সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আমেরিকার অস্ত্রে বলীয়ান হয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করছে ইউক্রেন। মার্কিন জেভলিন মিসাইল ও হিমার রকেট রুশ ফৌজের আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবুও ইউক্রেনে যুদ্ধ থামাতে ‘শক্তিশালী’ চিনের দ্বারস্থ হয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। দুই প্রাক্তন সোভিয়েত দেশের সংঘাত যে আন্তর্জাতিক মঞ্চে অদ্ভুত ভূ-কৌশলগত সমীকরণ তৈরি করেছে তা জেলেনস্কির বয়ানেই স্পষ্ট।
চিনা সংবাদমাধ্যম ‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি বলেন, “চিন একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র। একটি অত্যন্ত শক্তিশালী অর্থনীতি। রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যও দেশটি। তাই রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক ভাবে রাশিয়াকে প্রভাবিত করতে সক্ষম চিন।” শুধু তাই নয়, বৃহস্পতিবার সংবাদপত্রটিতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, যুদ্ধ থামাতে সরাসরি চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন জেলেনস্কি (Volodymyr Zelenskyy)। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, এর আগে ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন থামাতে ভারতের কাছে মদত চেয়েছিল কিয়েভ।
বলে রাখা ভাল, সম্প্রতি মার্কিন হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফর ঘিরে চিন ও আমেরিকার সংঘাত চরমে পৌঁছেছে। আমেরিকার যুদ্ধবিমানের নিরাপত্তায় পেলোসির উড়ান তাইওয়ান ছেড়ে দক্ষিণ পাড়ি দেওয়ার পরেই সক্রিয় হয়েছে চিন। বুধবার বিকেলে বেজিংয়ের তরফে গোটা তাইওয়ান প্রণালীকেই বিপজ্জনক অঞ্চল বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে ইউক্রেনে বেজিংয়ের হস্তক্ষেপ চেয়ে পরোক্ষে ওয়াশিংটনের উপর চাপ বাড়িয়েছে কিয়েভ।
বিশ্লেষকদর মতে, ইউক্রেন (Ukraine) ন্যাটো জোটে যোগ দিতে উদ্যোগী হওয়াই রুশ হামলার অন্যতম কারণ। কিন্তু কিয়েভকে সদস্যপদ দেওয়া নিয়ে ন্যাটো জোটের সংশয় মোটেও ভাল চোখে দেখছে না কিয়েভ। অতীতে বারবার পশ্চিম ইউরোপ ও আমেরিকার কাছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও কঠিন পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন জেলেনস্কি। শুধু তাই নয়, তিনি স্পষ্ট অভিযোগ করেছেন, যুদ্ধ থামাতে সেই অর্থে আগ্রহী নয় ইউরোপ ও আমেরিকা। এহেন পরিস্থিতিতে রাশিয়ার উপর চিনা প্রভাব কাজে লাগিয়ে আলোচনায় আসতে চাইছেন জেলেনস্কি।
উল্লেখ্য, ফেব্রুয়ারির ২৪ তারিখ ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু করে রাশিয়া। কিন্তু এখনও কিয়েভ দখল করতে পারেনি তারা। লড়াইয়ে কয়েক হাজার সেনা ও বিপুল অস্ত্র খুইয়ে গত এপ্রিলে সামরিক অভিযানের প্রথম পর্বে ইতি টানার কথা ঘোষণা করে রাশিয়া। পাশাপাশি, দোনবাস অঞ্চলে অভিযান তীব্র করে তোলে পুতিনের বাহিনী। ইতিমধ্যে মারিওপোল দখল করে ফেলেছে রুশ ফৌজ। দোনবাসে ইউক্রেনের শেষ ঘাঁটি সেভেরদোনেৎস্কও দখল করেছে পুতিন বাহিনী। কিন্তু এই যুদ্ধে তাদের বিস্তর ক্ষতি হয়েছে বলে খবর। সম্প্রতি আমেরিকা দাবি করেছে যে, ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১৫ হাজার রুশ সেনার। আহত কমপক্ষে আরও ৪৫ হাজার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.