Advertisement
Advertisement

Breaking News

Royal Bengal Tiger

হিংস্র নয়, জিনাতের ‘প্রেমিক’ দক্ষিণবঙ্গের গর্ব! ব্যাঘ্র অভিযান বন্ধের সিদ্ধান্ত বনদপ্তরের

ঠিক কী বলছে বনদপ্তর?

Forest department hints to stop search operation for Royal Bengal Tiger
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:January 29, 2025 1:59 pm
  • Updated:January 29, 2025 1:59 pm  

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: চলতি মাসে জিনাতের বর্তমান আবাসস্থল সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পেই চোরাশিকারিদের হানায় মৃত্যু হয়েছিল বিরল কালো বাঘের। গত ২৪ জানুয়ারিও কেরলের ওয়ানাডে শরীরে গভীর আঘাতের কারণে এক বাঘিনীর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু বাংলায় উল্টো ছবি। প্রায় একমাস পরেও বাংলায় দিব্যি পদচারণা জিনাত-সঙ্গী রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের। লোকালয়ে এসে গবাদি পশু হামলা তো দূর। মানুষকে এড়িয়ে যাচ্ছে এই বাঘ। এদিকে গত ৭ বছর আগে, ২০১৮ সালে ঝাড়গ্রামের লালগড়ের নৃশংস স্মৃতি ভুলে ঝাড়খণ্ড থেকে ঢুকে পড়া রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারকে রীতিমতো আগলে রাখেছে বনমহল। তাই অরণ্য ভবন এই বাঘকে ‘দক্ষিণবঙ্গের গর্ব’ বলে প্রচার করে ব্যাঘ্র অভিযান বন্ধ করল।

প্রায় একমাস জুড়ে বাঘের পদচারণায় রাজ্যের বনবিভাগ বলছে, জঙ্গলমহলের তিন জেলা পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম বনাঞ্চল মধ্য ভারতের মতোই ‘টাইগার টেরিটরি’তে রূপ নিয়েছে। ৩১শে ডিসেম্বর থেকে ২৮ জানুয়ারি। এই ২৯ দিনে ছোটনাগপুর মালভূমির কখনও ঝাড়খণ্ড, কখনও বাংলায় পদচারণা জিনাত প্রেমিকের। এক রাতে ১৫-১৬ কিমি হাঁটছে এই বাঘ। এখনও পর্যন্ত চারটে গবাদি পশু ও একটা বাছুর হত্যা করেছে। তার মধ্যে পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের রাইকা পাহাড়তলির ভাঁড়ারি জঙ্গলে পরপর তিনটে গবাদি পশুর মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনাকে জিনাত-সঙ্গীর শিকার নয় বলে দাবি করে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের বিশেষজ্ঞরা। ফলে লোকালয়ে এসে গবাদিপশুর যেমন ক্ষতি করছে না। তেমনই মানুষকেও এড়িয়ে যাচ্ছে এই বাঘ। বাংলা-ঝাড়খণ্ড মিলিয়ে বাঘের প্রত্যক্ষদর্শীরা সকলেই বলছেন, এই রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার হিংস্র নয়।

Advertisement

কিন্তু প্রশ্ন লোকালয়ে শিকার না করে কীভাবে পেট ভরাচ্ছে জিনাত প্রেমিক? বনদপ্তর জানিয়েছে, মূলত জঙ্গলের বন্য শূকর শিকার করেই তার আহার চলছে। তাই আপাতত বনবিভাগ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতেই স্থির থাকছে। অর্থাৎ কোনও বাঘ-বন্দি অভিযান হবে না। রাজ্যের বনবিভাগ যুক্তি দিয়ে বুঝিয়ে দিচ্ছে, এই জঙ্গলমহলে বনাঞ্চল বৃদ্ধি পাওয়ার কারণেই বাঘেরও আবাসস্থল হয়ে গিয়েছে এই বনমহল। জঙ্গলের ভিতরেই বাঘের খাদ্য তালিকায় থাকা বন্য শূকর, হরিণ রয়েছে। রয়েছে পানীয় জলের জন্য ঝোরা। তাই জিনাত প্রেমিক যেমন ওই বাঘিনীকে খুঁজে বেড়াচ্ছে তেমনই এই ছোটনাগপুর মালভূমি এলাকা থেকে নড়তে চাইছে না। বাঘ-বন্দি অভিযানের তত্ত্বাবধানে থাকা তথা রাজ্যের মুখ্য বনপাল (পশ্চিম চক্র) সিঙ্গরম কুলানডাইভেল বলেন, “এই রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার মানুষকে এড়িয়ে যাচ্ছে। লোকালয়ে এসে গবাদি পশুর যেমন ক্ষতি করছে না তেমনই মানুষজনদের উপর কোন হামলা নেই। এই বাঘ জঙ্গলে থাকুক। আমরা আপাতত কোন বাঘ-বন্দি করব না। আপাতত অভিযান বন্ধ। শুধু নজরদারি চলবে। সেই সঙ্গে সচেতনতার প্রচার। বাংলার পশ্চিমাঞ্চলের জঙ্গল মধ্য ভারতের মতোই হয়ে উঠেছে। তাই বাঘের আদর্শ আবাসস্থল। একেবারে ‘টাইগার টেরিটরি’। তাই এই বাঘ ‘দক্ষিণবঙ্গের গর্ব’। জঙ্গলমহলের তিন জেলার মধ্যেই একটি নিরাপদ এলাকা খুঁজছে এই বাঘ। তাই প্রতি রাতে তার পদচারণা।”

রাইকা পাহাড়তলির পাশে রাহামদা গ্রামের বাসিন্দা বাবুরাম শবর, লক্ষ্মণ শবর বলেন, “বাঘ যদি আমাদের কোনও ক্ষতি না করে তাহলে এই রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার রাইকা পাহাড়ে থাকুক।” বান্দোয়ান-কুইলাপাল রাস্তায় এই ব্যাঘ্র দর্শন করা বান্দোয়ানের জানিঝোর গ্রামের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী যুধিষ্ঠির মাহাতো বলেন, “এই বাঘ মানুষখেকো নয়। আমি ভরসন্ধ্যায় ওই বন্যপ্রাণ-র মুখোমুখি হয়ে তার পাশ দিয়ে মোটরবাইক নিয়ে চলে গিয়েছিলাম। আমাকে চোখ দিয়ে দেখা ছাড়া কোনও ক্ষতি করেনি।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
News Hub