দীপঙ্কর মণ্ডল: আগুনের গ্রহ মঙ্গল এবং বায়ুর প্রতীক রাহু চলে এসেছে কাছাকাছি। তার ফলে মানব শরীর ও মনে পড়তে পারে ভয়ংকর প্রভাব। দুই পরস্পরবিরোধী গ্রহের পাশাপাশি অবস্থানকাল শুরু হয়েছে ২৭ জুন। যা চলবে ১০ আগস্ট পর্যন্ত। মঙ্গল এবং রাহুর এই নৈকট্যকে জ্যোতিষ শাস্ত্র বলছে অঙ্গারক যোগ। যা সচরাচর ঘটে না। শেষবার এমন যোগ দেখা যায় ১৯৮৫ সালে। স্বাধীনতা দিবসের পাঁচ দিন আগে পর্যন্ত সবাইকে খুব সাবধানে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন জ্যোতিষীরা।
অঙ্গারক যোগে হঠাৎ হতে পারে গুপ্ত শত্রুর আক্রমণ, প্রিয় বন্ধু করতে পারে বিশ্বাসঘাতকতা। এই সময়কালে নতুন সম্পত্তি ক্রয় না করা, অসংলগ্ন কথা না বলা-সহ বিভিন্ন জাতকের প্রতি রয়েছে বিভিন্ন পরামর্শ। আশঙ্কা আছে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরিরও। দেশে বা রাজ্যে বড় কোনও দুর্ঘটনাও হতে পারে বলে আশঙ্কা আছে। রাহু (Rahu) এবং মঙ্গল (Mangal) শেষবার এত কাছে এসেছিল ৩৭ বছর আগে। সেবছর এয়ার ইন্ডিয়ার (Air India) বিমান দুর্ঘটনায় ৩২৯ জন যাত্রী মারা যান। জোতির্বিজ্ঞান মতে, মঙ্গল আগুনের গ্রহ এবং রাহু বায়ুর প্রতীক। হাওয়া লাগলে আগুন আরও বাড়ে। তাই মঙ্গল ও রাহুর কাছাকাছি আসা অত্যন্ত বিপজ্জনক। দুই অসম ও বিরোধী গ্রহের কাছাকাছি আসায় মানব শরীর ও মনে ভয়ংকর প্রভাব পড়তে পারে বলে মত জ্যোতিষী নিতাই চক্রবর্তীর।
সকালে উঠে তিনি বীজমন্ত্র জপের পরামর্শ দিয়েছেন। জ্যোতিষী অনিমেষ শাস্ত্রী আবার শুদ্ধ বসনে বাড়িতে দেবদেবী বা মায়ের পায়ে ফুল দিয়ে প্রণামের পরামর্শ দিয়েছেন। অঙ্গারক যোগের ফাঁড়া কাটাতে দুই জ্যোতিষীই লাল রংয়ের উপর জোর দিয়েছেন। কলকাতার জ্যোতিষীদের বক্তব্য, হনুমান চল্লিশা পাঠ করলে বিপর্যয় এড়ানো যেতে পারে। বিভিন্ন রাশির জাতক—জাতিকাদের সমস্যা ও যে প্রতিকার তাঁরা বলেছেন–
মেষ রাশির জাতককে শরীরের দিক থেকে সাবধান থাকতে হবে। মানসিক ক্ষয়ক্ষতিও হতে পারে। ফাঁড়া কাটাতে হাতে সাদা এবং লাল রংয়ের তাগা বাঁধতে হবে। বৃষ রাশি হলে মানসিক ক্ষয়ক্ষতি ও সম্পত্তিগত বিবাদ হতে পারে। দোষ কাটাতে এই রাশির জাতকদের লাল প্রবাল বা হাতে লাল রংয়ের কিছু বাঁধতে হবে। মিথুনের ঘরে যারা আছেন তাঁদের বুদ্ধি সঠিক জায়গায় প্রয়োগ নাও হতে পারে। কর্মহানির যোগ থাকতে পারে। তাঁদের ব্যবহার করতে হবে সবুজ রং। কর্কট