সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২০১২-র ডিসেম্বর মাসটা কেন বিখ্যাত মনে আছে নিশ্চই। মায়া ক্যালেন্ডারের (Mayan calendar) মতে জল্পনা ছড়িয়েছিল যে, পৃথিবী নাকি ধ্বংস হয়ে যাবে! ফলে সেই মাসে মৃত্যুকে বরণ করে নেওয়ার আগে অনেকেই জীবনের সব স্বাদ পূরণের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু পরে জানা যায় যে নির্দিষ্ট হিসেবের ভিত্তিতে এই ধ্বংসের দিন নির্ধারণ করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা তাতেই গড়মিল রয়েছে। তবে সেই গোলমাল সামলে নতুন যে তথ্য সামনে এল তা আরও বিস্ফোরক। মায়া ক্যালেন্ডারের মতে পৃথিবী শেষ হবে এই বছরই। আর তা হতে বাকি মাত্র এক সপ্তাহ!
আজ থেকে প্রায় ৫ হাজার ১২৫ বছর আগে সৃষ্টি মায়া সভ্যতার ক্যালেন্ডার। বিশেষজ্ঞদের হিসেব বলেছিল, ২০১২-র ২১ ডিসেম্বর শেষ হচ্ছে ক্যালেন্ডার। যেহেতু ওই ক্যালেন্ডারে বর্ণিত অনেক কিছুই বাস্তবের রূপ নিয়েছিল তাই ক্যালেন্ডারের শেষ হয়ে যাওয়াকে বিশেষজ্ঞরা পৃথিবীর শেষ বলেই স্থির করে নেয়। এরজেরেই ২০১২ সালের অন্তত এক দশক আগে পৃথিবী ধ্বংসের খবর অত্যন্ত আলোচিত হয়ে ওঠে। এর প্রভাবে হলিউডে সিনেমার তৈরি হল যার নামও রাখা হল ‘২০১২’। তবে ২০১২-তে তেমন কিছুই না হওয়ায় বিশেষজ্ঞরা বেজায় খুশি হলেও মায়া সভ্যতার হিসেব তাঁদের ঘুম উড়িয়ে দেয়। নতুন করে হিসেব কষতে গিয়ে তাঁরা দেখেন অঙ্কে ভুল রয়ে গেছে। তাই ভুল সংশোধন করতে ফের শুরু হয় হিসেব কষা। তাতেই মেলে নয়া তথ্য। প্রায় ৮ বছর পরে থিয়োরিস্টরা নিজেদের গোলমাল শুধরে জানান, ২০১২ নয় অঙ্কের উত্তর হবে ২০২০। ফলে তাদের হিসেব মতে পৃথিবী ধ্বংস হবে এই বছরই। আর তা হতে বাকি রয়েছে মাত্র এক সপ্তাহ। এই বছরের শুরু থেকেই যেভাবে একের পর এক ভয়ানক পরিস্থিতি ঘনিয়ে আসছে তাতে পৃথিবীর ধ্বংস হওয়ায় কিছু আশ্চর্য হচ্ছেন না বিশেষজ্ঞরা।
মধ্য আমেরিকার মেক্সিকো, গুয়াতেমালা, হন্ডুরাস এবং এল সালভাদর অঞ্চলগুলো জুড়ে প্রতিষ্ঠিত প্রাচীন মায়া সভ্যতা ছিল অত্যন্ত উন্নত একটি সভ্যতা। যারা গণিত, জ্যোতির্বিদ্যা, স্থাপত্যবিদ্যা-সহ বিভিন্ন বিষয়ে তাদের জ্ঞানের স্বাক্ষর রেখে গেছে। তারা অত্যন্ত সুচারুভাবে দিন-তারিখের হিসেব লিপিবদ্ধ করত। তাদের ক্যালেন্ডার ছিল আমাদের বর্তমান ক্যালেন্ডার থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। অক্ষর এবং সংখ্যার পরিবর্তে সেখানে ছিল হায়ারোগ্লিফিক চিত্রের সমাহার। পরে গবেষকরা সেগুলোর মর্ম উদ্ধার করতে সক্ষম হন। ধারণা করা হয়, অন্তত খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দী থেকেই মায়ানদের ক্যালেন্ডার প্রচলিত ছিল।
মায়া ক্যালেন্ডার অনুযায়ী আমরা এখন যে সালে আছি, সেটাই ২০১২। গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের হিসেবে ১১ দিনে মায়া ক্যালেন্ডারের এক দিন করে পরিবর্তন হয়। এই ক্যালেন্ডার ১৭৫২ থেকে শুরু। ফলে ১৭৫২-২০২০= ২৬৮ বছর পার হয়ে গেছে। এর সঙ্গে বাকি দিনগুলোকে রাখলে হিসেব দাঁড়ায় ২৬৮*১১=২৯৪৮ দিন। ২৯৪৮ দিনকে ৩৬৫ দিয়ে ভাগ করলে হয়, ৮ বছর। আর এই ৮টি বছরের হিসেবে গরমিল ছিল বিশেষজ্ঞদের। বিজ্ঞানী পাওলো তাগালোগিউনের (Paolo Tagaloguin) মতে, হিসেব থেকে বাদ যাওয়া দিন গুলি যোগ করলে মায়া সভ্যতায় নির্ধারিত, পৃথিবীর শেষ দিন হল ২০২০-র ২১ জুন। তবে বিশেষজ্ঞদের সাম্প্রতিক হিসেবেও কোনও ভুল আছে কিনা তা এখনও জানা যায়নি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.