প্রতীকী ছবি।
অর্ণব আইচ: নামে ধর্মীয় অনুষ্ঠান। আসলে মগজধোলাইয়ের ছক জঙ্গি সংগঠনের। ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠন জামাত-উল-মুজাহিদিন (বাংলাদেশ) বা জেএমবি-র চলতি মাসের মধ্যেই। বাংলাদেশ থেকে এক জঙ্গি নেতা বাংলায় অনুপ্রবেশের ছক কষেছে, এমনই খবর এসেছে গোয়েন্দাদের কাছে। এই জঙ্গি নেতা মুর্শিদাবাদের তিনটি জায়গায় জেএমবি-র স্লিপার সেলের তিনজনের সঙ্গে দেখা করে বৈঠক ও মগজধোলাইয়ের ‘ক্লাস’ নেওয়ার ছক কষেছে বলে তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দারা। এই তথ্যের ভিত্তিতে সীমান্তবর্তী এলাকার জেলাগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে।
যদিও কেন্দ্র ও রাজ্যের গোয়েন্দাদের বিশেষ নজর রয়েছে মুর্শিদাবাদের উপরই। একইসঙ্গে বিশেষভাবে সতর্ক করা হয়েছে বিএসএফের গোয়েন্দাদের। নদীপথে সীমান্ত পেরিয়ে যাতে ওই জঙ্গি নেতা লোকজন নিয়ে অনুপ্রবেশ করতে না পারে, গোয়েন্দারা সেদিকে নজর রাখতে শুরু করেছেন। গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, ওই জেএমবি নেতা ইসমাইল বলেই পরিচিত। যদিও গোয়েন্দাদের মতে, এটি ওই জঙ্গি নেতার আসল নাম নয়। সেই ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তির আাসন নাম জানার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা। ইতিমধ্যে এই রাজ্যের একাধিক জায়গা থেকে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ ও অসম পুলিশের গোয়েন্দাদের যৌগ অভিযানে গ্রেপ্তার হয়েছে আনসারুল্লাহ বাংলা টিম (এবিটি) তথা ভারতীয় আল কায়েদা বা আকিসের সদস্যরা। তাদের সঙ্গে জেএমবি-র মতো বাংলাদেশের জাঙ্গি সংগঠনেরও যোগ মিলেছে।
এর মধ্যেই এই রাজ্যে জেএমবি নেতার অনুপ্রবেশের ছকের খবরটি যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছেন গোয়েন্দারা। তাঁরা জেনেছেন, ‘ইসমাইল’ নামে ওই জেএমবি নেতা বাংলাদেশের রাজশাহী, চাপাই নবাবগঞ্জ-সহ বিভিন্ন জেলায় ডেরা তৈরি করেছে। যেহেতু নতুন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ এখন অনেকটাই জঙ্গিদের মুক্তাঙ্গন, তাই এবার এই রাজ্যের জেলাগুলি থেকে জঙ্গি সদস্য নিয়োগের ছক কষছে তারা। সেই সূত্র ধরেই চলতি মাসে জেএমবি নেতা ইসমাইল চোরাপথে সীমান্ত পেরিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করতে পারে বলে অনুমান। ইতিমধ্যেই ভিপিএন কল ও বিশেষ কয়েকটি অ্যাপের মাধ্যমে বাংলাদেশে বসেই এই জঙ্গি নেতা যোগাযোগ করেছে মুর্শিদাবাদের অন্তত তিনজনের সঙ্গে। এই তিনজন জেলার তিনটি জায়গায় স্লিপার সেল চালায়। এছাড়াও ওই তিনজন নিজেদের এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও যুক্ত।
গোয়েন্দাদের কাছে খবর, ইসমাইল ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির কয়েকজন ছাত্রকে টার্গেট করা হয়েছে। ইসমাইল ছক কষেছে, ওই ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলে তাদের ক্লাস নেওয়ার ছলে আসলে মগজধোলাই করার। এভাবে এই দফায় মুর্শিদাবাদের অন্তত ২০ জন কিশোর ও তরুণের মগজধোলাই করার পরিকল্পনা এই জেএমবি নেতার। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে চিহ্নিত করে ওই জেএমবি নেতা ক্রমে বাংলাদেশে প্রাথমিক জঙ্গি প্রশিক্ষণের জন্যও নিয়ে যাওয়ার ছকও কষেছে। মুর্শিদাবাদের ওই তিন স্লিপার সেলের মাথাকেও গোয়েন্দারা শনাক্ত করেছেন বলেও জানা গিয়েছে। সেই সূত্র ধরে সাদিপুর, রানিনগর, ধুলিয়ান-সহ জেলার বিভিন্ন জায়গায় কড়া নজরদারি শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.