রাশির মানুষের খুব বেশি খারাপ না হলেও সম্ভাবনা আছে। এঁদের প্রতিষ্ঠা নষ্ট হতে পারে। বিশেষত যারা ওষুধ শিল্পের সঙ্গে জড়িত তাঁদের আঘাত এবং বদনাম আসতে পারে। সিংহ রাশি একটু বেশি ক্রোধ করলেই বিবাদ আইনি পথে চলে যেতে পারে। ভোরে উঠে স্নান করে ঈশ্বরের বন্দনা করে বলতে হবে, ‘আমি ভাল আছি’। ‘ওঁ’ মন্ত্র উচ্চারণেও লাভ হবে। কন্যা রাশিতে স্বামী-স্ত্রীর বিবাদ চরমে উঠতে পারে। এই রাশির জাতক-জাতিকাদের বিচ্ছেদও হয়ে যেতে পারে। সম্পত্তিগত বিবাদ যেমন ভাড়াটে সমস্যা, জমি রেজিস্ট্রি করা প্রভৃতি নিয়ে জটিলতা বাড়তে পারে। প্রতিদিন বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় দু’-তিনটে তিল রাস্তায় ফেলে দিতে হবে। তুলা রাশিকে খুব সাবধানে থাকতে হবে। সামান্য অসুস্থ হলেই সঠিক চিকিৎসা করতে হবে। হাতুড়ে ডাক্তার একদম নয়। সম্পত্তি নষ্ট হতে পারে। পুরনো পাওনা হাতছাড়া হতে পারে। যারা পিএইচডি করছেন তাঁদের অকারণে পেপার বাতিল হতে পারে। সাদা ফুল বাড়ির যেকোনও দেবতা বা মায়ের পায়ে দিয়ে কর্মে যেতে হবে।
বৃশ্চিক রাশির মানুষকে সন্দেহমুক্ত থাকতে হবে। পরিকল্পনা না করে কাজে হাত দেওয়া যাবে না। নতুন কিছু ১০ আগস্টের আগে না কেনাই ভাল। লাল ফুল জলে অর্পণ ও ওঁ নমঃ শিবায় মন্ত্র উচ্চারণ করলে সুফল মিলবে। ধনু রাশির লোকজন একটু কুঁড়ে হয়। এঁদের পশ্চাদ্দেশে আঘাত আসতে পারে। খেতে হবে কাঁচা হলুদ ও মধু। মকর রাশির লোকজনের খুব খারাপ হতে পারে। সম্পত্তি ক্রয় করলে নষ্ট হবেই। অঙ্গারক যোগ চলাকালীন সম্পত্তি ক্রয় করা যাবে না। রাজসিক খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে। বিয়ের সম্বন্ধ বা এই সময় কোনও পাকা কথা দেওয়া চলবে না। নীল রংয়ের সুতো হাতে বাঁধতে হবে। মকর এবং কুম্ভ, এই দুই রাশির ছাত্রছাত্রীদের বিশেষ সাবধানে থাকতে হবে। মনঃসংযোগে ব্যাঘাত আসবে এই সময়ে। পড়ার সময় বাড়িয়ে দিতে হবে। চাকরির ইন্টারভিউ ১০ আগস্টের পর দেওয়া ভাল। বাড়িতে চুরি হতে পারে। এই দুই রাশির মানুষকে ক্রোধ সম্বরণ করতে হবে। বিপদ কাটাতে কালো কুকুরকে খাওয়াতে হবে। নীল এবং সাদা রং শুভ। মীন রাশির যারা আছেন তাঁদের সময়টা ভাল। তবে কেনাকাটা করার সময় খুব খেয়াল রাখতে হবে। স্বামী-স্ত্রীর দ্বন্দ্ব একদম নয়। সন্তানদের গায়ে একদম হাত দেওয়া যাবে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.