ফাইল ছবি।
শাহজাদ হোসেন, জঙ্গিপুর: আর জি কর কাণ্ডের পর কেটে গিয়েছে চারমাস। এখনও পর্যন্ত সুবিচার পায়নি নির্যাতিতার পরিবার। তবে ধর্ষণ ও খুন কাণ্ডে দ্রুত বিচারের ক্ষেত্রে বারবার নিজেদের দক্ষতার প্রমাণ রেখেছে রাজ্য পুলিশ। জয়নগরের পর জঙ্গিপুর (Jangipur Incident)। ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার মাত্র ৫৯ দিনে বিচার পেল নাবালিকার পরিবার। এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুজনকে দোষী সাব্যস্ত করল আদালত। শুক্রবার সাজা ঘোষণা।
দুর্গাপুজোর সময় গত ১৩ অক্টোবর দাদুর বাড়ি বেড়াতে এসেছিল নাবালিকা। বাড়ির সামনে খেলা করছিল সে। সেই সময় নিখোঁজ হয়ে যায় নাবালিকা। প্রায় তিন ঘন্টা পর প্রতিবেশী দীনবন্ধু হালদারের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় নাবালিকার বস্তাবন্দি দেহ। নাবালিকার দেহ উদ্ধারের পর উত্তেজিত জনতা দীনবন্ধুকে ব্যাপক মারধর করে। হাসপাতালে কয়েকদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ফরাক্কা থানার পুলিশ দীনবন্ধু হালদারকে গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে খুন, তথ্যপ্রমাণ লোপাট এবং পকসো আইনের ৬ নম্বর ধারায় অভিযুক্ত করে গ্রেপ্তার করে। দীনবন্ধু হালদারকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
তাতেই পুলিশ জানতে পারে এই খুনের ঘটনায় শুভ হালদার নামে আরও এক যুবক জড়িত। ১৯ অক্টোবর পুলিশ তাকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। ধৃত শুভর বিরুদ্ধেও একই ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, খুনের মামলায় অভিযুক্ত দীনবন্ধু ও শুভর বয়সের ব্যবধান যথেষ্ট হলেও তারা দিনের বেশিরভাগ সময় একই সঙ্গে থাকত। গাঁজা ও মদের নেশায় আসক্ত ছিল তারা। নাবালিকাকে খুন ও যৌন নির্যাতন চালাতে দীনবন্ধুকে শুভ সাহায্য করেছিল বলেও অভিযোগ। নাবালিকার মৃত্যুর পর তার মৃতদেহটি বস্তাবন্দি করতেও শুভ, দীনবন্ধুকে সাহায্য করেছিল বলে তদন্তে উঠে আসে।
এই খুনের ঘটনার পর জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার আনন্দ রায়ের নেতৃত্বে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়। এই দলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ফরাক্কা থানার আইসি নীলোৎপল মিশ্র-সহ বিভিন্ন স্তরের শীর্ষ পদাধিকারীরা ছিলেন। ২১ দিনের মাথায় পুলিশ ৬২২ পাতার চার্জশিট জমা দেয়। ৫২ দিনের মাথায় ৩১ জনের সাক্ষ্যদান শেষ হয়। ৫৯ দিনের মাথায় দীনবন্ধু এবং শুভকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। শুক্রবার ওই দুই দোষীর সাজা ঘোষণা। এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “আশা করছি ফাঁসির সাজা হবে দুজনের। জয়নগরের মতো জঙ্গিপুরের ক্ষেত্রে পুলিশ ভালো কাজ করেছে। কিন্তু আর জি করের ঘটনার পর ৪ মাস কেটে গেলেও কিছুই হয়নি। সিবিআই কিছুই করতে পারছে না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.