দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: পিকনিক করতে এসে উস্তির হাইটেনশন তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তিনজনের মৃত্যুর ঘটনার পূর্ণ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপের হালদার চকে প্রশাসনিক বৈঠক থেকে এই নির্দেশ দেন তিনি।
রবিবার ছুটির দিনে আত্মীয়ের বাড়ির কাছে একটি বেসরকারি স্কুলের ছাদে পিকনিক করার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় তিনজনের। পুলিশ সূত্রে খবর, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃতদের মধ্যে দু’জন বাবা-ছেলে। উস্তি থানার বানেশ্বরপুরের এই ঘটনায় যথেষ্ট ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার কাকদ্বীপের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যেকোনো মৃত্যুর ঘটনা দুঃখজনক। হাইটেনশন তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত হবে। সমস্ত স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও হাপাতালের উপর সকলকে নজর রাখতে হবে। যেন কোনওভাবে হাইটেনশন তার সেই সমস্ত ভবনের উপর দিয়ে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। যে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও হাসপাতালের উপর দিয়ে গিয়েছে সেগুলি দ্রুত সরিয়ে দিতে হবে।” বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মীদের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী। ওই স্কুলের উপর দিয়ে পাঁচটি হাইটেনশন তার গিয়েছে তা কেন খেয়াল করেনি বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মীরা, সেই প্রশ্ন তোলেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। এই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেন তিনি।
রবিবার ছুটির দিন থাকায় মগরাহাটের মামুদপুর থেকে একই পরিবারের কয়েকজন মিলে বানেশ্বরপুরে এক আত্মীয়ের বাড়ির কাছেই বেসরকারি স্কুলে পিকনিক করছিলেন। পিকনিক চলাকালীনই স্কুলের ছাদে উঠে যান কয়েকজন। এদিকে বাড়ির ছাদের উপর দিয়ে গিয়েছে বিদ্যুতের হাইটেনশন তার। পিকনিকে যখন খাওয়া-দাওয়ার তোড়জোড় চলছিল তখন ছাদে হইহুল্লোড়ের মাঝে কোনওভাবে সেই তারে হাত লেগে যায় রেজাউল মোল্লা এবং গফ্ফর মোল্লা। ছেলে রেজাউল ও ভাইপো গফ্ফরকে বাঁচাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন মফিজুল মোল্লা নামে এক ব্যক্তি। তিনজনকেই উদ্ধার করে বানেশ্বরপুর হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসকরা রেজাউল ও গফ্ফরকে মৃত ঘোষণা করেন। অত্যন্ত সংকটজনক অবস্থায় মফিজুলকে ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। তবে অবস্থার দ্রুত অবনতি হওয়ায় তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। সেখানেই মারা যান তিনি। তিনজনের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য করা হবে বলে জানানো হয়েছে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় অনিচ্ছুক খুনের মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.