সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইসলাম ধর্মের বিতর্কিত প্রচারক জাকির নায়েক অজ্ঞাত উৎস থেকে কোটি কোটি টাকা পেয়েছেন। নায়েকের শুভাকাঙ্ক্ষীরা কখনও সরাসরি তাঁর অ্যাকাউন্টে কখনও বা তাঁর সংস্থার অ্যাকাউন্টে ওই টাকা জমা দিয়েছেন। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডির তদন্তে এই তথ্য সামনে এসেছে।
[আরও পড়ুন: ‘একসঙ্গে কাজ করতে চাই’, মোদিকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ফোনে বার্তা ইমরানের]
প্রাথমিক তদন্ত শেষে ইডি জানিয়েছে, জাকির নায়েকের সংস্থা ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনকে (আইআরএফ) দেশ–বিদেশের অনেকেই বিপুল পরিমাণ অর্থ সাহায্য করেছেন। সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, সৌদি আরব, বাহরিন, কুয়েত, ওমান মালয়েশিয়ার মতো একাধিক দেশ থেকে অর্থ পেয়েছে আইআরএফ। সংস্থার একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। সিটি ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, ডিসিবি ব্যাংকে সংস্থার অ্যাকাউন্ট রয়েছে। ওই সব অ্যাকাউন্টেই টাকা জমা দিয়েছেন দাতারা। ওই সব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট পুরোপুরি জাকির নায়েকের নিয়ন্ত্রণেই ছিল। বেশিরভাগ টাকাই জমা পড়েছে দান এবং জাকাত (ইসলাম ধর্মে স্বীকৃত এক ধরনের দান) হিসাবে। সব টাকাই জমা পড়েছে ব্যাংকের মাধ্যমে। তবে কারা এই টাকা জমা দিয়েছে তা জানা যায়নি। সব টাকাই জমা পড়েছে নগদে। দাতাদের শুধুমাত্র ‘শুভাকাঙ্ক্ষী’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থ প্রাপ্তির রসিদে শুধুমাত্র দাতাদের নাম রয়েছে। তাঁদের ঠিকানা বা যোগাযোগ সংক্রান্ত কোনও তথ্য ওই রসিদে নেই। এই বিষয়টিই ভাবিয়ে তুলেছে ইডির তদন্তকারী অফিসারদের। কোথা থেকে এই টাকা এল বা এই টাকা কারা দান করল সেটা জানার চেষ্টা চালাচ্ছে ইডি।
২০০৩-০৪ থেকে ২০১৬-১৭ সাল পর্যন্ত এভাবেই ৬৪.৮৬ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে আইআরএফ। একইভাবে ২০১২ এবং ২০১৬ সালে নায়েকের ব্যক্তিগত দু’টি অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে ৪৯.২০ কোটি টাকা। সংযুক্ত আরব আমিরশাহি থেকে এই টাকা জমা পড়েছে। বিভিন্ন শান্তি সম্মেলনের আয়োজন করতে, সংস্থার কর্মীদের বেতন দিতে, জিনিসপত্র কিনতে ওই টাকা খরচ করা হয়েছে বলে ইডি সূত্রে খবর৷ উল্লেখ্য, বিতর্কিত ধর্ম প্রচারের জন্য নায়েকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা হয়েছে। তদন্ত থেকে দূরে থাকতে নায়েক বর্তমানে দেশ ছেড়ে মালয়েশিয়ায় রয়েছেন। অভিযোগ, ওই সব শান্তি সম্মেলন থেকেই নায়েক উস্কানিমূলক ও সাম্প্রদায়িক কথাবার্তা বলতেন। তাঁর ভাবাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়েই মুসলিম সম্প্রদায়ের বহু যুবক সন্ত্রাসবাদে জড়িয়েছেন। দেশ–বিরোধী কাজে লিপ্ত হয়েছেন। অজ্ঞাত উৎস থেকে পাওয়া টাকা নায়েক ধরনের বিভেদ সৃষ্টিকারী কাজে ব্যবহার করেছেন। সম্প্রতি মুম্বইয়ের আদালতে নায়েকের বিরুদ্ধে অর্থ তছরূপ দমন আইনে চার্জশিট জমা দিয়েছে ইডি। সংস্থার অভিযোগ, অজ্ঞাত উৎস থেকে পাওয়া টাকা দিয়ে দেশে অবৈধ সম্পত্তি কিনেছেন নায়েক। দুবাইয়ের মতো শহরেও রিয়েল এস্টেটের ব্যবসায় টাকা ঢেলেছেন নায়েক। কিন্তু নায়েকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই দেশ ছেড়েছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: নেই খাবার-পানীয় জল, মাঝসাগরে জাহাজে আটকে দুই ভারতীয়]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.