Advertisement
Advertisement

Breaking News

Bangladesh

নিষিদ্ধ না হলে ভোটে লড়বে আওয়ামি, নির্বাচন কমিশনের ঘোষণায় এবার ফন্দি আঁটবেন ইউনুস?

আওয়মিকে নিষিদ্ধের দাবি তুলেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাও।

Awami League of Bangladesh may able participate in general election
Published by: Suchinta Pal Chowdhury
  • Posted:December 30, 2024 7:14 pm
  • Updated:December 30, 2024 7:33 pm  

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঢাকা: বাংলাদেশের ভোটযুদ্ধে নামতে বাধা নেই শেখ হাসিনার দল আওয়ামি লিগের। এমনটা আগেই জানিয়ে দিয়েছিল নির্বাচন সংস্কার কমিশন। এবার ফের একবার মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন জানিয়ে দিলেন, যদি আওয়ামিকে আদালত বা সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণা না করে তাহলে তারা নির্বাচনে লড়তে পারবে। স্বাভাবিকভাবেই হাসিনার দলকে নিয়ে ঘোর আপত্তি রয়েছে বিএনপি, জামাতের। আওয়মিকে নিষিদ্ধের দাবি তুলেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাও। এই পরিস্থিতিতে বিশ্লেষকদের প্রশ্ন, এবার কি নতুন কোনও ফন্দি আঁটবে মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকার? কারণ তারাও রাজনীতির ময়দানে দেখতে চায় না হাসিনার দলকে। 

চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি নির্বাচন হয়েছিল বাংলাদেশে। বিপুল ভোটে জয়লাভ করে সরকার গড়ে আওয়ামি লিগ। তারপর পদ্মা দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে। আট মাসের মধ্যে ৫ আগস্ট জনরোষে পতন ঘটে হাসিনা সরকারের। এখন মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে দ্রুত ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি তুলছে বিএনপির মতো একাধিক রাজনৈতিক দল। সংশয় রয়েছে আওয়ামি লিগের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা নিয়ে। কিন্তু সোমবার চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে ‘ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন’ উপলক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তর কথা জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) নাসির উদ্দিন।

Advertisement

এদিন আওয়ামি লিগ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, “ডান-বাম বা বহির্বিশ্বের কোনও চাপ এখন নেই। তারা এখন বিবেকের চাপে আছে। এ দেশে ভালো নির্বাচন করাও সম্ভব, খারাপ নির্বাচন করাও সম্ভব। যদি সরকার বা আদালত নিষিদ্ধ ঘোষণা না করে, তবে সেই দলের রেজিস্ট্রেশন নির্বাচন কমিশন বাতিল করতে পারে না। এটা রাজনৈতিক বা আদালতের সিদ্ধান্ত।” বিগত নির্বাচন কমিশনকে শাস্তির আওতায় আনার চিন্তাভাবনা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এটা নির্বাচন সংস্কার কমিশনের বিষয়। এখনও আমরা সুপারিশনামা পাইনি। তবে কমিশনের পক্ষ থেকে এ ধরণের কোনও চিন্তা করা হচ্ছে না। আমরা এখন ভোটারদের আস্থাহীনতা দূর করতে চাই। এই জন্য বাড়ি বাড়ি যাওয়ার পরিকল্পনা আছে। আশা করা যাচ্ছে, ছয় মাসের মধ্যে এই কাজ শেষ করতে পারা যাবে। ভোটার তালিকা থেকে যারা বাদ পড়ে গিয়েছে তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এবারের নির্বাচন আগের মতো হবে না। এ জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে এবং সবার সহযোগিতা লাগবে।”

গত সপ্তাহেই মহম্মদ ইউনুসের নির্বাচন সংস্কার কমিশন জানিয়েছিল, ‘আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে আওয়ামি লিগের কোনও বাধা নেই। সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে এবারের নির্বাচন উৎসবমুখর হবে। এজন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে কোনও ধরণের বাধা দেওয়া হবে না। আমরা চাই, একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন। আমি আশা করি সব দল নির্বাচনে অংশ নেবে।’ কিন্তু এই ঘোষণার পরই তেড়েফুঁড়ে ওঠেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। তাদের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা জানিয়ে দেন, আওয়ামি লিগ বাংলাদেশে একাধিক গণহত্যার জন্য দায়ী। কোনওভাবেই আওয়ামি লিগ যাতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারে তার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ করতে হবে সরকারকে। এখানেই প্রশ্ন ওঠে, এই ছাত্রনেতারাই হাসিনার পতনের মধ্যে দিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছিলেন। অথচ তাঁরাই একটা রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না দেওয়ার ডাক দিচ্ছেন। এটা কি স্বৈরতন্ত্র নয়?

এদিকে, আওয়ামি লিগের ভোটযুদ্ধে নামা নিয়ে আপত্তি রয়েছে বিএনপি-জামাতেরও। কারণ হাসিনাহীন বাংলাদেশ ক্ষমতা দখল করতে চায় তারা। বিশ্লেষকদের মতে, ক্ষমতা ছাড়তে চায় না ইউনুস সরকারও। এক সময় ‘নতুন বাংলাদেশ’ গড়ার ডাক দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল অন্তর্বর্তী সরকার। কিন্তু আদতে বদল নয়, বদলার রাজনীতি করছেন প্রধান উপদেষ্টা ইউনুস! মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছতে এক এক করে মুজিবের সমস্ত স্মৃতি ডাস্টবিনে ফেলে দিচ্ছে তাঁর সরকার। গদিচ্যুত শেখ হাসিনা ও তাঁর বোনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) এগিয়ে দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। হাসিনাকে বিচারের মুখমুখী করে জেলবন্দি করতে পারলে অন্যতম পথের কাঁটা সরে যাবে তাদের। ফলে এখন আওয়ামি লিগকে নির্বাচনের বাইরে রাখতে নয়া কোনও ফন্দি আঁটতেই পারেন ইউনুস।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement