Advertisement
Advertisement
Bangladesh Protest

ভয়ে ঘুম ছুটেছে ছিটমহলের, বসিরহাটে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের গ্রামে বিএসএফের নজরদারি

সামনেই ১৫ আগস্ট, সেদিকে লক্ষ্য রেখেই কড়া করা হয়েছে নিরাপত্তা বেষ্টনী।

Bangladesh Protest: BSF vigilance in Indo-Bangladesh border in the village of Basirhat

ফাইল ছবি।

Published by: Biswadip Dey
  • Posted:August 7, 2024 9:26 am
  • Updated:August 7, 2024 12:41 pm

নিজস্ব সংবাদদাতা, বসিরহাট: ছাত্র আন্দোলনের (Bangladesh Protest) জেরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার (Sheikh Hasina)পদত‌্যাগ এবং তার পরবর্তী পরিস্থিতিতে কার্যত যুদ্ধের চেহারা নিয়েছে পড়শি বাংলাদেশ। সেই আসন্নসম্ভবা যুদ্ধের আঁচে ঘুম উড়েছে ‘ওদের’। ওদের মানে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বসবাসকারী ছিটমহলের বাসিন্দাদের। ছিটমহল হল এমন অঞ্চল বা ভূখণ্ড যা একটি স্বাধীন দেশের মূল ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকা অন্য কোনও স্বাধীন রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত এলাকা। বিশ্বের অনেক রাষ্ট্রের অভ্যন্তরেই অন্য দেশের এ ধরনের ছিটমহল রয়েছে। সেরকমই ছিটমহল রয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, মেঘালয়, অসম ও ত্রিপুরায়। যারা স্বাধীন দেশে থেকেও পর্যাপ্ত স্বাধীনতার অভাবে ভোগেন।

এরকমই বেশ কিছু ছিটমহল রয়েছে বসিরহাটের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায়। বসিরহাটের স্বরূপনগর ব্লকের কৈজুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের গাবরডাহ ও বালতি-নিত্যানন্দকাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের আমুদিয়ায় রয়েছে এমনই ছিটমহল। পাশাপাশি বসিরহাট (Basirhat) ১ নম্বর ব্লকের ইটিন্ডা-পানিতর গ্রাম পঞ্চায়েতের পানিতর গ্রামের বেশ কিছু এলাকাও ছিটমহলের অন্তর্ভুক্ত। এই সমস্ত এলাকাগুলিতে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষের বসবাস।

Advertisement

[আরও পড়ুন: সেনাশাসন নয়, ‘দেশ গড়তে’ ইউনুসকেই চাইছে বাংলাদেশের আন্দোলনকারীরা]

এমনিতেই পেটের তাগিদে কাজের জন‌্য তঁাদের বিএসএফের (BSF) কাছে অনুমতি নিয়ে সরকারি সচিত্র পরিচয়পত্র জমা দিয়ে তবেই ভারতের মূল ভূখণ্ডে ঢুকতে হয়। কিন্তু সোমবার কলকাতায় বিএসএফের ডিজি বৈঠক করে জানান, সীমান্ত এলাকায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীদের সংখ্যা বাড়ানো হবে তথা সীমান্তে থাকবে আঁটসাঁট নিরাপত্তা। যেন একটি মাছিও গলতে না পারে। এই অবস্থাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন সীমান্তের ছিটমহলের এই বাসিন্দারা।

পানিতর সীমান্তের ছিটমহলের এক বাসিন্দা তৌসিফ আহমেদ বলেন, ‘‘এমনিতেই বিএসএফের অনুমতি নিয়ে আমরা সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৫টা অবধি ভারতের মূল ভূখণ্ডে থাকতে পারি। যে কোনও পরিস্থিতিতে পাঁচটার মধ্যে আমাদের বাড়িতে ফিরে যেতেই হবে। নয়তো গেট বন্ধ হয়ে যায়। কোনওরকম আপৎকালীন পরিস্থিতি এলে সমস্যা আরও বাড়ে। কিন্তু বাংলাদেশের বর্তমান যা অবস্থা তাতে সীমান্ত প্রহরায় কড়াকড়ি আরও বাড়ানোয় আমাদের সীমান্ত দিয়ে যাতায়াত এক প্রকার বন্ধই হয়ে গিয়েছে।’’

[আরও পড়ুন: চৈনিক চালেই হাসিনার পতন, বাংলাদেশে ‘অভ্যুত্থানে’র নেপথ্যে ISI!]

যার সরাসরি প্রভাব পড়ছে তাদের জীবিকায়। কারণ যে কোনও ধরনের চাকরি বা ব্যবসা করতে গেলে তাদের ভারতের মূল ভূখণ্ডে প্রবেশ করতেই হবে। অন্যদিকে গাবরডাহ্ সীমান্তের ছিটমহলের এক বাসিন্দা পেশায় কৃষক ইউনুস মোল্লা বলেন, ‘‘ঝামেলা-গন্ডগোল তো হচ্ছে বাংলাদেশে। অথচ তার প্রভাব আমাদের উপর সরাসরি পড়ছে। আমরা প্রতিদিন সকালে ফসল কেটে সেই সবজি বাজারে বিক্রি করতে নিয়ে যাই। কিন্তু অত্যন্ত কড়া নিরাপত্তার জেরে সেসব এখন বিশ বাঁও জলে।’’

এই ছবি শুধুমাত্র ছিটমহলগুলিতে নয়। বসিরহাটের বিভিন্ন সীমান্তে নিযুক্ত ১০২, ১৪৩ ও ৮৫ নং বিএসএফ জওয়ানদের বজ্র আঁটুনির কোপে পড়েছেন সীমান্তের কয়েক লক্ষ মানুষ। বসিরহাট মহকুমায় মোট ১৯২ কিলোমিটার বাংলাদেশের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সীমানা রয়েছে ভারতের। তার মধ্যে প্রাই ৯২ কিমি স্থল সীমান্ত ও বাকি ১০০ কিলোমিটার জল সীমান্ত।

বসিরহাটের স্বরূপনগর ব্লকের বিথারী, হাকিমপুর, তারালি, কৈজুড়ি, অন্যদিকে বাদুড়িয়া ব্লকের শায়েস্তানগ‍র ও বসিরহাট ১ নম্বর ব্লকের গাছা-খারপুর ও ইটিন্ডা-পানিতর গ্রাম পঞ্চায়েতের একাধিক গ্রামের বাসিন্দারা সীমান্ত এলাকায় যাতায়াত করতে যথেষ্টই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। কারণ সীমান্তরক্ষী বাহিনী বছরের অন্য সময়ের তুলনায় এই সময়ে নিরাপত্তায় জোর দিয়েছে। পাশাপাশি যেহেতু শেখ হাসিনা ভারতে রয়েছেন আর সামনেই ১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবস তার আগে বাংলাদেশ থেকে কোনওপ্রকার নাশকতার ছক নিয়ে কোনও আততায়ী বা জঙ্গি যাতে এদেশে প্রবেশ করতে না পারে সেটা সুনিশ্চিত করছে তারা।

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement