Advertisement
Advertisement
Farakka

ফরাক্কা ধর্ষণ-খুন: সাজায় খুশি নির্যাতিতার পরিবার, ‘ফাঁসি নয়’, আর্তি মৃত্যুদণ্ড পাওয়া যুবকের মায়ের

একজনের ফাঁসি ও আরেকজনের যাবজ্জীবন সাজা শুনিয়েছেন বিচারক।

Family of Farakka deceased satisfied with Court Verdict

ফরাক্কা ধর্ষণ-খুনে মৃত্যুদণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত দীনবন্ধু হালদার (বামদিকে) এবং যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত শুভজিৎ হালদার (ডানদিকে)। নিজস্ব চিত্র।

Published by: Paramita Paul
  • Posted:December 14, 2024 3:48 pm
  • Updated:December 14, 2024 3:50 pm  

শাহজাদ হোসেন, ফরাক্কা: মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা রেল কলোনিতে নাবালিকাকে অপহরণ, ধর্ষণ, খুন ও প্রমাণ লোপাটে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে দুজন। তাদের মধ্যে একজনের ফাঁসি ও আরেকজনের যাবজ্জীবন সাজা শুনিয়েছেন বিচারক। এজলাসে যখন বিচারক সাজা শোনাচ্ছিলেন, বাড়ির মেয়ে যখন সুবিচার পাচ্ছে তখন কান্নায় ভেঙে পড়ে ফরাক্কার পরিবার। বাবা বললেন, “আমার মেয়ের আত্মা হয়ত শান্তি পাবে। এমন পাশবিক ঘটনার শিকার কোনও মেয়ে না হয়। আর আমার মত হতভাগ্য বাবা, মা যেন কেউ না হন।”

“ছেলে তো অন্যায় করেছে। তার শাস্তি হোক। তবে মৃত্যুদণ্ড চাইনি।” ফরাক্কা রেল কলোনির নাবালিকাকে ধর্ষণ ও খুনের মামলায় দীনবন্ধু হালদারের ফাঁসির সাজা শুনে আদালত চত্বরে কেঁদে উঠলেন বৃদ্ধা মা রেবতী হালদার। অন্যদিকে যাবজ্জীবন সাজা পাওয়া শুভজিৎ হালদারের পরিবারের দাবি মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে তাকে। শুক্রবার সন্ধেয় আদালত চত্বরে দীনবন্ধু হালদারের মা রেবতীদেবী বললেন, “প্রাণ ভিক্ষা দিন। মা কখনও ছেলের মৃত্যুদণ্ড চায় না।” বউমা ও দুই নাবালক নাতির মুখের দিকে তাকিয়ে ছেলের প্রাণভিক্ষার দাবি জানিয়ে উচ্চ আদালতে দ্বারস্থ হবেন।

Advertisement

শুক্রবার সকাল বেলায় ছেলের রায় শোনার অপেক্ষায় জঙ্গিপুর মহকুমা আদালতে হাজির হয়েছিলেন রেবতীদেবী। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দীনবন্ধুর স্ত্রী বিশাখা হালদার ও তাঁর আড়াই বছরের শিশু সন্তান। জিয়াগঞ্জ থেকে এসেছিলেন দীনবন্ধুর শ্বাশুড়ি লক্ষ্মী বিশ্বাসও। সেই খবর শোনামাত্র বৃদ্ধা রেবতী হালদার কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি জানান, “ছেলে শাস্তি হোক। ফাঁসি চাই না। আমরা গরিব মানুষ। পরের বাসায় পরিচারিকার কাজ করে খাই। দীনবন্ধু একমাত্র সন্তান। ওর স্ত্রী রয়েছে। ১৬ বছরের ছেলে আছে। আর একজনের বয়স আড়াই বছর। দীনবন্ধু মাছ বিক্রি করত। ছেলে ভুল করেছে।” স্বামীর অপরাধের সাজা ঘোষণা শোনার জন্য আড়াই বছরের শিশু পুত্রকে কোলে নিয়ে আদালত চত্বরে ছিলেন দীনবন্ধু হালদারের স্ত্রী বিশাখা। তিনি জানান, “স্বামী অপরাধ করেছে। ওর শাস্তি হওয়া উচিত। তবে, স্বামীর প্রাণভিক্ষার আবেদন নিয়ে উচ্চআদালতের দ্বারস্থ হব।”

এদিকে, ভাইয়ের সাজা শোনার অপেক্ষায় সকাল বেলায় ফরাক্কা ব্লকের রেল কলোনি মাঠপাড়া থেকে মা চন্দনা হালদারকে সঙ্গে নিয়ে আদালত চত্বরে হাজির হয়েছিলেন শুভজিতের দাদা জয়ন্ত হালদার। এই যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণার পরে কিভাবে সংসার চালবে তা বুঝে উঠতে পারছেন না তিনি। ঠিক তেমনি ভাইয়ের জন্য তাঁদের উচ্চ আদালতে যাওয়ার মতো সামর্থ্য নেই বলেও জানান তিনি। জয়ন্ত জানায়, “ভাই শুভজিৎ নির্দোষ। ওর সঙ্গে দীনবন্ধুর আগে কোনও পরিচয় ছিল না। মাস কয়েক আগে ফরাক্কা এনটিপিসিতে কাজে গিয়ে দীনবন্ধুর সঙ্গে পরিচয় হয় ওর। পরে আমরা শুনলাম এক নাবালিকাকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় দীনবন্ধুর সঙ্গে ভাই জড়িত।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement