Advertisement
Advertisement
Durga Puja 2024

বড়র প্রতিযোগিতায় নয়, ‘সবচেয়ে ভারী দুর্গা’ তৈরি করে তাক লাগাবে এই পুজো

সোনা-রুপো মিলিয়ে প্রায় ১৪ কেজির গয়না পরানো হবে দুর্গাকে, বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে অলংকার পরানোর কাজ।

Durga Puja 2024: Heaviest Durga idol of 1500 kg, claims a committee in Barrackpore
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:October 3, 2024 8:02 pm
  • Updated:October 3, 2024 9:46 pm

অর্ণব দাস, বারাকপুর: বছর দশেক আগে দেশপ্রিয় পার্ক শামিল করেছিল বড় দুর্গার প্রতিযোগিতায়। কী প্রতিমা, কী মণ্ডপ – টেক্কা দেওয়ার ‘সেই ট্র্যাডিশন সমানে চলিতেছে’। এবছরও বড় দুর্গা গড়ে পুজোর উদ্যোগ নেওয়া সত্ত্বেও আইনি জটে আটকেছে রানাঘাটের অভিযান সংঘ। এনিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের মামলা চলছে এখনও। এসবের মাঝে চমক দিতে ‘সবচেয়ে ভারী দুর্গা’ তৈরি করে ফেলল বারাকপুরের এক পুজো কমিট। অন্তত দাবি এমনই। ফেলে দেওয়া, বাতিল হওয়া লোহা দিয়ে তৈরি এই পুজো কমিটির প্রতিমার ওজন দেড় হাজার কেজির বেশি। প্রতিমা তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে অষ্টধাতু।

বারাকপুরের সুকান্ত সরণি ও পূর্ব তালবাগান দুর্গোৎসব কমিটি তৈরি করে ফেলেছে সবচেয়ে ভারী দুর্গা। নোনাচন্দন পুকুর এলাকার ৩৭তম বর্ষের এই পুজো পরিবেশ সচেতনতার বার্তা দিতে বিশ্ব উষ্ণায়নের ভয়াবহতা তুলে ধরেছে। থিমের নাম ‘স্পন্দন’। প্লাই, ফাইবার দিয়ে তৈরি পুজো মণ্ডপের প্রতিটি কোনায় পরিবেশ সচেতনতার বার্তা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। যেহেতু প্রকৃতিকে নিয়ে ভাবনা, তাই পরিবেশবান্ধব প্রতিমা তৈরি ছিল পুজো কমিটির মূল উদ্দেশ্য।

Advertisement
ফেলে দেওয়া, বাতিল হওয়া লোহা দিয়ে তৈরি প্রতিমার ওজন দেড় হাজার কেজির বেশি। নিজস্ব চিত্র।

একইসঙ্গে প্রতিমাকে ফোকাসে রেখে এবছর পুজো করছেন উদ্যোক্তারা। গতবারের শিল্পী হাবড়ার বাণীপুরের বাসিন্দা ইন্দ্রজিৎ পোদ্দারকে জানানো হয় নিজেদের পরিকল্পনার কথা। জুন মাস থেকে শুরু হয় প্রতিমা তৈরির কাজ। প্রথমে জোগাড় করা হয় ফেলে দেওয়া সাইকেলের চেন, গ্যাসের বার্নার, তালা, অব্যবহৃত মেশিনের অংশ, লোহার জাল। সেগুলি দিয়েই শক্ত ডাইসের মধ্যে লোহার কাঠামো তৈরি করা হয়। তার পর মা দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশের অবয়ব তৈরি করা হয় বিভিন্ন ফেলে দেওয়া ধাতুর জিনিসকে কাজে লাগিয়ে। সেই অবয়ব প্রতিস্থাপন করে শেষ হয়েছে রঙের কাজ।

বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে প্রতিমাকে অলংকার পরানোর কাজ। সোনা-রুপো মিলিয়ে প্রায় ১৪ কেজির গয়না পরানো হবে। পরিমাণে কম হলেও প্রতিমা তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে সোনা। এছাড়াও ব্যবহার করা হয়েছে রুপো, তামা, দস্তা, পিতল, ব্রোঞ্জ, অ্যালুমিনিয়াম। তবে বেশি ব্যবহার রয়েছে লোহার ফেলে দেওয়া বিভিন্ন জিনিস। পুজোর কর্মকর্তা জয়দীপ দাসের কথায়, “দেড় হাজার কেজির বেশি ওজনের ধাতু প্রতিমা তৈরির জন্য আনা হয়েছিল। ঝালাইয়ের পর ওজন আরও বেড়েছে। উচ্চতা ১১ফুট, তার উপরে চালচিত্র, চওড়ায় ১৬ফুট। আমরা মনে করি, এত ভারী ওজনের প্রতিমা কেউ তৈরি করেনি।” শিল্পী ইন্দ্রজিৎ পোদ্দার জানিয়েছেন, ”মা দুর্গার মুখ ও হাত তামার তৈরি। মায়ের অলংকার সোনার। লক্ষ্মীর মুখ পিতলের, সরস্বতীর মুখ দস্তার, গণেশের মুখ রুপোর আর কার্তিকের মুখ ব্রোঞ্জের। আমি আগে দশ কোটির হীরের দুর্গা তৈরি করেছি। কিন্তু এটি আমার জীবনের সেরা প্রতিমা। পুজোর পরে কেউ চাইলে প্রতিমা সংরক্ষণ করতে পারেন।”

ব্যবহার করা হয়েছে রুপো, তামা, দস্তা, পিতল, ব্রোঞ্জ, অ্যালুমিনিয়াম। নিজস্ব চিত্র।

প্রসঙ্গত, প্রথম সবচেয়ে বড় দুর্গা তৈরি হয়েছিল ২০১৫ সালে। কলকাতার দেশপ্রিয় পার্ক সেবছর ৮৮ ফুটের দুর্গা বানিয়ে চমকে দিয়েছিল। তার পর থেকে শুরু হয় সবচেয়ে বড় দুর্গা তৈরির প্রতিযোগিতা। এবছরও রানাঘাটের ১১২ ফুটের দুর্গা প্রতিমা তৈরি নিয়ে সরগরম রাজ্য। এরই মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটির শহিদ কলোনির ১০০ ফুটের বেশি দুর্গার আদলে মণ্ডপ নিয়েও চর্চা শুরু হয়েছে। এর পর পার্শ্ববর্তী বারাকপুরের সুকান্ত সরণি ও পূর্ব তালবাগান দুর্গোৎসব কমিটির দেড় হাজার কেজি ওজনের ‘সবচেয়ে ভারী দুর্গা’ তৈরির দাবি নতুন করে চর্চায় উঠে এসেছে।

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement