সৈকত মাইতি, তমলুক: ট্রেন লেট, তাই সুদূর রাজস্থান থেকে প্রেমিকার বিয়ে রুখতে ছুটে এসেও লাভ হল না। বাধ্য হয়ে প্রেমিকাকে ফিরে পেতে থানার দ্বারস্থ হলেন যুবক। কিন্তু, ওই যে কপাল, ভাগ্য সঙ্গ না দিলে কী উপায়! প্রেমিকা নাবালিকা, তাই পুলিশের কাছে গিয়ে উলটে ভর্ৎসিত যুবক। তমলুকের খারুই পঞ্চায়েত এলাকার এই ঘটনা রীতিমতো শোরগোল ফেলে দিয়েছে গোটা জেলায়।
ব্যাপারটা ঠিক কী? তমলুক থানার খারুই ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের জয়রামচক গ্রামের বাসিন্দা কমলেশ চন্দ্র। বছর তেইশের এই যুবকের সঙ্গে বছর দেড়েক আগে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয় পাশের আলুয়াচক গ্রামের এক নবম শ্রেণির ছাত্রীর। প্রেমিকের বাড়িতে অবাধ যাতায়াত ছিল নাবালিকার। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তাদের এই প্রেম ধীরে ধীরে পরিণতির দিকে এগোচ্ছিল। কিন্তু বাদ সেধেছিল নাবালিকার বয়স। এরপরই প্রেমিকার কাছে সময় চেয়ে কাজের জন্য রাজস্থানে পাড়ি দেয় ওই যুবক। চোখে ছিল অনেক স্বপ্ন। আচমকা একটা ফোনেই যেন তাঁর মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে। হঠাৎ কমলেশ জানতে পারেন, পরিবারের লোকজন জোর করে বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে প্রেমিকার। সঙ্গে সঙ্গে ট্রেনে ওঠেন তিনি। কিন্তু বিধি বাম, ট্রেন গন্তব্য স্টেশনে পৌঁছতে বেশ কিছুটা দেরি করে। ততক্ষণে অন্যের সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়ে যায় নাবালিকা।
এরপর সুবিচার পেতে মঙ্গলবার দুপুরে মা লক্ষ্মী চন্দ্রকে সঙ্গে নিয়েই তমলুক থানার দ্বারস্থ হয়েছিলেন যুবক। কিন্তু সেখানেও জুটল ধমক। নাবালিকা স্কুল ছাত্রীর সঙ্গে কীভাবে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠল, সেই প্রশ্ন তুললেন অফিসার। তাতে অসহায়ের মতো কান্নায় ভেঙে পড়েন যুবক। জানান, নাবালিকা হলেও মেয়েটির কাছ থেকেই প্রথম প্রেমের প্রস্তাব পেয়েছিলেন তিনি। কোনওরকম আইনি সাহায্য না পেয়ে হতাশ ওই যুবক। যদিও এ বিষয়ে তমলুক থানার আইসি সুভাষচন্দ্র ঘোষ বলেন, এমন কোনও অভিযোগ পাননি। এদিকে তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের বিডিও রথীনচন্দ্র দে-ও বলেন, “নাবালিকার বিয়ে সংক্রান্ত এমন কোনও অভিযোগ নেই। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.