টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: ভোট বড় বালাই। জনসংযোগে বেরিয়ে প্রার্থীদের কত কিছুই না করতে হচ্ছে। প্রচারে বেরিয়ে কেউ বাজার করছেন। আবার কেউবা ভোটারদের হেঁশেলে ঢুকে রান্না করছেন। তো কেউ সেলুনে ঢুকে চুল কেটে দিয়েছেন। এবার ভোটপ্রচারে চমক দিলেন বাঁকুড়ার বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকার। হুডখোলা গাড়িতে বসে নিজেই নিজের জুতো পালিশ করলেন তিনি।
রবিবার বি আর আম্বেদকরের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বাঁকুড়ার মাচানতলা থেকে লালবাজার পর্যন্ত বিশেষ র্যালি ছিল। তাতেই অংশ নেন বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকার। পা মেলান দলিতরাও। হুডখোলা গাড়িতে চড়ে জনসংযোগ সারেন বিজেপি প্রার্থী। হঠাৎই তিনি নিজের জুতো হাতে তুলে নেন। হুডখোলা গাড়িতে বসেই ব্রাশ দিয়ে জুতো পালিশ করতে শুরু করেন। যা দেখে আশপাশের লোকজনেরা খানিকটা বিস্মিত হয়ে যান।
কিন্তু কেন হঠাৎ ভোটপ্রচারে বেরিয়ে জুতো পালিশ করলেন সুভাষ সরকার? তাঁর দাবি, ‘‘শোভাযাত্রায় জুতো পালিশের মধ্যে দিয়ে বাঁকুড়ার মানুষকে বিআর অম্বেডকরের জীবনের দর্শন বোঝাতে চেয়েছি। আম্বেদকর অত্যন্ত নিম্নশ্রেণির একটি পরিবার থেকে উঠে এসেছিলেন। অনেক লড়াই, অত্যাচারের মাঝে বড় হয়েও লক্ষ্য স্থির থাকায় তিনি সংবিধান রচনার মতো মহান গুরুদায়িত্ব পালন করেছেন। তাই মানুষ যে পেশা বা যে কাজই করুন না কেন, দক্ষতা থাকলে সব কাজেরই মর্যাদা সমান। দক্ষতা থাকলে যিনি জুতো পালিশ করেন তাঁর মর্যাদা যে কোনওভাবে একজন চিকিৎসক বা আইনজীবীর তুলনায় কম নয়, জুতো পালিশের মধ্য দিয়ে আমি তাই বোঝাতে চেয়েছি।’’
তবে সুভাষ সরকারের যুক্তি শুনতে নারাজ তৃণমূল। ভোটের মুখে জুতো পালিশ নিছক প্রচার কৌশল ছাড়া কিছু নয় বলেই দাবি শাসক শিবিরের। নিজের প্রতিদ্বন্দ্বীকে এই ইস্যুতে তোপ দেগেছেন তৃণমূল প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘সুভাষ সরকার জনগণকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছেন। আর এখন প্রকাশ্যে নিজের জুতো পালিশ করে নাটক করছেন। এসব নাটক করে কিন্তু ভোট বাড়ে না। সবাই নিজের নিজের কাজ করেন। প্রচারের জন্য এসব কাজের কোনও অর্থ নেই। উনি নিজের জুতোই পালিশ করেছেন। তাও জনগণের জুতো পালিশ করলে বলতাম, উনি অন্য পেশাকেও সম্মান করেন।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.