জীবনযুদ্ধে প্রতিদিন লড়াই করছেন মায়া। নিজস্ব চিত্র
ধীমান রায়, কাটোয়া: ঘরে অসুস্থ স্বামী। স্বামীর চিকিৎসা থেকে সংসারের দায়িত্ব, সবই যে তাঁরই কাঁধে। তাই সূর্য ওঠার অনেক আগেই বিছানা ছাড়তে হয়। ফুলের ডালি মাথায় করে বেরিয়ে পড়তে হয় শহরের পথে। জীবন যুদ্ধে একাই লড়ছেন ফুল বিক্রেতা মায়া সর্দার। দুই এক বছর নয়, টানা এক যুগ ধরে এই লড়াই তাঁর।
কাটোয়া শহরের বড়বাজারে রাস্তার ধারে বসে বিভিন্ন ধরনের ফুল ও বেলপাতা বিক্রি করেন মায়াদেবী। নদিয়া জেলার দেবগ্রাম পাওয়ার হাউসপাড়ায় বাড়ি তাঁর। বাড়িতে রয়েছেন স্বামী পুষ্কর সর্দার। এক ছেলে, এক মেয়ে। দুজনেরই বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ছেলে পৃথক সংসারে থাকেন। মায়াদেবী জানান, রোজ রাত দুটোর সময় বিছানা ছেড়ে উঠে পড়তে হয়। ভোরেই রান্না করে ফেলেন। তারপর ভোর চারটের বাস ধরে বেথুয়াডহরিতে গিয়ে পাইকারি বাজারে ফুল কেনেন। ওই ফুল নিয়ে ফের দেবগ্রামে। তারপর দেবগ্রাম থেকে বল্লভপাড়া ফেরিঘাটে আসেন। ভাগীরথী পেরিয়ে সাত সকালেই কাটোয়া শহরে চলে আসেন।
মায়াদেবী বলেন, ‘‘আগে স্বামী কাজ করত। কিন্তু অসুস্থতার জন্য পারে না। ১২ বছর ধরে আমিই এই ব্যবসা সামলাচ্ছি।’’ এতটা ঝক্কি নিয়েও কেন ফুল বিক্রির পেশায়? মায়াদেবীর কথায়, ‘‘স্থানীয় এলাকায় পরিচারিকার কাজ করতে পারলে আমার সুবিধা হত। কিন্তু আমার নিজেরও দুবার অস্ত্রোপচার হয়েছে। ভারী কাজ তেমন করতে পারি না। ফুলের বোঝা হাল্কা, তাই অসুবিধা হয় না।’’ জানা গিয়েছে, স্বামীর অসুস্থতার পর বাড়ির একটি ছাগল ও দুটো কাঁসার থালা বিক্রি করে দুই হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে ফুল বিক্রির ব্যবসায় নামেন মায়াদেবী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.