Advertisement
Advertisement

Breaking News

Kidney smuggling

কান টানলে মাথা আসে! কিডনি কাণ্ডে ‘রাঘব-বোয়াল’দের ধরতে পুলিশের নজরে ‘চুনোপুটি’রা

এক-এক জন সুদখোরদের হয়ে কাজ করত চার-পাঁচজন চুনোপুটি।

New facts emerges in Kidney smuggling case in Ashoknagar

অশোকনগরে কিডনি পাচারচক্রে গ্রেপ্তার সুদখোর। ফাইল ছবি।

Published by: Paramita Paul
  • Posted:March 31, 2025 10:18 pm
  • Updated:April 1, 2025 9:21 am  

অর্ণব দাস, বারাসত: চড়া সুদের আড়ালে কিডনি পাচার চক্রের গোড়া থেকে ‘সাপ্লাই লাইন’ কেটে দিতে চাইছে পুলিশ। তাই একদিকে যেমন কিডনি গ্রহীতারা অশোকনগর থানার পুলিশের স্ক্যানারে। তেমনই ধৃত বিকাশ ঘোষ ওরফে শীতলদের মত সুদখোরদেরও আতস কাঁচের নিচে রেখেছিল পুলিশ। তাতেই ‘চুনোপুটি’দের কার্যকলাপ জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।

সূত্রের খবর, এক-এক জন সুদখোরদের হয়ে কাজ করত চার-পাঁচজন চুনোপুটি। তাদের কাজ ছিল এমন অসহায়দের জোগার করা, যারা আর উপায় না পেয়ে ৩৬০ শতাংশ হারে সুদে ধার নেবে। এরপর নামমাত্র এগ্রিমেন্ট করে টাকা ধার দেওয়ার পর এই ‘চুনোপুটি’রাই সুদখোরদের হয়ে প্রতিদিন সুদের টাকা কালেকশন করত। কালেকশনের অনুপাতেই ‘চুনোপুটি’দের পেমেন্ট দিত সুদখোররা। যে ঋণগ্রহীতা পরপর কয়েকদিন সুদের টাকা দিত না, টাকা কালেকশনের ছেলেদের নিয়ে তার উপর চড়াও হত সুদখোর। প্রথম দিকে হুমকি, মারধর, তারপর ঋণগ্রহীতাদের মোবাইল, বাইক, সোনার আংটি কেড়ে নিত তাঁরা। সুদের টাকা পরিশোধ করার পরই এই জিনিস ফেরত পাওয়া যেত। যদি তারপরেও টাকা না পেত, শুরু হতে যেত মানসিক চাপ দেওয়া। শেষে সুদের টাকা পরিশোধের নামেই বাধ্য করানো হত কিডনি বিক্রির জন্য।

এক পুলিশ কর্তার কথায়,”যে সুদখোররা কিডনি বিক্রির চক্রের সঙ্গে যুক্ত, তাঁরা আদপে চাইত হতদরিদ্ররা যাতে সুদের জালে জড়িয়ে টাকা শোধ করতে না পারে। তাহলেই একমাত্র কিডনি বিক্রির জন্য রাজি করানো সম্ভব। কারণ সুদখোররা একজনের কিডনি বিক্রি করাতে পারলে পেত দালালির ন্যূনতম ২০ লক্ষ টাকা।” কিডনি দাতা থেকে গ্রহীতার সংখ্যা অনেক বেশি। কলকাতার নামী নেফ্রলজি সেন্টারের মাধ্যমে রাজ্যের এবং ‘মেঘের আড়ালে থাকা’ ব্যক্তির মাধ্যমে ভিন রাজ্য-সহ বিদেশের ক্লায়েন্ট প্রায় প্রতিদিনই জোগাড় হয়ে যেত। সূত্রের খবর, দক্ষিণ কলকাতার নামজাদা বেসরকারি হাসপাতালটিতে প্রতিমাসে ২০ থেকে ২৫টি কিডনি প্রতিস্থাপন হত। কিন্তু রোজ কিডনিদাতা জোগাড় করা সম্ভব হত না। তাই তো জেলায় জেলায় তৈরি হয়ে গিয়েছিল সুদের আড়ালে কিডনি বিক্রির টিম।

পুলিশ জানতে পেরেছে অশোকনগর থানা এলাকায় একাধিক সুদখোরের চাপে বিগত ৫-৭ বছরে কমবেশি ২৫ জন কিডনি বিক্রি করেছে। একইসঙ্গে ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জেনেছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ের নদীর পার্শ্ববর্তী একটি এলাকার প্রায় প্রতিটি বাড়ির সদস্যই সুদখোরদের চাপে কিডনি বিক্রি করেছে।যদি কিডনি সাপ্লাই লাইন কেটে দেওয়া যায় তাহলে গোড়াতেই ধাক্কা খাবে পাচার চক্র। এই কাজেই এখন তৎপর বারাসত জেলা পুলিশ। পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খারিয়ার আবেদন, সহজে ধার পেতে কেউ চড়া সুদখোরদের ফাঁদে পড়বেন না। যদি কেউ এই পরিমাণ সুদ দেওয়ার জন্য চাপ দেয়, পুলিশকে জানান।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
News Hub