ফাইল ছবি
সম্যক খান, মেদিনীপুর: শিকার উৎসবের প্রথম দিন একপ্রকার লুকোচুরি খেলা চলল পুলিশ ও শিকারিদের মধ্যে! বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে ও জঙ্গলে ঢোকার মুখে পাহারাদারের ভূমিকায় দাঁড়িয়েছিল পুলিশ। বিভিন্নভাবে প্রচারও করছিলেন পুলিশকর্মীরা। শিকারিদের ধরে ধরে বোঝাচ্ছিলেনও। অনেকাংশে সাফল্যও পেয়েছেন। কিন্তু এত সবের পরও পুলিশ ও বনদপ্তরের চোখকে ফাঁকি দিয়ে প্রথাগত শিকার উৎসব পালন করতে জঙ্গলে ঢুকে পড়েন শতাধিক শিকারি।
বুধবার মেদিনীপুর সদর ব্লকের আদিবাসী সমাজের প্রথম শিকার উৎসব ছিল চাঁদড়া রেঞ্জের ডালকাটি জঙ্গলে। শিকার উৎসবের নামে বন্যপ্রাণ হত্যা রুখতে অনেক আগে থেকেই সচেষ্ট ছিল বনদপ্তর। লাগাতার সচেতনতা প্রচার চলেছে। মাইকিং থেকে শুরু করে লিফলেট বিলি করেও সকলকে সতর্ক করা হয়েছে। এদিন শিকারিদের রুখতে নাকা চেকিংও করা হয়। তাদের জঙ্গলে ঢোকা থেকে বিরত রাখতে বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে কড়া পাহারায় ছিলেন বনকর্মীরা। কড়া নজরদারি ছিল বনরক্ষা কমিটির সদস্যদেরও।
প্রথমে শিকারিদের কেউ কেউ সাইকেলে করে জঙ্গলে ঢোকার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। তো কেউ দলবেঁধে ঢুকতে গিয়ে বাধা পেয়েছেন। বেলা বাড়তেই পাশের জেলা ঝাড়গ্রাম থেকে চাঁদড়ার দেউলডাঙা চলে আসেন একদল শিকারি। তাদের মাঝপথেই আটকে দেয় পুলিশ ও বনকর্মীরা। বহু জায়গায় শিকারিদের কাছে ডেকে সচেতনতার পাঠ দিতে দেখা যায় পুলিশকর্মীদের। জঙ্গলের প্রাণীকে নির্বিচারে হত্যা করলে প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট হবে। এনিয়ে কঠোর আইনও আছে। বোঝানোর পর অবশ্য বহু শিকারি জঙ্গলে না ঢুকে ফিরেও গিয়েছেন।
আবার দেখা গিয়েছে অন্য চিত্রও। বনদপ্তর ও পুলিশের সবকিছু প্রয়াসকে উপেক্ষা করেই একদল শিকারি বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে জঙ্গলে ঢুকেছেন। মূল প্রবেশপথগুলিতে কড়া নজরদারি থাকায় তারা বিভিন্ন ছোট খাটো রাস্তা তথা জমির আলপথ ধরে ঢুকে পড়েছেন জঙ্গলের ভেতরে। যদিও মেদিনীপুর বনবিভাগের ডিএফও দীপক এম দাবি করেছেন, “এদিন একটিও বন্যপ্রাণ হত্যার ঘটনা ঘটেনি। ভোর চারটে থেকেই পুলিশ ও বনদপ্তরের দশটি টিম পুরো এলাকার নজরদারিতে ছিল। তবুও যারা জঙ্গলে ঢুকেছিলেন তাদের বুঝিয়ে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়েছে।” আগের তুলনায় মানুষ এখন অনেক বেশি সচেতন বলেও দাবি করেছেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.