Advertisement
Advertisement

Breaking News

Teesta

ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ শুরু উত্তরে, সামান্য বৃষ্টিতেই সিকিমে ফুঁসছে পলি ঢাকা তিস্তা

নিম্নচাপ দুর্বল হতে উত্তরে ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ শুরু।

Huge rainfall in North Bengal causing overflow of river Teesta

সামান্য বৃষ্টিতেই সিকিমে ফুঁসছে পলি ঢাকা তিস্তা। নিজস্ব চিত্র।

Published by: Paramita Paul
  • Posted:May 29, 2024 7:34 pm
  • Updated:May 29, 2024 7:36 pm  

বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: প্রতীক্ষার অবসান। নিম্নচাপ দুর্বল হতে উত্তরে ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ শুরু। মঙ্গলবার রাতে রায়ডাক, সংকোশ নদী উপত্যকা এলাকায় দেড়শো থেকে দুশো মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। তুলনায় তিস্তা উপত্যকা এলাকায় বৃষ্টি ছিল সামান্য। আবহাওয়া দপ্তরের সতর্কতা, আগামী তিনদিন জলপাইগুড়ি, কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারে হতে পারে ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ। এই সময় দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড়ে ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে গত বছর হড়পা বানে বিধ্বস্ত তিস্তা সামান্য বৃষ্টির জল বহনের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলায় উত্তর সিকিমে বিপদ গর্জেছে। সেখানে সামান্য বৃষ্টির জেরে পলিতে ঢেকে থাকা তিস্তা ফুঁসে উঠে ভেসেছে সেতু। বেড়েছে আতঙ্ক। ভারী বৃষ্টি হলে এবার কি পরিস্থিতি দাঁড়াবে সেটাই উদ্বেগের কারণ হয়েছে আবহাওয়া দপ্তর ও সিকিম প্রশাসনের। বুধবার সিকিম প্রশাসনের কর্তারা নদী এলাকা পরিদর্শন করেন।

আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে অতিভারী বর্ষণ হয়েছে আলিপুরদুয়ার জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায়। এখানে রায়ডাক ও সংকোশপাড়ের কুমারগ্রামে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ১৯৫ মিলিমিটার। এছাড়াও তোর্সাপাড়ের হাসিমারায় ১৯১ মিলিমিটার এবং বক্সা পাহাড়ে ১৫৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। কালিম্পং ও দার্জিলিং পাহাড়ে বৃষ্টি হয়নি। হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হয়েছে আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার এবং জলপাইগুড়িতে।

Advertisement

 

[আরও পড়ুন: মাঝ আকাশে বিমান, সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে দৌড়তে শুরু করলেন যাত্রী! তার পর?]

কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের সিকিম কেন্দ্রের অধিকর্তা গোপীনাথ রাহা বলেন, “ঘূর্ণিঝড় রেমাল গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছিল। সেটা দুর্বল হয়ে হারিয়ে যেতে বসায় দখিনা বাতাস সক্রিয় হয়েছে। কয়েকদিন উত্তরের পাহাড়-সমতলে ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ চলবে। কিন্তু তিস্তার যে পরিস্থিতি দেখছি সেটা খুবই উদ্বেগের কারণ হয়েছে।” আবহাওয়া দপ্তরের কর্তারা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সিকিমে তেমন বৃষ্টি হয়নি। বিকেলের পর উত্তর সিকিমের মঙ্গনে ৫০ মিলিমিটার এবং গ্যাংটকে ২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। তারই ধাক্কা সামলাতে পারছে না গত বছর হড়পা বানে মজে যাওয়া সেখানকার ছোট বড় কোনও নদী। কানাকা নদী ফুসে ওঠায় জংগু টিংভং বুস্টির সঙ্গে সংযোগকারী মানতাম সেতু ভেসেছে। তিস্তা ফুসে ওঠায় প্রশাসনের তরফে লাচেন, চুংথাং এবং মঙ্গন এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক করা হয়েছে। মঙ্গলবার নামচি জেলা কালেক্টর অন্নপূর্ণা আলি তিস্তা নদী সংলগ্ন মেল্লি এলাকা ঘুরে দেখেন। সঙ্গে ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার মনিকা রাই, জলসম্পদ বিভাগের ইঞ্জিনিয়ার-সহ আরও অনেকে। স্থানীয় বাসিন্দারা নদীর উথাল-পাতাল পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। নিরাপত্তার দাবি জানান। মঙ্গলবার বৃষ্টির সময় উত্তর সিকিমে মঙ্গন জেলার টুং-এর কাছে পাহাড়ে থেকে গড়িয়ে গাড়ির উপরে বোল্ডার পড়ে পর্যটক জখমের খবর মিলেছে। জখম পর্যটকদের মঙ্গন জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। জানা গিয়েছে, লাচেন, চুংথাং এবং মঙ্গন জেলায় ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ওই কারণে তিস্তা নদীর কাছাকাছি বসবাসকারীদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

[আরও পড়ুন: ‘অল আইজ অন রাফা’, সোশাল মিডিয়ায় হঠাৎ কেন ট্রেন্ডিং এমন বাক্য?]

এদিকে আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাত থেকে ১ জুন পর্যন্ত উত্তরের কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়িতে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এখানে ৭০ থেকে ২০০ মিলিমিটার বর্ষণের ‘কমলা’ সতর্কতা জারি হয়েছে। দার্জিলিং, কালিম্পং জেলায় রয়েছে ভারী বর্ষণের ‘হলুদ’ সতর্কতা। ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণের সঙ্গে ঘন্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝোড়ো হওয়ার দাপট থাকবে। দার্জিলিং এবং কালম্পিং জেলায় ৭০ থেকে ১১০ মিলিমিটার ভারী বৃষ্টির সঙ্গে ঘন্টায় ৩০ থেকে ৫০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝোড়ো হওয়া বইতে পারে। অন্যদিকে পলি জমে নদীবক্ষ প্রায় দেড় মিটার উঁচু হয়ে ওঠায় সমতলেও তিস্তা ফুলেফেঁপে উঠছে। জলস্তর বেড়ে নদী সংলগ্ন এলাকায় ঢুকেছে। অববাহিকায় অতিভারী বর্ষণ হলে কি পরিস্থিতি দাঁড়াবে সেটাই এখন বড় চিন্তার কারণ হয়েছে জলপাইগুড়ি ও কোচবিহার জেলা সেচ দপ্তরের কর্তাদের।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement