সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: অত্যাচারের জেরে শিশুমৃত্যুর ঘটনায় ধৃত ৩ বৃহন্নলাকে জেল হেফাজতে পাঠাল ঝাড়গ্রাম আদালত। তাদের কড়া শাস্তির দাবিতে সরব হন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, বেশ কয়েকমাস ধরেই শুধু প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতেই নয়, ঝাড়গ্রাম শহরেও বৃহন্নলাদের উৎপাত বাড়ছে। সাধারণ মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে দিন আনা দিন খাওয়া মানুষজনের উপরও চাপ দিয়ে তারা টাকা আদায় করে। এই পরিস্থিতিতে শিলদার ঘটনায় তাদের জারিজুরি ফাঁস হয়ে গ্রেপ্তারির পর যোগ্য শাস্তি দেওয়ার দাবি তুলছে আমজনতা।
বিনপুরের শিলদার বাসিন্দা চন্দন খিলারের সন্তান হয়েছে, এই খবর পেয়ে শুক্রবার তাঁর বাড়িতে যায় বৃহন্নলাদের একটি দল। চন্দনবাবুর দেড় মাসের সন্তান অসুস্থ থাকায় হাসপাতাল থেকে চিকিৎসার পর ওইদিনই বাড়ি ফিরেছে। বৃহন্নলাদের দল শিশুটিকে কোলে নিয়ে নানারকম অঙ্গভঙ্গি করতে থাকে। তাকে খিলার পরিবার শিশুর অসুস্থতার কথা বললেও, তারা কর্ণপাত করেনি বলে অভিযোগ। তাদের কোলে আস্তে আস্তে নিথর হয়ে পড়ে দেড় মাসের শিশু। মৃত্যু হয় তার। এরপরই থানায় অভিযোগ দায়ের করে খিলার পরিবার। তার ভিত্তিতে ৩ বৃহন্নলাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়ের হয়েছে। শনিবার তাদের ঝাড়গ্রাম আদালতে পেশ করা হয়।
আদালতে বৃহন্নলাদের পক্ষে আইনজীবী অভিযোগে যথার্থতা নেই, যুক্তি দেখিয়ে তাদের জামিনের আবেদন করেন। কিন্তু দু’পক্ষের সওয়াল-জবাবের পর জামিনের আবেদন খারিজ হয়। বিচারক তাদের তিনজনকে জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ঘটনার পর সরব হন স্থানীয় বাসিন্দারা। বৃহন্নলাদের অত্যাচারের জেরে শিশুমৃত্যুর ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে শহরেও।
প্রত্যন্ত এলাকা থেকে শহরবাসী – সকলের একটিই অভিযোগ। দিন দিন বৃহন্নলাদের অত্যাচার বাড়ছে। নবজাতককে আশীর্বাদের নাম করে চাপ দিয়ে অভিভাবকদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা আদায়ে তারা ক্রমশই বেপরোয়া হয়ে উঠছে। এমনকী মানুষের আর্থিক পরিস্থিতিও বিবেচনা করছে না। একেবারে দরিদ্র মানুষের বাড়িতে হাজির হয়ে তাঁর থেকেও দাবিমতো টাকা আদায় করছে। প্রতিবাদ করলে হুমকি, কুকথা, অশালীন আচরণও তারা করে বলে অভিযোগ উঠছে। এদের অত্যাচারে সাধারণ মানুষ জর্জরিত বলে কার্যত অসহায়তা প্রকাশ করেছেন। শিলদার ঘটনার পর তাঁরা একযোগে দাবি তুলেছেন, এঁদের কড়া শাস্তি হোক। বন্ধ হোক এভাবে জোর করে টাকা আদায়ের সংস্কৃতি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.