহলদারি ও সচেতনতার প্রচার চলছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.